BJP: ‘বিধানসভায় বিএসএফের সম্মানহানি’, সাজি ভরা পদ্ম, হাঁড়ি ভরা মিষ্টি নিয়ে বিএসএফের কার্যালয়ে হাজির শুভেন্দুরা

BJP: শুভেন্দু বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে সস্তা নাটক করছে, টুইটে লিখলেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ।

BJP: 'বিধানসভায় বিএসএফের সম্মানহানি', সাজি ভরা পদ্ম, হাঁড়ি ভরা মিষ্টি নিয়ে বিএসএফের কার্যালয়ে হাজির শুভেন্দুরা
সাজি ভরা পদ্মফুল আর হাঁড়ি ভরা মিষ্টি নিয়ে বিএসএফের কার্যালয়ে হাজির বিজেপি বিধায়করা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2021 | 1:03 AM

কলকাতা: জোরাল বিরোধী পক্ষ থাকলে যে কোনও ক্ষেত্রই সবসময় মুখর। এ রাজ্যের রাজনীতিতে আপাতত সেই মুখরতাই চাক্ষুষ করা যাচ্ছে। যে কোনও ইস্যুতে শাসকদল যখন কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে, পাল্টা চাপ বাড়াতে রাজ্যের বিরোধী বিজেপি শিবির ময়দানে নেমে পড়ছে। পেট্রোল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সেই ছবি। এবার দেখা যাচ্ছে বিএসএফ-তরজায়ও। বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো নিয়ে তৃণমূল সরকার যখন বিধানসভায় বিরোধিতার প্রস্তাব পাশ করে ফেলল, ঠিক তার একদিন পরই বিজেপির পাল্টা দান— সটান বিএসএফের দফতরে হাজির হয়ে যাওয়া। বিএসএফ জওয়ানদের হাতে সাজি ভরা পদ্ম, হাঁড়ি ভর্তি মিষ্টি তুলে দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউ টাউনে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার হেড কোয়ার্টারে হাজির হন বিজেপি বিধায়করা। যাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ৬০ জনের বেশি বিধায়ক নিয়ে এদিন সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের কার্যালয়ে যান শুভেন্দু। বিএসএফকে বরণ করে নেন তাঁরা।

বিজেপির বক্তব্য, এই বরণের মূল উদ্দেশ্যই হল, বিএসএফ জওয়ানকে সম্মানিত করা। অভিন্দন জানানো। কারণ সীমান্ত এলাকায় কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাঁরা লড়াই করেন, দেশকে বাঁচানোর কাজে যুক্ত থাকেন। অথচ তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ।

এদিন বিএসএফ-বরণ কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দেশের সুরক্ষায় আপনারা আত্মবলিদান দেন। আমাদের এজেন্ডা খুব পরিষ্কার। ভারত সরকার যে সার্কুলার জারি করেছে। বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এটা বাংলার জন্য খুশির খবর। অথচ এই ইস্যুতে বিধানসভায় চর্চা হয়েছে। অনেকে অসম্মান করেছেন। সে কারণে আমরা আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইতেও এসেছি। বিএসএফ জাতি, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করছে।”

এদিনের অনুষ্ঠান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী বিএসএফ কর্তাদের কাছে অনুরোধ রাখেন, সীমান্ত এলাকায় যেন গোশালা করা হয়। শুভেন্দুর যুক্তি, “সীমান্তে গোমাতাকে অনেক অত্যাচার করা হয়।”

এদিকে বিজেপির এমন কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হতে শুরু করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই কর্মসূচি নিয়ে টুইটারে কটাক্ষ করে লিখেছেন, “শুভেন্দু বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে সস্তা নাটক করছে। ও আগে বলুক, ২০১২ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদীজি তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে বিএসএফের ক্ষমতাবৃদ্ধির বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছিলেন কেন? কেন মোদিজি বলেছিলেন এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে আঘাত? এর জবাব না দিয়ে নাটক বন্ধ করুক বিজেপি।”

যদিও বিএসএফের কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, “আমরা কোনও রাজনৈতিক দল হিসেবে আসিনি। বিধায়ক হিসাবে এসেছি। আজ এসেছি কারণ এলাকা বেড়ে যাওয়ার খুশির খবর নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। এবার সব বেআইনি কাজ বন্ধ হবে। ১৬ তারিখ বিধানসভায় বিএসএফ সম্পর্কে কিছু অপশব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আমার মনে হয়েছে এতে সম্মানহানি হয়েছে। তাই ক্ষমা চাইতে এসেছি।”

বিএসএফ হয়ে সরব শুভেন্দু অধিকারীর সংযোজন, “দেশবিরোধী শক্তিকে কেউ উৎসাহ দিচ্ছে। আলাদা করে একজনের কোনও দোষ থাকতে পারে। তা বলে বিএসএফকে অপমান করার অধিকার কারও নেই।” প্রসঙ্গত, সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে সম্প্রতি ৫০ কিলোমিটার করার নির্দেশ জারি হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে। যার বিরোধিতাতেই রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হয় মঙ্গলবার।

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “বিএসএফের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। সীমান্ত সুরক্ষায় তাদের ভূমিকা গৌরবের। কিন্তু বিজেপি এই নিয়ে রাজনীতি করছে। এই বিএসএফ অফিসে যাওয়া, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সকে বিজেপি সিকিউরিটি ফোর্স বানাতে চাইছে।”

আরও পড়ুন: Cooch Behar: হেডফোনের তার দিয়ে বাঁধা হাত, ঘরের মধ্যেই স্ত্রী-ছেলে-সহ অধ্যাপকের নিথর দেহ, উদ্ধার দীর্ঘ ১২ পাতার সুইসাইড নোট!