
কলকাতা: এসএসসি বলছে এবার পরীক্ষায় বসছেন মোট ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী। ৭ ও ১৪ তারিখ হচ্ছে পরীক্ষা। ৭ তারিখ নবম-দশমের পরীক্ষায় বসছেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু সকাল থেকেই দেখা গেল এবার বাংলার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় ঝাঁকে ঝাঁকে এলেন ভিন রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরাও। ২০১৬ এর পরীক্ষায় হিন্দি মিডিয়ামদের অনুমতি ছিল না বলে খবর। এবারেই প্রথম। অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিক হলেই পরীক্ষায় বসা সম্ভব। তাই ভিন রাজ্যের পরিক্ষার্থীদের আবেদনে কোনও বাধা নেই।
যাঁরা এসেছেন তাঁদের বেশিরভাগই হিন্দি মিডিয়াম ও ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষকতা করবেন। হিন্দি মিডিয়ামে আজকের পরীক্ষার শূন্যপদ ২২৫১। সেই শূন্যপদের জন্যই আবেদনের পাহাড় জমা হয়েছিল বলে খবর। উত্তর প্রদেশ থেকে রাজস্থান, সব রাজ্যে থেকেই এসেছেন পরীক্ষার্থীরা। রাজস্থান থেকে আসা এক পরীক্ষার্থী বলছেন, ওখানে পরীক্ষা কঠিন কিন্তু এখানে পদ্ধতি সোজা, তাই এসেছেন। তাঁর সাফ কথা, দুর্নীতি সব জায়গায় হয়, ওটা ব্যাপার নয়।
মনীন্দ্র চন্দ্র কলেজের বাইরেও উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে প্রচুর চাকরিপ্রার্থী এসেছেন পরীক্ষা দিতে। উত্তর প্রদেশ থেকে আগতদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। তাঁরা বলছেন, সেখানে কাজ নেই। ৪ বছর পরীক্ষা না হওয়ার কথাও বলছেন অনেকে। তাই কাজের আশা এবার বাংলায়।
ভিন রাজ্যের এক পরীক্ষার্থী বলছেন, “ঝাড়খণ্ড হোক বাংলা, সর্বত্রই দুর্নীতিতে ভর্তি। ঝাড়খণ্ডেও সিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পেপার লিক হয়েছে।” বেনারস থেকে এসেছেন আরও এক পরীক্ষার্থী। তিনি বলছেন, “উত্তর প্রদেশে কোথায় চাকরি? ওখানে কাজের সুযোগ অনেক কম। ২০১৮-২০১৯ সালের পর থেকে আর কোনও ভ্যাকেন্সি নেই। চার-পাঁচ বছর হয়ে গেল পরীক্ষা হয়নি।” উত্তর প্রদেশ থেকে আসা আর এক চাকরিপ্রার্থী বলছেন, “ওখানে চাকরির সুযোগ খুবই কম। বেকারত্ব তো গোটা দেশে চরমে উঠেছে। পুরোটাই জুমলা চলছে গোটা দেশে।”
রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, “আসলে দুধ আলাদা হয়ে যাচ্ছে, জল আলাদা হয়ে যাচ্ছে। এদের বক্তব্যে সবটাই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। গোটা ভারতের লোক বাংলায় ছুটে আসছে কারণ বাংলায় পরীক্ষাটা হয়, এবং ঠিকঠাক হয়। আর এরা বলছে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান ইত্যাদি জায়গায় জুমলা সরকার রয়েছে।” তবে বিজেপি মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার বলছেন, “বাংলার বাঙালিরা চাকরি পায়নি কারণ তাঁদের মেধা চুরি হয়েছে। এরপরে অন্য রাজ্যে কী হল ওসব নিয়ে ভাবার বাঙালির সময় নেই। বাঙালি ওসব নিয়ে ভাবছে না।”