Partha Chatterjee: ‘আছি আছি আছি’, পার্থর গলায় কীসের প্রত্যয়ী সুর
Partha Chatterjee: দুপুর ১২ টার আশপাশে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সামনে নামেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কার্যত রণংদেহী মেজাজে পরপর বলে যান শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষের নাম।
কলকাতা : মন্ত্রী তথা দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দল যে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, সে কথা বারবার মনে করিয়ে দেয় শাসক দল। অনুব্রতর জন্য গলা ফাটালেও পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের পক্ষে খুব বেশি সওয়ালও করতে দেখা যায়নি শাসক দলের নেতাদের। তবে বৃহস্পতিবার সেই দলের সঙ্গেই মিলে গেল পার্থর সুর! কোনও ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নয়, সিপিএম-বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে শাসক দলের নেতাদের বারবার আক্রমণ করতে দেখা যায়, সেই বিরোধী দলনেতার নাম শোনা গেল পার্থর মুখে। আবার ঘনিষ্ঠ মহলে বুঝিয়ে দিলেন, প্রমাণ আছে বলেই শুভেন্দু-সুজনদের নাম বলেছেন তিনি। আদালত কে বিচারকের সামনে স্বর নামিয়ে জামিনের আর্জি জানালেও পরে আদালত থেকে বেরনোর সময় ফের জোর গলায় বলে গেলেন, দলের সঙ্গে ‘আছি আছি আছি।’
পার্থর গলায় চড়া সুর
দুপুর ১২ টার আশপাশে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সামনে নামেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কার্যত রণংদেহী মেজাজে পরপর বলে যান শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষের নাম। সুর চড়িয়ে বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী কী করেছিল দেখুন না।’
পার্থর মুখে পাল্টা অভিযোগ নিয়ে যখন রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে, তখনও একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছিল, আদালতে বিচারককে কী এমন বলবেন পার্থ? কোর্টের বাইরে যাঁর গলায় বিরোধীদের বিরুদ্ধে এমন চড়া সুর শোনা গেল, ভিতরে গিয়ে তিনি এমন আরও অভিযোগ আনবেন না তো?
বিচারকের সামনে সুর নরম!
সারাদিন কৌতূহল জিইয়ে রেখেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বারবার বলেন, ‘বলব, পরে বলব।’ দুপুর ৩ টের কিছু পরে শুরু হয় নিয়োগ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের শুনানি। প্রায় ৩০ মিনিট পর বলার সুযোগ পান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। না, কোনও বিরোধীর নাম-টাম নয়, কার্যত জামিনের জন্য অনুরোধ শুরু করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি কতটা শিক্ষিত, তাঁর পরিবার কতটা সম্ভ্রান্ত এসব যুক্তি একে একে দিতে শুরু করেন। কী এমন অপরাধ করেছেন? জানতে চান বিচারকের কাছে। নরম সুরে বলেন, ‘মন্ত্রী হওয়াটা কি অপরাধ?’
‘আছি আছি আছি….’
সব কৌতূহলের অবসান ঘটিয়ে কোর্ট থেকে বেরলেন পার্থ। শুনানি শেষ। আবার জেলে যাওয়ার পালা। বেরনোর সময়ও পার্থর গলায় ফিরল চেনা দাপট! ‘পার্থ দা আপনাকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে…’, গাড়ির দরজা খুলে ঘাড় ঘুরিয়ে উচ্চস্বরে পার্থ জবাব দিলেন, ‘যার নিজের গায়ে কালি লেগে আছে, তারা আবার কি কালিমালিপ্ত করবে?’ প্রাক্তন মহাসচিবকে আবারও প্রশ্ন করা হল ‘আপনি কি দলের সঙ্গে আছেন?’ তৃণমূলে আছেন বলে আগেও জানিয়েছিলেন পার্থ। কিন্তু এদিন যে তাঁর স্বর আরও বেশি দৃঢ়। গাড়ির সিটে বসেই স্পষ্ট উচ্চারণে বললেন, ‘আছি আছি আছি….’
পার্থকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পার্থ নিয়ে সমর্থন বা বিরোধিতা আমরা কিছু করছি না। কিন্তু একজন অভিযুক্ত হিসেবে কিছু নাম বলেছেন। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের মুখোমুখি তদন্ত করতে হবে।’