কলকাতা: বিধানসভার দুই কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। বিধানসভার শিল্প বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। ইস্তফা দিয়েছেন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (PAC) থেকেও।
পার্থ ভৌমিক নৈহাটির বিধায়কের পাশাপাশি দমদম ও ব্যারাকপুর তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও। এই পার্থ ভৌমিককেই বিধানসভার শিল্পবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। পাশাপাশ তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্যও ছিলেন।
শিল্পবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পিএসির সদস্যপদ থেকেও তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। পার্থ ভৌমিকের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন হঠাৎ করে রাতারাতি বিধানসভার দু’টি কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি উঠছে প্রশ্ন।
যদিও পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, এর সঙ্গে কোনও রকম জল্পনা খোঁজা একেবারেই অর্থহীন। কারণ, তিনি বিধানসভার একাধিক কমিটির তিনি সদস্য। একাধিক কমিটির তিনি চেয়ারম্যান। তার পাশাপাশি দল তাঁকে সংগঠনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। ফলে একসঙ্গে সবটা সামাল দেওয়া সবসময় সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণেই তিনি এই দু’টি কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
যদিও বিধানসভা সূত্রে খবর, নির্বাচন ও উপনির্বাচনে জিতে নতুন যে সাতজন বিধায়ক বিধানসভায় এসেছেন তাঁর মধ্যে পাঁচজনের কমিটিতে ঢোকা প্রয়োজন। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তাঁরা সদস্য হবেন না ঠিকই। বাকি যাঁরা জিতে এসেছেন, তাঁদেরও কমিটিতে জায়গা করে দিতে হবে।
পার্থ ভৌমিক যেহেতু একাধিক কমিটিতে আছেন, সেই কারণে দু’টিতে বদল হতে চলেছে। পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, প্রচুর দায়িত্ব একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে তাঁকে। দলের কাজ, বিধানসভার কাজ একসঙ্গে সবটা সামলাতে হয়। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, বুধবারই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের কাছেই তিনি জানতে পারেন পিএসির চেয়ারম্যান বিধায়ক মুকুল রায়ের বাড়ি যে এলাকায়, সেই বীজপুরে চুরি বেড়েছে। আতঙ্ক বেড়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধও করেন পার্থ।
বিধায়কের অভিযোগের পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বীজপুরের ওসি কে? কই দেখি বীজপুরের ওসির চেহারা কেমন, সাদা না কালো না নীল? এত চুরি হচ্ছে কেন আপনার এলাকায়?” উত্তরে, ওসি সঞ্জয় বিশ্বাস জানান, মাঝেমধ্যেই অভিযান চালানো হয়, এলাকায়। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে বলেন, “দু-চারজনকে ধরলে হবে না। আরও বেশি অপরাধী ধরতে হবে। কেস ডায়েরিটা ভালো ভাবে সাজান, নইলে দু’দিনে ছাড়া পেয়ে যাবে আর ফের চুরি করবে।” এরপরেই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে বিশেষভাবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মমতা। প্রশাসনকে দ্রুত সমাধান করার নির্দেশও দেন তিনি। এরপরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। বীজপুর থানার ওসি সঞ্জয় বিশ্বাসের বদলির পাশাপাশি, আরও তিন অফিসারকে দ্রুত সরানো হয়।