CPIM-এর ঘরে CIA? দীর্ঘদিন বাংলার বুকেই ছিল ঘাঁটি?

TV9 Bangla Digital | Edited By: জয়দীপ দাস

Mar 21, 2025 | 12:23 AM

CPIM: একসময় হো-চো- মিন সরণীর বুকে কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট দেখে দারুণ একটা মন্তব্য করেছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক টুলি। বাংলা করলে যার অর্থ - বাঘের ঘরে ঘোগের বাস। কে জানে কার সর্বনাশ! সেই সময় আমেরিকা ও ভিয়েতনামের সম্পর্কের সমীকরণের নিরিখেই মার্ক টুলির সেই উক্তি। তা নিয়ে চর্চাও কম হয়নি।

Follow Us

কলকাতা: CPIM-এর ঘরে CIA? দীর্ঘদিন বাংলার বুকেই ছিল ঘাঁটি? পুরনো নথি ঠিক কী কী জানাল? বুধবার প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি খুনের সিক্রেট ফাইল প্রকাশ্যে এনেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে যা উঠে এল তাতেই এক্কেবারে তুমুল শোরগোল! একসময় হো-চো- মিন সরণীর বুকে কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট দেখে দারুণ একটা মন্তব্য করেছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক টুলি। বাংলা করলে যার অর্থ – বাঘের ঘরে ঘোগের বাস। কে জানে কার সর্বনাশ! সেই সময় আমেরিকা ও ভিয়েতনামের সম্পর্কের সমীকরণের নিরিখেই মার্ক টুলির সেই উক্তি। তা নিয়ে চর্চাও কম হয়নি। কিন্তু, এখন ট্রাম্প প্রশাসনের নথি ঘিরে দানা বাঁধছে নতুন চর্চা। ফাইলে যা উঠে এসেছে, তাতে আলিমুদ্দিনের পুরোনো নেতারাও হয়তো ভির্মি খাবেন। 

সূত্রের খবর, ওই ফাইলে স্পষ্ট হয়েছে, ষাটের দশক থেকে কলকাতার বুকে সক্রিয় ছিল সিআইএ-র একাধিক গোপন ঘাঁটি। কে জানে, সিপিএমের হেড অফিস আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের খুব কাছেই হয়তো ঘাঁটি গেড়ে কাজকর্ম চালাত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সিক্রেট এজেন্টরা। ফাইল থেকে স্পষ্ট, কলকাতা বাদে দিল্লির একাধিক জায়গা থেকে অপারেট করত সিআইএ। অন্য শহরেরও হয়তো সিআইএ এজেন্টরা ছিল। নিশ্চিতভাবেই ছিল। কিন্তু ফাইলে শুধু কলকাতা ও দিল্লির নামই রয়েছে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর জন তত্‍কালিন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করেছিল এক মার্কিন যুবক। সেই ঘটনার আগে ও পরে কেনেডির খুন সম্পর্কিত একের পর এক ফাইল তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার পাতা। ফাইলে প্রকাশ, ১৯৯৮ সালেও কেনেডির হত্যা নিয়ে ফাইল জমা পড়েছে মার্কিন প্রশাসনে। এইসব ফাইলে কলকাতা কানেকশন এখনই স্পষ্ট। 

বহু বছর এ রাজ্যে ছিল ঘাঁটি? 

সূত্রের খবর, ১৯৬৫ সালের একটি ফাইলে দেখা যাচ্ছে, দিল্লি ও কলকাতায় সিআইএ-র স্টেশন থেকে আমেরিকায় প্রচুর তথ্য যাচ্ছে। কেনেডির মৃত্যুর সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন। কিন্তু সিআইএ-র নজর তখন এ রাজ্যের বামেদের উপর। রাজ্যে বাম জমানা শুরুর পরেও বহু বছর এরাজ্যে ঘাঁটি গেড়েই কাজ চালিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। কে জানে, হয়তো তাদের এজেন্টরা আলিমুদ্দিনে গিয়ে বিখ্যাত লাল – চায়েও চুমুক দিয়েছেন। বাম নেতারা তখন আমেরিকার বাপ-বাপান্ত না করে জলগ্রহণ করতেন না। অথচ তাঁদের ঘরের পাশেই যে ঘোগের বাসা, সেটা বোধহয় তাদের জানা ছিল না। 

১২০টি শহরে সিআইএ-র ঘাঁটি? 

কেনেডি ফাইল বলছে, সেই সময় শুধু কলকাতা – দিল্লি নয়। দুনিয়ার অন্তত ১২০টি শহরে সিআইএ-র ঘাঁটি ছিল। প্রায়োরিটির নিরিখে সেগুলিকে চার ভাগে ভাগ করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা মূলত দু-ভাবে অপারেট করে বলেই জানা যায়। এক, বিভিন্ন শহরে বেস বা অফিস তৈরি করে, নিজস্ব লোক নিয়োগ করে। অনেকটা বড় কর্পোরেট কোম্পানির ব্রাঞ্চ অফিস বা সিটি অফিসের মতো। দুই, সরাসরি বেস তৈরির বদলে এজেন্ট নিয়োগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা। এই কাজে সরকারি অফিসার থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী – প্রয়োজন মতো সবাইকে কাজে লাগানোই দস্তুর। কেউ কেউ তো সিআইএ-র দাপট নিয়ে বলতে গিয়ে খানিক রসিকতার সঙ্গে হালকা খোঁচা মিশিয়ে বলতেন, আমার – আপনার বাড়িতে কোন রান্নায় কতটা নুন হয়েছে, সেটা আপনি নাও জানতে পারেন। কিন্তু সিআইএ জানে। কিছুই সিআইএ-র চোখ এড়ানোর উপায় নেই। আশির দশকে সোভিয়েত- আমেরিকা ঠান্ডা যুদ্ধ নিয়ে মজার ছলে কথাটা বলা হত বটে কিন্তু কথাটা খুব একটা মিথ্যা বলা যায় না বলেই ওয়াকিবহাল মহলের  বড় অংশের মত। ভারতে ‘র’ এর প্রাক্তন ডিরেক্টর বিক্রম সুদ একবার বলেছিলেন, কারও গোপন কথা জানতে চান? সেই লোকের ড্রাইভারের কাছে যান। এতটা নিখুঁত খবর আর কেউ দিতে পারবে না। সিআইএ-ও বাম নেতাদের গাড়ির ড্রাইভারদেরও কাজে লাগিয়েছিল কিনা কে জানে! কোনও একদিন অন্য কোনও ফাইলে হয়তো সেসব খোলসা হবে! 

কলকাতা: CPIM-এর ঘরে CIA? দীর্ঘদিন বাংলার বুকেই ছিল ঘাঁটি? পুরনো নথি ঠিক কী কী জানাল? বুধবার প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি খুনের সিক্রেট ফাইল প্রকাশ্যে এনেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে যা উঠে এল তাতেই এক্কেবারে তুমুল শোরগোল! একসময় হো-চো- মিন সরণীর বুকে কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট দেখে দারুণ একটা মন্তব্য করেছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক টুলি। বাংলা করলে যার অর্থ – বাঘের ঘরে ঘোগের বাস। কে জানে কার সর্বনাশ! সেই সময় আমেরিকা ও ভিয়েতনামের সম্পর্কের সমীকরণের নিরিখেই মার্ক টুলির সেই উক্তি। তা নিয়ে চর্চাও কম হয়নি। কিন্তু, এখন ট্রাম্প প্রশাসনের নথি ঘিরে দানা বাঁধছে নতুন চর্চা। ফাইলে যা উঠে এসেছে, তাতে আলিমুদ্দিনের পুরোনো নেতারাও হয়তো ভির্মি খাবেন। 

সূত্রের খবর, ওই ফাইলে স্পষ্ট হয়েছে, ষাটের দশক থেকে কলকাতার বুকে সক্রিয় ছিল সিআইএ-র একাধিক গোপন ঘাঁটি। কে জানে, সিপিএমের হেড অফিস আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের খুব কাছেই হয়তো ঘাঁটি গেড়ে কাজকর্ম চালাত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সিক্রেট এজেন্টরা। ফাইল থেকে স্পষ্ট, কলকাতা বাদে দিল্লির একাধিক জায়গা থেকে অপারেট করত সিআইএ। অন্য শহরেরও হয়তো সিআইএ এজেন্টরা ছিল। নিশ্চিতভাবেই ছিল। কিন্তু ফাইলে শুধু কলকাতা ও দিল্লির নামই রয়েছে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর জন তত্‍কালিন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করেছিল এক মার্কিন যুবক। সেই ঘটনার আগে ও পরে কেনেডির খুন সম্পর্কিত একের পর এক ফাইল তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার পাতা। ফাইলে প্রকাশ, ১৯৯৮ সালেও কেনেডির হত্যা নিয়ে ফাইল জমা পড়েছে মার্কিন প্রশাসনে। এইসব ফাইলে কলকাতা কানেকশন এখনই স্পষ্ট। 

বহু বছর এ রাজ্যে ছিল ঘাঁটি? 

সূত্রের খবর, ১৯৬৫ সালের একটি ফাইলে দেখা যাচ্ছে, দিল্লি ও কলকাতায় সিআইএ-র স্টেশন থেকে আমেরিকায় প্রচুর তথ্য যাচ্ছে। কেনেডির মৃত্যুর সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন। কিন্তু সিআইএ-র নজর তখন এ রাজ্যের বামেদের উপর। রাজ্যে বাম জমানা শুরুর পরেও বহু বছর এরাজ্যে ঘাঁটি গেড়েই কাজ চালিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। কে জানে, হয়তো তাদের এজেন্টরা আলিমুদ্দিনে গিয়ে বিখ্যাত লাল – চায়েও চুমুক দিয়েছেন। বাম নেতারা তখন আমেরিকার বাপ-বাপান্ত না করে জলগ্রহণ করতেন না। অথচ তাঁদের ঘরের পাশেই যে ঘোগের বাসা, সেটা বোধহয় তাদের জানা ছিল না। 

১২০টি শহরে সিআইএ-র ঘাঁটি? 

কেনেডি ফাইল বলছে, সেই সময় শুধু কলকাতা – দিল্লি নয়। দুনিয়ার অন্তত ১২০টি শহরে সিআইএ-র ঘাঁটি ছিল। প্রায়োরিটির নিরিখে সেগুলিকে চার ভাগে ভাগ করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা মূলত দু-ভাবে অপারেট করে বলেই জানা যায়। এক, বিভিন্ন শহরে বেস বা অফিস তৈরি করে, নিজস্ব লোক নিয়োগ করে। অনেকটা বড় কর্পোরেট কোম্পানির ব্রাঞ্চ অফিস বা সিটি অফিসের মতো। দুই, সরাসরি বেস তৈরির বদলে এজেন্ট নিয়োগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা। এই কাজে সরকারি অফিসার থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী – প্রয়োজন মতো সবাইকে কাজে লাগানোই দস্তুর। কেউ কেউ তো সিআইএ-র দাপট নিয়ে বলতে গিয়ে খানিক রসিকতার সঙ্গে হালকা খোঁচা মিশিয়ে বলতেন, আমার – আপনার বাড়িতে কোন রান্নায় কতটা নুন হয়েছে, সেটা আপনি নাও জানতে পারেন। কিন্তু সিআইএ জানে। কিছুই সিআইএ-র চোখ এড়ানোর উপায় নেই। আশির দশকে সোভিয়েত- আমেরিকা ঠান্ডা যুদ্ধ নিয়ে মজার ছলে কথাটা বলা হত বটে কিন্তু কথাটা খুব একটা মিথ্যা বলা যায় না বলেই ওয়াকিবহাল মহলের  বড় অংশের মত। ভারতে ‘র’ এর প্রাক্তন ডিরেক্টর বিক্রম সুদ একবার বলেছিলেন, কারও গোপন কথা জানতে চান? সেই লোকের ড্রাইভারের কাছে যান। এতটা নিখুঁত খবর আর কেউ দিতে পারবে না। সিআইএ-ও বাম নেতাদের গাড়ির ড্রাইভারদেরও কাজে লাগিয়েছিল কিনা কে জানে! কোনও একদিন অন্য কোনও ফাইলে হয়তো সেসব খোলসা হবে!