Ex IPS and DGP on President over PM Modi Security Breach: ‘দ্রুত ব্যবস্থা নিন’, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা-প্রশ্নে প্রাক্তন ২৭ IPS ও ১৬ DGP-র রাষ্ট্রপতিকে চিঠি
Letter to President: রামনাথ কোবিন্দকে লেখা ওই চিঠিতে প্রাক্তন সেনানায়কদের আবেদন, তাঁরা সারাজীবন দেশের হয়ে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এমন গাফিলতি দেখে তাঁরা বাধ্য হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তার নিরাপত্তায় গাফিলতি নিয়ে এ বার সওয়াল দেশের প্রাক্তন ডিজিপি ও আইপিএসদের। পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের চূড়ান্ত সমালোচনা করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে (Ramnath Kovind) চিঠি দিলেন দেশের ১৬ জন প্রাক্তন ডিজিপি ও ২৭ জন প্রাক্তন আইপিএসের।
রাষ্ট্রপতিকে চিঠি
রামনাথ কোবিন্দকে লেখা ওই চিঠিতে প্রাক্তন সেনানায়কদের আবেদন, তাঁরা সারাজীবন দেশের হয়ে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এমন গাফিলতি দেখে তাঁরা বাধ্য হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি মেনেই যেন এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেন রাষ্ট্রপতি। দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের যেন শাস্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের নিরাপত্তা ঘাটতি দেখে তাঁরা বিস্মিত। পঞ্জাব একটি সীমান্তবর্তী রাজ্য। সেখানে এ ধরনের ঘটনা কী করে ঘটল, কেন সেখানে কোনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিলেন না,তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন সেনাকর্তারা।
পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, পঞ্জাব সরকারের কারসাজিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এটি স্পষ্ট যে সংশ্লিষ্ট ফ্লাওভারে কোনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিল না। এটি পঞ্জাব সরকারের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি বলতে নারাজ তাঁরা। সরকারমদতপুষ্ট না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয় বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপতি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-র নিরাপত্তায় গাফিলতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন তিনি। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চান। প্রধানমন্ত্রীর পঞ্জাব সফরে (Punjab Visit) যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে দেশজুড়েই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গন্তব্যে পৌঁছতে না পারা ও সফর বাতিল করে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে একাধিক।
ঠিক কী হয়েছিল বুধবার?
বুধবারই পঞ্জাবে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেই মতোই তিনি সকালে ভাটিন্ডায় পৌঁছন। সেখান থেকেই হেলিকপ্টারে করে হুসেনিওয়ালাতে জাতীয় শহীদ স্মৃতি সৌধে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে সড়ক পথেই হুসেনিওয়ালার উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দুই ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর, কিন্তু গন্তব্যের ১০ কিলোমিটার আগেই, তাঁর কনভয়টি যখন একটি উড়ালপুলের উপর পৌঁছয়, তখন দেখা যায় যে সামনেই বেশ কিছু বিক্ষোভকারী পথ অবরোধ করেছে। বাধ্য হয়ে ওই উড়ালপুলের উপরেই ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হওয়ার কারণে সেখান থেকে তাঁকে ভাটিন্ডাতেই ফিরিয়ে আনা হয়। ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী ভাটিন্ডা বিমানবন্দরে ফেরার পর বিমানবন্দর আধিকারিকদের বলেন, “ভাটিন্ডা বিমানবন্দর পর্যন্ত জীবিত ফিরতে পেরেছি, এর জন্য আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবেন।”
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের অন্যতম হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি, তাঁকে ভিভিআইপি হিসাবে গণ্য করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হওয়ার সম্ভাবনার কারণেই তাঁর নিরাপত্তার ওপর বাড়তি জোর দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী যখন অন্য কোথাও যান, সেই সময় নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল বন্ধ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের হাঁটা-চলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানেই কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথ আটকে বিক্ষোভ দেখানো হল, তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পঞ্জাব পুলিশ্র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে এভাবে বাধা পড়ায় ও নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এদিন সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে পঞ্জাব পুলিশের সমালোচনা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি সুষ্ঠ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট রুট তৈরি না করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য যে নির্দিষ্ট প্রোটোকল রয়েছে, তাও ভেঙেছে পঞ্জাব পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি দল রাজ্য পুলিশ কত সংখ্যক কর্মী মোতায়েন, পিকেট লাইন, কোথায় কোন অফিসার নিযুক্ত ছিলেন, ব্য়ারিকেড ও অন্য়ান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলি নিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে।
অন্যদিকে, চরম সমালোচনার মুখে পড়ে পঞ্জাব সরকারের তরফে দুই সদস্যের একটি তদন্তকারী দল তৈরি করা হয়েছে। এই তদন্তকারী দলের সদস্য হলেন পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মেহবাত গিল এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্যসচিব অনুরাগ ভর্মা। আগামী তিনদিনের মধ্যে তারা সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন বলে জানা গিয়েছে।