Former CJI DY Chandrachud: ‘বিচারপতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার’, হঠাৎ কেন একথা বললেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি?
Former CJI DY Chandrachud: সোশ্যাল মিডিয়ায় ২০ সেকেন্ডের ভিডিয়ো তিনিও দেখেন বলে জানান প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। এমনকি তিনি ট্রোলিংয়েরও শিকার হয়েছেন। প্রাক্তন সিজেআই বলেন, "আমিও অনেকসময় এমন ভিডিয়ো দেখি। আমাকে অনেকবার ট্রোল করা হয়েছে। হয়তো এখনও হয়।"
নয়াদিল্লি: স্যোশাল মিডিয়ার প্রভাব বাড়ছে সমাজে। যে কোনও ইস্যুতে সমাজ মাধ্যমে কমেন্ট করেন বহু মানুষ। ট্রোলিংয়ের শিকারও হন অনেকে। বিচার ব্যবস্থার উপর কি সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব পড়ে? এই নিয়ে মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বললেন, “বিচারপতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার।”
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একাধিক ইস্যু নিয়ে মুখ খোলেন সুপ্রিম কোর্টের সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। সেখানেই সমাজ মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে ব্যাখ্যা দেন প্রাক্তন সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, “সময় বদলে গেছে। সংবিধান তার বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ৭৫ বছর পার করেছে। ১৯৫০ সালে সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। ইন্টারনেট ছিল না। এখন নিউ নরম্যালে বাস করছি আমরা। অনেকে বলেন, পোস্ট ট্রুথ সমাজে বাস করছি। মিডিয়া ও সমাজ মাধ্যম মানুষের মতামতকে আকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে।”
বিচারব্যবস্থার উপর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, “রায়ের সমালোচনা করা কথা বলা ও মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারের অঙ্গ। প্রত্যেক নাগরিকের আদালতের সিদ্ধান্ত বুঝে তার উপর মতামত দেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, রায় নিয়ে কোনও একজন বিচারপতিকে যখন টার্গেট করা হয়, তখন প্রশ্ন উঠে, এটা কি সত্যিই মতামত প্রকাশের মৌলিক অধিকার?”
এই খবরটিও পড়ুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় ২০ সেকেন্ডের ভিডিয়ো দেখে মতামত দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বলেন, “আদালতে নির্দেশের আগে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি হয়। কিন্তু, ইউটিউব কিংবা ইন্টারনেটের অন্য কোনও মাধ্যমে ২০ সেকেন্ডের ভিডিয়ো দেখে মানুষ মতামত দেন। এটা বিপদের। মানুষের এখন ধৈর্য কমেছে। আদালতের পুরো প্রক্রিয়া জানার ধৈর্য নেই। এটা উদ্বেগের।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ২০ সেকেন্ডের ভিডিয়ো তিনিও দেখেন বলে জানান প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। এমনকি তিনি ট্রোলিংয়েরও শিকার হয়েছেন। প্রাক্তন সিজেআই বলেন, “আমিও অনেকসময় এমন ভিডিয়ো দেখি। আমাকে অনেকবার ট্রোল করা হয়েছে। হয়তো এখনও হয়।”
সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে বিচারক ও বিচারপতিদের প্রশিক্ষণের দরকার বলে মনে করেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়াকে কীভাবে সামলানো যাবে, তা নিয়ে আমাদের তখন কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। কিন্তু, এখন বিচারক ও বিচারপতিদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। কারণ, কিছু স্পেশাল ইন্টারেস্ট গ্রুপ ও প্রেসার গ্রুপ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মামলার ফলাফলের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।”
এর কি কোনও প্রভাব পড়ে বিচারপতিদের উপর? প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটা আমি বলব না যে, আমাদের উপর প্রভাব পড়ে না। এটা বলা অসত্য হবে। আদালতে যাওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি দেখতে পান, মামলায় কী হতে চলেছে। কী নথি জমা দেওয়া হয়েছে। সরকার কী বলছে। বিপক্ষ কী বলছে। সোশ্যাল মিডিয়া শুধু তথ্যের আদানপ্রদানের মাধ্যম নেই, সমাজে বড় প্রভাব বিস্তার করেছে। মামলার ফলাফলের উপর প্রভাব বিস্তারে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিচারকদের এই নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।”
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে তিনি সোশ্যাল মিডিয়াকে সোশ্যাল না আনসোশ্যাল বলবেন? প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি সোশ্যালই বলব। কারণ, এর সঙ্গে মতামত প্রকাশের মৌলিক অধিকার জড়িয়ে রয়েছে।”