AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TV9 Bangaliana: নবজাগরণের ইতিহাসে মেয়েরা কি শুধুই নিয়েছে? বইয়ের পাতায় কেন এত আবছা সেই নারীরা

TV9 Bangla Digital

| Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Updated on: Feb 13, 2022 | 7:32 PM

Share

TV9 Bangaliana: পুরুষরা এগিয়ে এল, শিক্ষা দিল শুধু তা নয়। মেয়েরাও এগিয়ে এসেছেন মেয়েদের শিক্ষা দিতে।

এ সমাজে মেয়েদের অবস্থান ঠিক কোথায়, এ নিয়ে নানা মত রয়েছে। মেয়েরা এখন বিমান ওড়ায়, মেয়েরা এখন যুদ্ধে যায়। কিন্তু তাতে কি মেয়েদের চার দেওয়ালের ভিতরে যে সমস্ত যুদ্ধ তার অবসান হয়েছে? এ প্রসঙ্গে লেখিকা শ্রীময়ী কুণ্ডুর মত, এখনও গার্হস্থ্য হিংসার স্বীকার মেয়েরা। নানাভাবে অত্যাচার করা হয় বাড়িতে। সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, গার্হস্থ্য হিংসা বাংলায় অনেক বেশি। বাইরে বাঙালি মেয়েদের নিয়ে এমন ধারনাও রয়েছে, তারা খুব নাক উঁচু, জাদুটোনা করে, সবকিছু মুঠোয় রাখার চেষ্টা করে। উদ্যোগপতি মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যখন তুলনা টানি, বলি উত্তর প্রদেশ, বিহার, রাজস্থানের থেকে ভাল আছে বাংলার মেয়েরা। অর্থাৎ কতটা ভাল আছে, তা বোঝাতে অন্যের সঙ্গে তুলনার প্রয়োজন এখনও থেকে গিয়েছে। কিন্তু তাতে তো প্রমাণ হয় না, যে বাংলায় মেয়েরা নিরাপদ? এমন জায়গায় নিজেদের নিয়ে যেতে হবে, যেখান থেকে মনে হবে মেয়েরা সত্যিই নিশ্চিন্তে আছেন।

চলচ্চিত্র পরিচালক, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় মেয়েদের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তুলে ধরেন রেনেসাঁসের কথা। তিনি বলেন, “আমরা নবজাগরণের কথা বলি। নবজাগরণের অনেক সুফল পেয়েছি ঠিকই। কিন্তু একটা প্রশ্ন, যাপন ও সংস্কৃতিতে রেনেসাঁস কতটা প্রভাবিত করেছিল। বাঙালি বলতে আমি যদি গোটা বাংলা ধরি, তা হলে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। আমাদের সংস্কৃতি মানে রেনেসাঁস পরবর্তী সংস্কৃতির সঙ্গে।”

ইতিহাসের অধ্যাপক অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯ শতকের বাঙালি মেয়েদের ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন। তাঁর কথায়, নবজাগরণ নিয়ে কথা হলেই বিধবা বিবাহ আইন, সতীদাহ প্রথা রদ, স্ত্রী শিক্ষার প্রসার নিয়ে কথা বলি। কিন্তু এই নবজাগরণে মেয়েদের ভূমিকাটা ঠিক কী? মেয়েরা শুধুই নানা অন্ধকর পেয়েছেন, এটাই? অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “পুরুষের নেতৃত্বে, পুরুষের উদ্যোগে সমাজ সংস্কার হচ্ছে, মেয়েরা নিষ্ক্রিয়ভাবে সুবিধাটা গ্রহণ করছে এরকম একটা মনে হয়। ইতিহাসের বইয়ে সমাজ সংস্কার আন্দোলনটা এভাবেই তুলে ধরা। মেয়েদের জীবনটা পাল্টেছে ঠিকই, কিন্তু এই নবজাগরণে মেয়েদের কন্ঠস্বরও কিন্তু শোনা গিয়েছে। মেয়েরা চাইছে কৌলিন্য প্রথার অবসান, মেয়েরা বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার চাইছে। ১৮৯১ সালে সহবাস সম্মতি একটা আইন পাশ হয়েছিল, মেয়েরা কিন্তু তার সমর্থনে সোচ্চার হয়েছিল।” বাঙালি মেয়েরাও যে বহু যুগ ধরেই সরব, তার প্রমাণও গবেষণায় পেয়েছেন অপর্ণাদেবী।

পুরুষরা এগিয়ে এল, শিক্ষা দিল শুধু তা নয়। মেয়েরাও এগিয়ে এসেছেন মেয়েদের শিক্ষা দিতে। হেমলতা সরকারকে ভুললে চলবে না। মুসলিম মেয়েদের ক্ষেত্রেও ফয়জুন্নেসা চৌধুরি স্কুল তৈরি করছেন ১৮৭৬ সালে। রোকেয়ার অনেক আগেই এগিয়ে এসেছেন তিনি, বললেন অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাগরণের ইতিহাসে মেয়েদের নামই আবছা। কিন্তু বাস্তব তেমনটা নয়, মেয়েদের অদৃশ্য করে রাখা হয়েছে ইতিহাসে।