নয়া দিল্লি: ১৯৭১-এ পাকিস্তানকে পরাস্ত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন আর্মি চিফ জেনারেল স্যাম মানেকশ-র কী ভূমিকা ছিল, তা অনেকেরই জানা। তাঁর নেতৃত্বেই ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে ৯৪ হাজার পাকিস্তানি সেনাকে জেলবন্দি করা হয়েছিল। সেই সাফল্যের পুরস্কারও দিতে ভোলেননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ফিল্ড মার্শাল পদ পেয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজে চিঠি লিখে মানেকশ-কে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সেই চিঠি গান্ধী পরিবারের ছেলে তথা বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী প্রকাশ্য়ে এনেছেন সেই চিঠি।
বরুণ গান্ধী ওই চিঠি এক্স মাধ্যমে প্রকাশ করার পরই তা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ১৯৭১ অর্থাৎ যে বছর পাকিস্তানকে যুদ্ধে পরাস্ত করেছিল ভারত, সেই বছরের ২২ ডিসেম্বর ওই চিঠি মানেকশ-কে দিয়েছিলেন ইন্দিরা।
ইন্দিরা গান্ধী লিখেছিলেন, “দেশের সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনার ভূমিকা কেন প্রশংসিত হয়, তার প্রমাণ মিলেছে গত কয়েকদিনে। চিফ অব আর্মি স্টাফ ও স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে, আপনার ওপর ঠিক কতটা চাপ ছিল, আমি জানি।” যুদ্ধের সময় যেভাবে সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা ও নৌবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা দেখা গিয়েছে, তার জন্যও মানেকশ-র প্রশংসা করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। শেষ বাক্যে তিনি লিখেছিলেন, “দেশের সরকার ও জনগণের তরফ থেকে আপনাকে, আপনার অফিসার ও কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাই।”
উল্লেখ্য, ১৯৭১-এর এপ্রিল মাসে মানেকশ-কে ইন্দিরা গান্ধী একটি বৈঠক চলাকালীন প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত কি না। উত্তরে মানেকশ জানিয়েছিলেন যথেষ্ট অফিসার নেই যাতে যুদ্ধ করা সম্ভব। পরে বৈঠক থেকে সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর পদত্য়াগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন মানেকশ। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে বাধা দেন। তিনি পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেন। এরপর মানেকশ বলেছিলেন, তাঁকে তাঁর মতো করে যুদ্ধ পরিচালনা করতে দিতে হবে, তিনি নিশ্চিত জয় এনে দেবেন। বাকিটা ইতিহাস। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসেই এসেছিল জয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর তাই পালিত হয় বিজয় দিবস। সম্প্রতি মানকেশ-র জীবন কাহিনি নিয়ে ছবি তৈরি হয়েছে বলিউডে। মানকেশ-র চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভিকি কওশল।