মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল ছবি)
Image Credit source: Facebook
কলকাতা: প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বিশেষ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনধান্য অডিটোরিয়ামে খেলাশ্রী প্রকল্পে আওতায় বিভিন্ন ক্রিড়াবিদদের এদিন সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অফিসারদের শৌর্য পদকে সম্মানিত করেন তিনি। পাশাপাশি ১৫৬৭ জন বাংলার বিশিষ্ট প্রাক্তন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, যাঁরা জাতীয় স্তরে ও আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে মাসিক সাম্মানিক হিসেবে ভাতা প্রদান প্রকল্পেরও আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে।
এদিন ধনধান্য অডিটোরিয়ামে যা যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী –
- আজ খেলাশ্রী ও শৌর্য পদক প্রদান করা হয়। মোট ৩২২ জন ক্রীড়াবিদকে সম্মাননা জানানো হবে। আমি ৭২ জনকে সম্মাননা দিলাম। ন্যাশনাল গেমস, এশিয়ান গেমস, ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক্সে কৃতী ৩২২ জন ক্রীড়াবিদকে আজ প্রায় ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্মাননা জ্ঞাপন করা হচ্ছে।
- আমাদের সরকার অনেক নতুন সম্মাননা চালু করেছি। খেল সম্মান, বাংলার গৌরব, ক্রীড়াগুরু, জীবনকৃতি পুরষ্কার। এখনও পর্যন্ত ৪৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই সম্মান পেয়েছেন।
- ১৫৬৭ জন বিশিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে সাম্মানিক যাবে। আজ থেকেই তা চালু হয়ে গেল। ১ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা এই সাম্মানিক পাবেন। চার মাসের সাম্মানিকও আজ চলে যাবে তাঁদের কাছে।
- শুধু লক্ষ্মীর ভাণ্ডারই পান, ২ কোটি মহিলা। গতকাল আমি সেটা আরও ১৩ লাখ বাড়িয়েছি। তাঁরা আমার কাছে সরাসরি অনুরোধ করেছিলেন।
- পুলিশের আট জন আধিকারিক, যাঁরা অনেক বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের শৌর্য পদকে সম্মানিত করলাম। তাঁদের কর্মদক্ষতা ও নিষ্ঠাকে আমি কুর্নিশ জানাই।
- কলকাতা নিরাপদতম শহর। বাংলাও আশা করি রাজীব কুমারের নেতৃত্বে খুব ভাল কাজ করবে।
- অনেক ক্রীড়াবিদকে আমরা পুলিশে চাকরি দিয়েছি। বিশেষ করে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর জগতে নিয়ে আসার জন্য, জঙ্গলমহল কাপ, সৈকত কাপ, রাঙামাটি কাপ, সুন্দরবন কাপ-সহ বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আমরা করি। রানার্স ও উইনার্সদের পুলিশে চাকরি দিই। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ৪,৩০০ জন খেলোয়াড়কে চাকরি দিয়েছি।
- ফিফা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ঘুরে দেখে বলে গিয়েছিল, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াঙ্গন।
- ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডানকেও আমরা বিভিন্নভাবে সাহায্য করছি। তাদেরও আমরা পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রায় ২৮ কোটি টাকা সাহায্য করেছি।
- খেলাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা যতটা পারি চেষ্টা করব, যাতে বাংলার খেলোয়াড়রা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেন। রাজ্যের ১৩২১ টি কোচিং ক্যাম্পকে চিহ্নিত করে, তাদের অনুপ্রাণিত করতে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
- আমাদের এখান থেকে ২১ জন এভারেস্ট জয় করেছে। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৪।
- প্রত্যন্ত জয়নগরের মোয়া আমরা খেতে খুব ভালবাসি। সেখানকার মোয়া খুব বিখ্যাত। জিআই ট্যাগ পেয়েছে। কিন্তু জয়নগরে যে এত ভাল খেলোয়াড় পাওয়া যায়, সে ধারণা আমার ছিল না।
- আমার তো ওদের দেখে হিংসা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আমরাও যদি একটু জিমনাস্টিক শিখতাম, আর একটু দুম-দাম ক্যারাটে, জুডো শিখতাম… তাহলে দুষ্টু লোকেদের কষিয়ে বেশ কিছু ঘা দিতেও পারতাম।
- আমি যখন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী ছিলাম, তখনই কবাডিকে এশিয়ান গেমসে ঢুকিয়েছিলাম।
- ২৮ তারিখ আমি রওনা দেব। হাসিমারা যাব। সেখান থেকে যাব কোচবিহার। ২৯ তারিখ কোচবিহারে কর্মসূচি আছে। তারপর সেখান থেকে উত্তরকন্যায় ফিরব। সেখানে জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ারের পাট্টা বিলি আছে। তার পরের দিন যাব রায়গঞ্জে, সেখান থেকে বালুরঘাটে। তারপরের দিন যাব মালদায়। এরপর মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগরে যাবে। ২৮ তারিখ থেকে ১-২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা কর্মসূচি।
- যেহেতু পরীক্ষা চালু হচ্ছে ২ তারিখ থেকে, বাইরে মাইক ব্যবহার বন্ধ। তিন দিন আগে থেকে বাইরে মাইক ব্যবহার করা যায় না। তাই আমরা ইনডোরে করব, বক্স লাগিয়ে কর্মসূচি করব। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পর করব।
- উপস্থিত খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বললেন, ‘আরও অনেক সোনা-রুপো-ব্রোঞ্জ আনতে হবে। মাথা উঁচু করে খেলবেন। মনেপ্রাণে শুধু একটাই চিন্তা রাখবেন, খেলতে হবে জিততে হবে। শাহরুখের একটা সিনেমা করেছিল না, চক দে ইন্ডিয়া… ওরকম আপনারাও বলবেন, জয় বাংলা। জয় বাংলা বলতে বলতে গিয়ে একদম জিতে কাপ নিয়ে চলে আসবেন। নিজের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে আসবেন।’