দেহরাদুন: ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। ক্রমশ মৃতের সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও। আজই উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। এ দিন বিকেলেই তিনি উত্তরাখণ্ডের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।
বিগত তিনদিন ধরেই অতি ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে দেবভূমি। একটানা বৃষ্টির কারণে একাধিক জায়গায় হড়পা বান ও ভূমিধস নেমেছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও অবধি মোট ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্যোগে। নিখোঁজ আরও অনেকে। ধসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক রাস্তা। ভেঙে গিয়েছে সেতু ও রেললাইনও।
ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্যে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। উদ্ধারকার্যে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পাশাপাশি, এনডিআরএফ (NDRF), সেনাবাহিনী(Indian Army)-ও হাত লাগিয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডে ১৫টি এনডিআরএফের দল পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এখনও অবধি প্রায় ৩০০-রও বেশি মানুষকে বন্যাদুর্গত ও বিপর্যয়স্থল থেকে উদ্ধার করেছেন তারা। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফেও উদ্ধারকার্যে সাহায্য়ের জন্য তিনটি কপ্টার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি হেলিকপ্টারকেই নৈনিতালে পাঠানো হয়েছে।
গতকালই আকাশপথে বন্যাদুর্গত ও ধসের জেরে বিপর্যস্ত এলাকাগুলি আকাশপথে ঘুরে দেখেন রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। চারধাম যাত্রায় আসা পুণ্যার্থীদেরতিনি অনুরোধ করেন, তারা যেন এই দুর্যোগের মধ্যে বাইরে না বের হন এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া অবধি সুরক্ষিত কোনও জায়গায় আশ্রয় নেন। এরপরই আজ সকালে জানা যায়, উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে নিজেই সেখানে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আজ দুপুরেই তিনি আকাশপথে বিপর্যস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন (Aerial Survey) করবেন বলে জানা গিয়েছে। এরপর বিকেলে রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে সমস্ত বিভাগের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধারকার্য ও ত্রাণ বিলির কাজ কতদূর এগিয়েছে, সেই সম্পর্কে হিসাব নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনটাই জানা গিয়েছে।
এর আগে সোমবারও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সময়ই তিনি যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-ও উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেন।
ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের রাজ্য সরকারের তরফে পরিবার পিছু ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। যাঁরা বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন তাঁদের ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, বিপর্যয়ে যাঁরা গবাদি পশু হারিয়েছেন, তাঁদেরও সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিদর্শনের পর কেন্দ্রের তরফেও অর্থ সাহায্য ও ত্রাণের ঘোষণা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Rain Alert: দুর্যোগের ঘনঘটা দেশজুড়ে, ভারী বৃষ্টির সতর্কতা একাধিক রাজ্যে, ফের বন্যার আশঙ্কা কেরলে