কলকাতা: রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষার বিশেষ সচিবকে বদলি করা হল। পুরুলিয়ায় বদলি করা হল তমালকান্তি ঘোষকে। এভাবে বদলি অসম্মানজনক বলেই দাবি, চিকিৎসকদের অধিকাংশের। কিন্তু হঠাৎ কেনই বা এই বদলি? একাংশের দাবি, উত্তরবঙ্গ লবির বিরাগভাজন হওয়ার কারণেই বদলি করা হল স্বাস্থ্য শিক্ষার বিশেষ সচিবকে।
বিশেষ সচিব (মেডিকেল এডুকেশন) তমালকান্তি ঘোষকে পুরুলিয়ায় দেবেন মাহাতো মেডিকেল কলেজে প্রফেসর পদে বদলি করা হয়েছে। অর্থাৎ এতদিন স্বাস্থ্যের এত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা একজন চিকিৎসককে শুধুমাত্র অধ্যাপক করে পুরুলিয়ায় পাঠানো হল। অভিযোগ, নতুন মেডিকেল কলেজ ঘিরে বিরোধের সূত্রপাত। উত্তরবঙ্গ লবির সঙ্গে একমত হতে পারেননি তমালকান্তি বলেও দাবি সূত্রের।
তমালকান্তি ঘোষকে দেবেন মাহাতো কলেজের প্যাথলজির প্রফেসর পদে বদলি করা হয়েছে। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে চিকিৎসক অনিরুদ্ধ নিয়োগীকে। তিনি ছিলেন কল্যাণী মেডিকেল কলেজের অ্যাক্টিং প্রিন্সিপাল। এই বদলি ঘিরে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন নানা প্রশ্ন তুলছে। তাদের স্পষ্ট অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ লবির বিরাগভাজন হয়েই এই বদলি।
কেন বিরাগভাজন? ওই চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদের দাবি, যে সমস্ত বদলি মেডিকেল কলেজগুলিতে চলছে, সেই বদলির ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ লবি যেভাবে চাইছিল, কোথাও গিয়ে তমালকান্তি ঘোষ সেই মতে কাজ করতে চাননি। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তমালকান্তি ঘোষকে আমি দীর্ঘদিন চিনি। অত্যন্ত নিষ্ঠা ও দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। কোনও কিছুরই কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক কিছুই কেন হচ্ছে, কীভাবে পোস্টিং হচ্ছে তার কোনও জবাব নেই। কোনও পলিসি তৈরি হচ্ছে না। যখন খুশি, যাকে খুশি বসানো হচ্ছে।”
অপর প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ ঘোষ বলেন, “তমালকান্তি ঘোষ এমএসভিপি করেছেন। তিনি স্পেশাল সেক্রেটারি পদে আছেন। তাঁকে যদি সত্যি এরকম অর্ডার করে পুরুলিয়ায় প্রফেসর করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সত্যি এটা ঠিক হয়নি। এটা যুক্তিযুক্ত অর্ডার হল না। আমি অন্তত সরকারকে বলতাম, উনি খুবই যোগ্য চিকিৎসক। আরেকবার ভেবে দেখা হোক।”
স্বাস্থ্য দফতরের বদলি নির্দেশিকা ঘিরে বারবার বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। একদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষার বিশেষ সচিব তমালকান্তি ঘোষের বদলি নিয়ে যখন বিতর্ক দানা বেধেছে। একইসঙ্গে ১ হাজার ২৫৬ জন স্টাফ নার্সকেও বদলি ঘিরে শুরু হয়েছে চাপানউতর। বিভিন্ন স্তরের হাসপাতাল থেকে তাঁদের বদলি করা হয়েছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। রিলিভার ছাড়াই সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিলিভার ছাড়া নার্সরা বদলি হলে পরিষেবার কী হবে! প্রশ্ন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায় মাথায় হাত জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। একযোগে ১২৫৬ নার্সের বদলি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। চারটি স্বাস্থ্য জেলা-সহ রাজ্যের ২৭টি জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালে কর্মরত স্টাফ নার্স এবং হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্টদের বদলি করেছে স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুন: West Bengal municipal election 2021: হাওড়া পুরনিগমের সংশোধনী বিলে সই রাজ্যপালের, কাটল ভোটের জট