Dilip Ghosh on Municipal Elections 2021: ‘তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন’

কলকাতা: কলকাতার পুরভোট মিটেছে। রাজ্যের বাকি পুরভোট দ্রুত মেটাতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে, এখনও বিল-বিতর্কের জেরে থমকে রয়েছে হাওড়া পুরভোট। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।

দিলীপের মন্তব্য, “তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এ রাজ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই। তৃণমূল কীভাবে ভোটে জিতবে সেইমতো দিনক্ষণ ঠিক করা হচ্ছে। তাতে সায় দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কেন এতগুলো আলাদা আলাদা দফায় ভোট করা হল? কেন একসঙ্গে পুরভোট করা হল না? তৃণমূল যা চাইছে তাই করছে।”

দিলীপের এই মন্তব্যের পাল্টা তোপ দেগেছে শাসক শিবিরও। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “দিলীপবাবুকে বলব, নাচ না জানলে উঠোন ব্যাঁকা! আপনি নিজের দলের গণতন্ত্র সামলান! আপনার দলেই তো গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছে। সেটা সামলিয়ে তারপর রাজ্যের গণতন্ত্র নিয়ে চিন্তা করুন। বিজেপির কামিনী-কাঞ্চনের ধারণাটা আগে স্পষ্ট করুন। আপনি উঠোন ব্যাঁকা না বলে নাচটা বরং শিখে নিন। বিজেপি এখন গুরুত্বহীন।”

হাওড়া পুরভোট বিতর্ক

প্রসঙ্গত,  চার পুরনিগমের ভোট ঘোষণা হতেই হাওড়ার ভোট নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে। কিন্তু ২২ জানুয়ারির পুরভোটে বাদ রয়েছে হাওড়া পুরনিগম। কেন ২২ জানুয়ারির পুরভোটে হাওড়া বাদ, সে প্রশ্ন তুলেই প্রধান বিচারপতিকে ইমেল করা হয়েছে।  দ্রুত শুনানির আর্জি মামলাকারীর আইনজীবীর। মঙ্গলবারই  শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে। সোমবার, নির্বাচন কমিশন যখন চারটি পুরনিগমের ভোট ঘোষণা করে, বালি হাওড়াকে বাদ রাখা হয়।

পুরভোটের মামালকারী আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জরুরিভিত্তিতে একটি ইমেল করেন প্রধান বিচারপতিকে। তিনি সোমবার রাতেই শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, যেখানে আদালতে ইতিমধ্যেই কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ৫ টি পুরনিগমের নির্বাচন হবে, সেখানে আদালতকে জানানোর পরও কেন কমিশন চারটি পুরনিগমের নির্বাচন ঘোষণা করল? কেন সেই তালিকায় নেই হাওড়া পুরনিগমের নাম?

প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ

যদিও প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে রাতেই মামলাকারী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেওয়া হয় রাতে জরুরিভিত্তিতে শুনানি সম্ভব নয়। তাঁকে সুনির্দিষ্টভাবে  মঙ্গলবার মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে। মামলা দায়ের পরই হাইকোর্ট বিষয়টি শুনবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি কবে হবে? আদৌ সেই মামলা গৃহীত হবে কিনা, তাও জানিয়ে দেওয়া হবে।

মামলার প্রেক্ষাপট

সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন  রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে ভোটের বিজ্ঞপ্তি। শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগরে ভোট হচ্ছে ২২ জানুয়ারি। এবারও সব বুথে থাকছে সিসিক্যামেরা।

২৫ জানুয়ারি ভোটের গণনা। ২৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হবে। পুনর্নির্বাচনের দাবি থাকলে তা ২৪ জানুয়ারি হবে। সোমবার থেকেই জারি হয়ে গেল আদর্শ আচরণ বিধি। শুধুমাত্র যেখানে ভোট হবে সেই পুরনিগম এলাকায় আদর্শ আচরণ বিধি বলবৎ থাকবে।

শিলিগুড়িতে মোট ৪৭টি ওয়ার্ড। পোলিং স্টেশন ৪২১টি। ভোটার ৪,০২,৮৯৫। চন্দননগর পুরনিগমে মোট ৩৩টি ওয়ার্ড। ১৬৯টি পোলিং স্টেশন। ভোটার সংখ্যা ১,৪৪,৮৩৯। বিধাননগরে ৪১টি ওয়ার্ডে ভোট হবে। ৪৬৮টি পোলিং স্টেশন। ভোটার ৪,৪৬,৬৪০। আসানসোল পুরনিগমে ১০৬টি ওয়ার্ড। পোলিং স্টেশন ১০২০। ভোটার সংখ্যা ৯,৪২,০৮৮।

১ নভেম্বর ২০২১ সালের (১.১১.২১) ভোটার তালিকা অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ভোট হবে ইভিএমে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩ জানুয়ারি ২০২২। স্ক্রুটিনি ৪ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন ৬ জানুয়ারি। কোথাও পুনর্নির্বাচন হলে তা হবে ২৪ জানুয়ারি। ২৮ জানুয়ারির মধ্যে ভোটপর্ব সমাপ্ত হবে। আর এ নিয়ে শুরু হয় বিরোধ। জল গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। মঙ্গলবার হাইকোর্ট কী রায় দেয় সেদিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘প্রহসনের’ লোকায়ুক্ত বৈঠক ‘বয়কট’ শুভেন্দুর, উপস্থিত থাকবেন মমতা