কলকাতা: অনলাইন থেকে অফলাইন পঠনপাঠনের দিকে আরও একধাপ পা বাড়াল রাজ্য। বুধবার স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। প্রত্যেক জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অফলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার আগে সকল ছাত্রছাত্রীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা দফতর এবং স্বাস্থ্য দফতর যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে।
এই চিঠির মাধ্যমে জেলাশাসক ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন নিজ নিজ জেলার কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে দ্রুত টিকাকরণের পরিকল্পনা করেন। যে যে কেন্দ্রে বর্তমানে টিকা দেওয়া হচ্ছে, হয় সেখানেই দেওয়া হবে। নতুবা আদর্শ এবং পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকলে, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই ক্যাম্প করে টিকা দেওয়া হবে, এমনটাই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে।
ভ্যাসকিনের ডোজ় এবং টিকাকর্মীদের বন্দোবস্ত করা হবে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকেই। এ বাদে ক্যাম্প করতে আর যে ধরনের কর্মীদের প্রয়োজন পড়বে তাঁদের সংশ্লিষ্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। উল্লেখ পেয়েছে রাজ্যের নির্দেশিকায়। শেষে লেখা হয়েছে, টিকাকরণের প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু করা হয়।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পাওয়ার পরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফেও এই সম্পর্কিত একটি নোটিস জারি করা হয়। নোটিসের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরোধে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্যাম্পাসেই একটি ফ্রি টিকাকরণের ক্যাম্প আয়োজন করতে সম্মত হয়েছে। যদিও কবে সেই ক্যাম্প হবে সেটা ওই নোটিসে উল্লেখ পায়নি। দিনক্ষণ পরবর্তী সময়ে জানানো হবে। ক্যাম্পের দিন যদি কেউ সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে না পারে, তবে আধার কার্ডের সঙ্গে কলেজের পরিপয়পত্র দেখিয়েও নিকটস্থ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে টিকা নেওয়া যাবে।
রাজ্যে স্কুল-কলেজ যে পুজোর পর থেকেই খোলা হতে পারে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অফলাইন ক্লাস চালুর দাবিতে যাবদপুর-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনও ক্রমশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সবই যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন অফলাইন পড়াশোনায় আপত্তি কোথায়! বক্তব্যটা সাফ আন্দোলনকারীদের।
অবশ্য রাজ্য সরকারের আজকের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুজোর পর দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালা খোলার সম্ভাবনা যে আরও উজ্জ্বল হল, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এ বার ফের একবার ক্লাসরুমগুলো কবে ভরে ওঠে, সেই অপেক্ষা শুরু হল।