‘প্রবীর’ আর ‘ড্রাগ’, চোখের সামনে পামেলাকে বদলে যেতে দেখলেন তাঁর বাবা-মা

পামেলাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন প্রবীর।

'প্রবীর' আর 'ড্রাগ', চোখের সামনে পামেলাকে বদলে যেতে দেখলেন তাঁর বাবা-মা
ড্রাগের নেশায় আর কারও কথাই শুনতেন না পামেলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 20, 2021 | 6:46 PM

কলকাতা: ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী। কেরিয়ারের শুরুর দিকে মডেলিং করেছেন। পরে সক্রিয় রাজনীতি। কিন্তু গাঁজা, চরসের অন্ধকারে প্রবেশ করলেন কীভাবে? পামেলার জীবনে কিভাবে এলেন প্রবীর? বিজেপি নেত্রীর জীবন যেন বলিউড ছবির থেকে কম কিছু নয়।

পামেলার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট প্রমাণ দেয় যে বছর দুয়েক আগে বিজেপিতে যোগ দিলেও রাজনীতিতে তিনি বেশ সক্রিয়ই ছিলেন। দিন কয়েক আগে রিহানার টুইট নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন রঙিন নাকি অন্ধকার? ২০২০-তে পুলিশকে দেওয়া পামেলার বাবার একটি চিঠি থেকেই তাঁর অতীতের ছবিটা অনেকটা পরিষ্কার হয়। তাঁর বাবাই গত বছর লালবাজারে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। তখনই উঠে এসেছিল প্রবীরের নাম। গ্রেফতার হওয়ার সময়ও পামেলার সঙ্গে ছিলেন সেই প্রবীর।

পামেলার বাবা কৌশিক বিশ্বাসের চিঠি থেকে জানা গিয়েছে, পামেলাকে ব্যবসার পার্টনার করে নিয়ে গিয়েই তাঁর জীবনে আসেন প্রবীর। কলকাতার এক শপিং মলে শোরুম প্রবীরের। ঘর সাজানোর জিনিসের ব্যবসা। সাড়ে তিন বছর আগে পামেলাকে সেই ব্যবসার পার্টনার করে নিয়ে যান প্রবীর। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। আপাদমস্তক ভদ্র ছেলেটিকে বিশ্বাসও করেছিল পামেলার পরিবার। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই নাকি বদলে যান পামেলা। পামেলা-প্রবীর কি সম্পর্কে জড়াচ্ছেন? আঁচ করছিলেন কৌশিকবাবুরা। কিন্তু পামেলা সে কথা স্বীকার করেননি কোনোদিনই। ব্যবসার বাইরে আর কোনও সম্পর্কের কথা মানতেন না তিনি।

ধীরে ধীরে এমন একটা সময় এল যখন, সকাল ১১ টা বাজলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন পামেলা। কোনও দিকে তাকাতেন না। তাঁকে আটকালে বাবা-মা কে দু-চার কথা শুনিয়েও দিতেন। ড্রাগের নেশাতেই নাকি সময় হলেই ছুটতেন তিনি। চোখের সামনে এ ভাবে মেয়েকে বদলে যেতে দেখে মানতে পারেননি বাবা-মা। তাঁদের বুঝতে বাকি ছিল না যে মেয়ে ততদিনে গাঁজা-চরসের নেশায় বুঁদ। আর প্রবীরই সে সব সাপ্লাই দিচ্ছেন সেটাও কৌশিকবাবুদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: ‘কৈলাশ ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং-কে যেন অ্যারেস্ট করা হয়’, বিস্ফোরক পামেলা

কিছুদিনের মধ্যে জানা যায়, প্রবীর বিবাহিত, এক ৮-৯ বছরের মেয়েও আছে। বিপদ বাড়ছে বুঝে প্রবীরকে ডেকে পাঠান পামেলার বাবা। প্রবীর পামেলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেন। তারপর থেকে প্রবীরকে ছাড়া আর কিছুই বুঝতেন না পামেলা। তাঁর বাবার দাবি, ড্রাগ সাপ্লাই দিয়ে মেয়েকে বশ করে রাখত প্রবীর। প্রবীর আর ড্রাগ থেকে দূরে টানতে চাইলে বাবা-মার উপর আক্রমণ করতেও দ্বিধা বোধ করতেন না পামেলা। প্রবীরের উপর ভরসা করেই গত বছরের এপ্রিলে বাড়ি ছাড়েন পামেলা। বিয়ে তো দূরের কথা, পামেলার জীবন যখন ক্রমশ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে তখনই পুলিশের কাছে ছোটেন পামেলার বাবা। কিন্তু ততদিনে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।

গত কাল শুক্রবার পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন সেই পামেলা, সঙ্গে প্রবীর। আর উদ্ধার হল লক্ষাধিক টাকার মাদক।