কলকাতায় হানা দিয়েছে ব্রিটেনের ‘স্ট্রেন’! ৬ দফা নির্দেশিকা জারি স্বাস্থ্যভবনের
প্রাথমিকভাবে প্রশাসক পুত্রের যে বিমানে কলকাতা ফিরেছিলেন তাঁদের নমুনা সংগ্রহের কাজ বৃহস্পতিবার শুরু হওয়ার কথা।
সৌরভ দত্ত: কলকাতাতেও হানা দিয়েছে ব্রিটেনের নয়া ‘স্ট্রেন।’ করোনা (COVID) আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসক-চিকিৎসক কর্তার পুত্র। এবার স্বাস্থ্য ভবনের নজরে সেই যুবকের বিমান। তবে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে কাদের অগ্রাধিকারে রাখা হবে সেটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে প্রশাসক পুত্রের যে বিমানে কলকাতা ফিরেছিলেন তাঁদের নমুনা সংগ্রহের কাজ বৃহস্পতিবার শুরু হওয়ার কথা।
এছাড়া ৯ ডিসেম্বরের পরে ব্রিটেন ফেরত যাত্রীদের নিয়ে কলকাতায় আসা আরও একটি বিমানের যাত্রীরা কনট্র্যাক্ট ট্রেসিংয়ের তালিকায় রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে যেসকল যাত্রীর উপসর্গ দেখা দেবে তাঁদেরই নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। দু’টি বিমান মিলিয়ে যাত্রী সংখ্যা চারশোরও বেশি।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ারের ৭ জন যাত্রী আছেন। এছাড়া বাকি যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগ কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলির বাসিন্দা। এই সব জেলার নমুনা পরীক্ষা হবে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের নমুনা সেখানকার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পাশাপাশি স্কুল অব ট্রপিক্যালেও পাঠানো হবে।
মূলত ৯ ডিসেম্বরের পরে যে দুটি বিমান এসেছে তাঁদের যাত্রীদেরই নমুনা পরীক্ষার তালিকায় রাখা হচ্ছে। ৯ ডিসেম্বরের আগে ব্রিটেন থেকে কলকাতায় আসা একজন যাত্রীর করোনা ধরা পড়েছে। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। তাঁর দেহে ব্রিটেনের ‘স্ট্রেন’ রয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
এদিকে প্রশাসক-পুত্র আপাতত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আইসোলেশনে থাকবেন বলেই খবর। ১৪ দিনের মাথায় তাঁর আবার নমুনা পরীক্ষা করা হবে। আরটি-পিসিআরে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ না হলে একুশ দিনের মাথায় আরও একটি পরীক্ষা হবে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক প্রশাসক-চিকিৎসক জানান, কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেই ব্রিটেন ফেরত চিকিৎসাধীন যুবককে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে।
ইতিমধ্যেই করোনা নয়া স্ট্রেন রুখতে গত ১ মাসে ব্রিটেন ফেরতদের জন্য স্বাস্থ্যভবন থেকে ৬ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে তাদের উপর নজরদারি চালাবে বিশেষ দল। দেখে নেওয়া যাক সেই নির্দেশিকা…
১. ব্রিটেন ফেরতদের বাধ্যতামূলক আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। তাঁদের বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
২.জেলা নজরদারি দল প্রত্যেক যাত্রীর উপর ১৪ দিন ধরে নজরদারি চালাবে।
৩. * স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন যাত্রীদের ফোন করে খবর নেবেন, সেই বিষয়ে সাহায্য করতে হবে যাত্রীদের।
* কোভিডের কোনও উপসর্গ আছে কিনা তা যাত্রীকে ২৮ দিন ধরে নিজেকে পরীক্ষা করতে হবে।
* কোনও উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশনে যেতে হবে। জেলা নজরদারি আধিকারিক বা রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে জানাতে হবে।
৪. জেলা নজরদারি আধিকারিককে নিশ্চিত করতে হবে যে ২৮ দিন ধরে নজরদারি সঠিকভাবে হচ্ছে।
৫. যাঁদের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসবে তাঁদের রাজ্যা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় আইসোলেশনে যেতে হবে।
৬. যাঁরা ব্রিটেন ফেরত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসবেন তাঁদেরও পৃথকভাবে আইসোলেশনে যেতে হবে। আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে তাঁদেরও করোনা পরীক্ষা হবে।
আরও পড়ুন: একুশের আগেই আড়ে বহরে বাড়ছে এবিভিপি, রাজ্যে সদস্য সংখ্যা বেড়ে এক লক্ষ!