কলকাতা: কোনও ভাবেই পানীয় জলের অপচয় করা যাবে না। এবার পানীয় জলের অপচয় রুখতে কঠোর হচ্ছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা এনকেডিএ (NKDA)। তারা মেপে দেবে, দিনে কতটা জল খরচ করবেন আপনি। মাপা জলের বাইরে পা রাখলেই গুনতে হবে জরিমানা।
পানীয় জলের অপচয় রুখতে প্রতিদিন কত পরিমাণ জল ব্যবহার করতে পারবেন নিউটাউনবাসী, তা ঠিক করে দিল নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। সকলে যাতে পরিশোধিত পানীয় জল সম পরিমাণে পায়, গ্রীষ্ম-বর্ষা কোনও সময়ই যাতে পানীয় জলের সঙ্কট না তৈরি হয় সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে ঠিক হয়েছে, নিউটাউনের স্থায়ী বাসিন্দারা দৈনিক সর্বাধিক একশো কুড়ি লিটার (120 Ltr) জল ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদিকে যাঁরা কর্মসূত্রে নিউটাউনে আছেন, তাঁদের জন্য জলের বরাদ্দের উর্ধ্বসীমা ৪০ লিটার (40 Ltr)। নিউটাউনে সব বাড়ির ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হতে চলেছে। সকলের জন্যই এক নিয়মে হাঁটতে চলেছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি।
কিন্তু কে কতটা জল ব্যবহার করছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তা নজরে রাখবে কী ভাবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবাসনগুলি বাল্ক ওয়াটার মিটার (Bulk Water Meter) বসানো হবে। এই মিটারেই ধরা পড়বে কোন আবাসনে কত পরিমাণ জল ব্যবহার করা হচ্ছে। নিউটাউনের পুরনো বাড়ি ও নতুন বাড়ি, সর্বক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
গত মাসেই ‘নিউ টাউন কলকাতা রুলস (বিল্ডিং) ২০০৯’-এর সংশোধন করা হয়। যেখানে কার কতটা জল ব্যবহারের অধিকার রয়েচে সে বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। সেই সংশোধনী মেনেই এবার নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ জলসঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে মহানগর। স্মার্টসিটি নিউটাউনও এই সঙ্কট থেকে বাদ পড়বে না। তবে যে কোনও সঙ্কটই কাটিয়ে ওঠা যায় সতর্কতা দিয়ে। সে বিশ্বাস থেকেই এনকেডিএ ‘জল মাপা’র কাজ শুরু করেছে। মেপে খরচ করলে, আখেরে লাভ হবে নিউটাউন উপনগরীবাসীরই বিশ্বাস এনকেডিএ-র কর্তাদের।
এখনও মফস্বলে গঙ্গার জল রিজার্ভারে পরিশোধিত করার পর তা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে পুরসভাগুলি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়, যে সময় জল পান সাধারণ মানুষ। ফলে সেখানে জলের অপচয় তুলনামূলক অনেকটাই কম। অন্তত বাড়িগুলির ক্ষেত্রে তো বটেই। তবে কলকাতা বা নিউটাউনের মতো এলাকায় সে অর্থে মেপে জল খরচের প্রবণতা খুবই কম। তাই হঠাৎ করে যদি তাঁদের মেপে জল খরচ করতে বলা হয়, তা হলে বিষয়টা যে ততটা সহজ হবে না নিউটাউনবাসী একাংশের বক্তব্যে তা ধরা পড়ছে।
নিউটাউনের সিসি ব্লকের বাসিন্দা রঞ্জিত বসাকের বক্তব্য, “এ ভাবে তো কিছু বলা সম্ভব নয়। আমাদের আবাসনের সকলে বসে কথা ঠিক হবে কারা কতটা জল ব্যবহার করছে। তার পর চূড়ান্ত কথা। এ ভাবে তো কে কতটা জল খরচ করে বলা যায় না। কেউ পড়ুয়া আছে, কেউ চাকুরিজীবী আছেন, কেউ আবার অবসরপ্রাপ্ত রয়েছেন। সকলের তো জলের ব্যবহার একরকম নয়।”
আরও পড়ুন: Gang Rape: রাতভর বাড়ি ফেরেননি মহিলা, পৈশাচিক অত্যাচারের পর পুকুরঘাটে ফেলে পালাল দুষ্কৃতীরা