High Court: ছাগলের কাটা মুণ্ডু নিয়ে হাজির বৌদি, খাস সল্টলেকে ব্ল্যাক ম্যাজিকের ঠেলায় অতিষ্ট পরিবার, মামলা হাইকোর্ট

Calcutta High Court: মহিলার পাল্টা অভিযোগ, বৃদ্ধা মা'কে দিয়ে ভুল বুঝিয়ে ইতিমধ্যে ছোট ভাই ওই ফ্ল্যাট–সহ যাবতীয় সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েছেন। যাতে বড় ভাইয়ের পরিবার ভাগ বসাতে না পারে, তাই তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে। বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে।

High Court: ছাগলের কাটা মুণ্ডু নিয়ে হাজির বৌদি, খাস সল্টলেকে ব্ল্যাক ম্যাজিকের ঠেলায় অতিষ্ট পরিবার, মামলা হাইকোর্ট
Image Credit source: AI Generated Image

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Nov 26, 2025 | 11:57 PM

কলকাতা: দাদার আত্মার শান্তি কামনায় শ্বশুর বাড়িতে ব্ল্যাক ম্যাজিক বৌদির। অতিষ্ট দেওর থেকে পরিবারের সব সদস্য। মুক্তি পেতে আদালতের দ্বারস্থ পরিবার। কখনও তুকতাক, কখনও রীতিমতো তাণ্ডব, বউমার কীর্তিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত শ্বশুরবাড়ির। কোনও অজ পাড়া গাঁ নয়, সল্টলেকে ব্ল্যাক ম্যাজিকের ভয়ে সিঁটিয়ে গোটা পরিবার। মানসিক অসুস্থতা নাকি অন্য কোনও কারণ? সল্টলেকের এই ঘটনায় উঠছে প্রশ্ন।

বাড়ির বড় ছেলে ও বড় বউমার মধ্যে তিক্ততা দীর্ঘদিনের। সেই ২০০৭ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। তখন থেকেই বড় ছেলের স্ত্রী তাঁদের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে থাকেন। স্বামী করুণাময়ীর আবাসনে মা ও ছোট ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে স্বামীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পৌঁছয় সুকিয়া স্ট্রিটে তাঁর স্ত্রীর কাছে। মৃতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, সেদিন থেকেই বড় বউমা নানারকমের অদ্ভুত আচরণ শুরু করেছেন।

অভিযোগ, একদিন একটি ছাগলের কাটা মাথা হাতে বাড়িতে হাজির হন ওই বউমা। সেই কাটা মুণ্ডুতে সিঁদুরের টিপ পরানো। ঘরে নিয়ে গিয়ে সেই কাটা মাথার পুজো শুরু করেন তিনি। এমন নানারকম তুকতাক চলছিলই। এরপর গত ৩১ অক্টোবর গ্যাসের সিলিন্ডার অন করে সকলকে নিয়ে কার্যত মরতেও গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ পরিবারের। ওই মহিলার দাবি, এসব করলে নাকি তাঁর স্বামীর আত্মা মুক্তি পাবে।

বিষয়টি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে সমাধান হয়নি কিছুই। এই পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে মৃতের পরিবার। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে মহিলার মানসিক চিকিৎসার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। উল্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন ওই মহিলা ও তাঁর ছেলে। ডিভিশন বেঞ্চে যায় সেই মামলা। পুলিশের থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

মৃতের মা ও ভাইয়ের তরফে তাঁদের আইনজীবী অতরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আরও একবার গ্যাস জ্বালিয়ে সকলকে নিয়ে মরার ফাঁদ পেতেছিলেন। দেওর বাধা দেওয়ায়, তাঁকেও মারধর করেন ওই মহিলা।’

বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে মামলাটি ওঠে। সিঙ্গল বেঞ্চ মহিলার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পুলিশকে ডাক্তার দেখিয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও তাঁর ছেলে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। মহিলার পাল্টা অভিযোগ, বৃদ্ধা মা’কে দিয়ে ভুল বুঝিয়ে ইতিমধ্যে ছোট ভাই ওই ফ্ল্যাট–সহ যাবতীয় সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েছেন। যাতে বড় ভাইয়ের পরিবার ভাগ বসাতে না পারে, তাই তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে।

বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। প্রাথমিক শুনানির পরে হাইকোর্ট পুলিশের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছে। কী রিপোর্ট সিঙ্গল বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়েছে, তার নথিও দেখতে চেয়েছেন বিচারপতি। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার সেই নথি পুলিশকে জমা দিতে হবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।