নয়া দিল্লি : মাংস খাওয়া নিয়ে রীতিমতো রক্তারক্তি কাণ্ড দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে বচসা। তারপর হাতাহাতি। তারপর তা ইট-পাটকেলে গিয়ে ঠেকে। রক্ত ঝরে জেএনইউ এর কাবেরী হস্টেলের মাটিতে। রবিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হচ্ছে রামনবমী। রামনবমী পালনে রাস্তায় শোভাযাত্রা করেছে একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। সেই শোভাযাত্রা ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিলেছে। তবে জেএনইউ-র ঘটনা একেবারে নজিরবিহীন। রামনবমীর দিন মাংস খাওয়াকে কেন্দ্র করে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ‘গুন্ডারা’ আগেই জেনেইউ এর কাবেরী হস্টেলে ভাঙচুর চালিয়েছে। মেসের সেক্রেটারিকে মারধরও করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। এইবার দুইপক্ষ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বচসায় জড়ায়। বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। দুইপক্ষই আগ্রাসী হয়ে ইঁট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন দুইপক্ষেরই ছাত্র-ছাত্রী। কয়েকজন গুরুতর জখম বলে জানা গিয়েছে। রক্তারক্তি কাণ্ড বাঁধে জেএনইউ-র কাবেরী হস্টেল চত্বরে। পড়ুয়াদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
Just got this disturbing message from JNU. #SOSJNU
Friends, ABVP does it again. First they tried to impose non veg ban on everybody in Kaveri Hostel, and when common students stood up against #FoodFascism, the Sanghi goons resorted to all out violence. Several seriously wounded. pic.twitter.com/GYowHZaQoa— Dipankar (@Dipankar_cpiml) April 10, 2022
এদিকে এবিভিপি এবং বাম ছাত্র সংগঠনগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এবিভিপি-র অভিযোগ, বামপন্থী ও কমিউনিস্টরা এবিভিপি কর্মী এবং জেএনইউয়ের সাধারণ পড়ুয়াদের আক্রমণ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ এই ‘নকশালি হামলায়’ এবিভিপি কর্মী রবি রাজ গুরুতর জখম হয়েছে। এবিভিপির তরফে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, তাঁরা রামনবমীতে ক্যাম্পাসে পুজো করছিলেন। কিন্তু তাঁদের পুজোতে বাধা দিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। এদিকে বাম ছাত্র নেতা ঐশী ঘোষ টুইটারে লিখেছেন, “আমরা কী খাব এবং কী খাব না তা বলে দেওয়ার জন্য এই এবিভিপি গুন্ডারা কে?” তিনি জেএনইউ এর কর্তৃপক্ষের দিকেও প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, “জেএনইউ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের অধিকার নিশ্চিত করতে এই ঘটনায় কোনও হস্তক্ষেপ করল না?” সিপিআই-এমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর টুইটারে জেএনইউ-র রক্তারক্তির ছবি দিয়ে লিখেছেন, “জেএনইউ থেকে এই ধরনের বার্তা পেলাম। এবিভিপি আবারও এরকম করল। তাঁরা প্রথমে কাবেরী হস্টেলের প্রত্যেকের উপর আমিষ খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করল। যখন এর বিরুদ্ধে সাধারণ পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করলেন সাঙ্ঘি গুন্ডারা তখনই হিংসা বেছে নিল। বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।”
Leftists, Communists have attacked ABVP activists and common students of JNU. ABVP Activist Ravi Raj severely injured this Naxali attack #CommunistViolenceDownDown pic.twitter.com/d3Z0rq8Z9z
— ABVP JNU (@abvpjnu) April 10, 2022
উল্লেখ্য, জেএনইউ-তে ছাত্র নির্বাচন খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে। সেই আবহে এই ঘটনাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শুধুমাত্র রামনবমীকে ঘিরেই যে এই রক্তারক্তি কাণ্ড তা মানতে নারাজ অনেকেই। এর পিছনে রাজনীতির রং রয়েছে বলেই ধারণা একাংশের। উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধে জড়িয়েছে জেএনইউ। সিএএ-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনেও নাম জড়িয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। বরাবরাই ছাত্র রাজনীতির আতুর ঘর বলেই পরিচিত জেএনইউ। এই জেএনইউ থেকেই রাজনীতির মূল স্রোতে উঠে এসেছেন বহু তাবড় তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। সেই জেএনইউ-র মাটিতে ঘন ঘন বিক্ষোভের ঘটনায় অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন : JNU Meat Controversy : রামনবমীতে মাংস খাওয়া নিয়ে উত্তপ্ত জেএনইউ, হস্টেল ভাঙচুরের অভিযোগ