বেডরুম (Bedroom) এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ বিশ্রাম নিতে যায়। সঙ্গীর সঙ্গে সুখী সময় কাটাতে যায়। বাস্তু বিদ্যা (Vastu Shastra) অনুসারে, সকালে শয়নকক্ষ থেকে বেরনর পর একজন ব্যক্তি যদি প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর থাকেন তাহলে বেডরুমের বাস্তু ঠিক আছে। আর তিনি যদি সারা রাত শুয়ে থাকার পরেও ক্লান্ত বোধ করেন তাহলে সমস্যা রয়েছে শয়নকক্ষের বাস্তুতে। বাস্তুশাস্ত্র (Vastu Tips) অনুসারে বিশ্রাম নেওয়ার বিছানা মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। বেডরুম ও বিছানার প্রভাব একজন ব্যক্তির পারিবারিক জীবনের সঙ্গে বাহ্যিক জীবনেও পড়ে। বাস্তু অনুসারে, বেডরুমে কিছু জিনিসপত্র সঠিক জায়গায় না থাকলে তার থেকে নেতিবাচক শক্তি (Negetive Energy) প্রবাহিত হয় ব্যক্তির গৃহে ও জীবনে। এমনকী শয়নকক্ষের বিছানা, দেওয়ালে কিছু জিনিস রাখলে পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসে। দাম্পত্যে ফাটল ধরে। অর্তনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। স্বাস্থ্যও ভেঙে যায়। দেখা যাক কোন কোন বস্তু বেডরুমে রাখা যায় না আর কোন কোন জিনিস বেডরুমে রাখা উচিত—
বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি
আধুনিক যুগে বেডরুমে কম্পিউটার এবং টিভির মতো বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম দম্পতির মধ্যে দূরত্বের প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। বাস্তু মতে, এই ধরনের প্রযুক্তির মূল উপাদান অগ্নি। ফলে বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি থেকে এক ধরনের নেতিবাচক রশ্মি প্রবাহিত হয় যা দম্পতির সম্পর্কে বাধা তৈরি করে।
হিংসাত্মক ছবি
বেডরুম শান্তিতে শ্বাস নেওয়ার জায়গা। চরম সুখের মুহূর্ত কাটানোর স্থল। শয়নকক্ষে মানুষ শরীরিক ও মানসিক আরাম পেতে প্রবেশ করেন। তাই বেডরুমের দেওয়ালে কোনও হিংসাত্মক ছবি বা দুঃখের অনুভূতি সৃষ্টিকারক ছবি থাকা উচিত নয়। এই ধরনের ছবি আপনার ও জীবনসঙ্গীর উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। এমনকী জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কলহ বাঁধাতে পারে। বাস্তু বিজ্ঞানের মতে তাই দেওয়ালে ছবি ঢাঙানোর সময় প্রেমময় এবং আনন্দদায়ক ছবি বাছুন।
শয্যার সংখ্যা
বাস্তু বিজ্ঞান অনুসারে শয়নকক্ষে সবসময় একটিই শয্যা থাকা উচিত। এমনকী দু’টি খাটকে পাশাপাশি জুড়েও ব্যবহার করা উচিত নয়। এরফলে দম্পতির সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে।
বেডরুম ও বাথরুম
আজকাল বেডরুমের সঙ্গে অ্যাটাচড বাথরুম রাখাই দস্তুর। তবে বেডরুমের সঙ্গে বাথরুম যুক্ত থাকলে কতকগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে— প্রথমত অ্যাটাচড বাথরুম শুকনো রাখতে হবে। সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছনতার উপর দিতে হবে নজর। বাথরুম ব্যবহারের পরে দরজা বন্ধ রাখুন। দরজা খোলা টয়লেট থেকে নেতিবাচক প্রভাব সমগ্র ঘরে প্রবাহিত হয়। শুরু হয় নানা ধরনের সমস্যা। এছাড়া সাঁতস্যাঁতে বাথরুম দম্পতিকে ঋণগ্রস্ত করে তোলে। এমনকী সাংসারিক জীবনেও ঝড় বইয়ে দিতে পারে।
মাটিতে বিছানা
অনেকে মেঝেতে বিছানা পাতেন। এমন দম্পতিদের জন্য পরামর্শ, ঘরের কোণে বিছানা পাতবেন না। কারণ সেক্ষেত্রে ইতিবাচক এনার্জি ঘরের চারকোণে প্রবাহিত হওয়ার থেকে বাধা পাবে। চেষ্টা করুন দরজার সঙ্গে সমান্তারালে বিছানা পাততে।
বিছানার চাদর
বাস্তু শাস্ত্র অনুসারে, বিছানার চাদর ও বালিশের ঢাকা ২ থেকে ৩ দিন অন্তর পরিবর্তন করা উচিত। এছাড়া সপ্তাহে অন্তত একদিন তোষকগুলিকে রোদ্রে রাখুন। এরফলে জীবনে শুভ পরিবর্তন আসবে।
ঘরের মাঝখানে খাট
কখনওই শয়নকক্ষের মাঝখানে বেড রাখবেন না। কারণ ঘরের কেন্দ্রস্থানটি হল ‘ব্রহ্মস্থান’, যা শক্তির উৎস। মাঝখানে খাট রাখলে ব্রহ্মস্থান থেকে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহে বাধা তৈরি হবে।
মাথা রাখবেন কোন দিকে?
চেষ্টা করুন দক্ষিণ বা পূর্ব দিকে মাথা রেখে শুতে। সেক্ষেত্রে বোধবুদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হবেই।
তামার তার
বিছানার চারপাশ তামার তার দিয়ে বেঁধে দিলে পতি-পত্নীর সম্পর্ক মজবুত হয়। নেতিবাচক মানসিকতাও দূরীভূত হয়। তামার তার তার আপনার আশেপাশে পজিটিভ এনার্জির প্রবাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। গৃহের ও দাম্পত্যের একাধিক সমস্যাও দূর হয়।
বিছানার নীচে বেকার জিনিস
খাট ও বিছানার নীচে ময়লা রাখবেন না। কারণ বিছানার নীচে বেকার এবং নোংরা জিনিস রাখলে আপনাদের সম্পর্কেও নেতিবাচক শক্তি প্রবাহিত হবে। সাংসারিক ও ব্যক্তিগত জীবনের উন্নতিও অধরা থেকে যাবে। তাই বিছানার নীচের অংশটি সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
এমনকী বিছনার নীচে চটি, বা ঝাঁটার মতো জিনিসও রাখা উচিত নয়। এই সমস্ত জিনিসগুলি দম্পতির সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।