নয়া দিল্লি: চিন ভারত সম্পর্ক নিয়ে নান জল্পনার মাঝেই আশঙ্কার খবর শোনালেন স্বয়ং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Foreign Minister S Jaishankar)। আজ, তিনি বলেন ভারত চিন সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। সম্পর্কে অবনতির কারণও ব্যখ্যা করেছেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কোনও যুক্তিসঙ্গত ব্যখ্যা ছাড়াই বেজিং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একতরফা নেওয়া সেই সিদ্ধান্ত গুলিই সম্পর্কে অবনতির প্রধান কারণ। জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, কেন চিন এই ধরনরে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার কারণ একমাত্র তারাই ব্যখ্যা করতে পারবেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে তারা কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান সেটাও সেদেশের নেতৃত্বকেই বলতে হবে।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি দুই দেশের সম্পর্ক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই নিয়ে চিনের সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন কোন বিষয়গুলি থেকে সমস্যা তৈরি হচ্ছে সেই নিয়ে সংশয় থাকার কারণ নেই। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াই ই-র সঙ্গে আমার অনেকবারই আলোচনা হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন আমি সোজাসুজি, পরিষ্কার ও যুক্তিসঙ্গতভাবে কথা বলে থাকি। বৈঠকে আমি ঠিক সেইভাবেই কথা বলেছি। আমি নিশ্চিত তাদের যদি আমার কথা শোনার হত তবে তারা তা অবশ্যই শুনতে পারত।”
বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, “দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চিন এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তির বিরুদ্ধে। সেই সিদ্ধান্ত গুলির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ব্যখ্যাও তাদের কাছে নেই। আমি বলব, দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে চিনের আরও বেশি চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।” পূর্ব লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে চলে আসা ভারতের সমস্যার আবহে বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত বছেরের মে মাসে, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত চিনের মধ্যে নতুন করে সমস্যার সূত্রপাত হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে প্যাংগং হ্রদের নিকটে দুই দেশের সেনা বাহিনী মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছিল। এই সীমান্তে দুই দেশের পক্ষ থেকেই বিপুল পরিমাণে সেনা মোতায়েন করা হয়। সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি ভারত চিন সীমান্তে অস্ত্রসস্ত্রও মজুত করেছিল দুই দেশ।
গত বছর জুনে গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছিল। দুইদেশের সেনা বাহিনীর মধ্যেও আলোচনা হয়েছিল। এরপরেই চলতি বছের ফেব্রুযারি মাসে প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ তীরে ও অগাস্ট মাসে গোগরা এলাকায় দুই দেশের সেনা বাহিনী সামান্য পিছু হঠে। গত ১০ অক্টোবর শেষ বারের মত দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলেও সেই আলোচনায় সমস্যা সমাধানের কোনও রাস্তা বের হয়নি। বৃহস্পতিবার, দুই দেশ ১৪ তম সেনা বৈঠক করতে সম্মত হয়েছিল। আগামী দিনে চিন নিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।