Anubrata Mondal, Birbhum: অনুব্রত ফেরায় অক্সিজেন ফিরে পাচ্ছে কী তৃণমূল? নাকি ‘খাঁচায়’ থেকে ‘বাঘের’ নখ-দাঁত ভোঁতা হয়েছে?

২৫ মাস পর ঘরে ফিরেছেন অনুব্রত মন্ডল। পেয়েছেন বীরের সম্বর্ধনা। বাঘের প্রত্যাবর্তনে পাল্টে যাবে বীরভূমের রাজনৈতিক সমীকরণ? কোন পথে হাঁটবে পাচার সিন্ডিকেট? দুর্নীতি মামলার ভবিষ্যৎ কী? দেখুন TV9 বাংলা নিউজ সিরিজ ‘কেষ্টবাবুর প্রত্যাবর্তন’।

Anubrata Mondal, Birbhum: অনুব্রত ফেরায় অক্সিজেন ফিরে পাচ্ছে কী তৃণমূল? নাকি 'খাঁচায়' থেকে 'বাঘের' নখ-দাঁত ভোঁতা হয়েছে?
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2024 | 10:19 PM

দুবছর বন্দি ছিলেন। ফিরলেন অনুব্রত মন্ডল। সেজে উঠেছিল কেষ্টভুমি বোলপুর। জামিন থেকে শুরু করে বাড়ি ফেরা। একটা টানটান ড্রামা। অনুব্রত কেমন আছেন? কেমন আছে বীরভূম? বীরভূমের রাজা না থাকায় রাজ্যপাট দখল করেছে অন্য কেউ? অনুব্রত ফেরায় অক্সিজেন ফিরে পাচ্ছে কী তৃণমূল? নাকি খাঁচায় থেকে বাঘের নখ-দাঁত ভোঁতা হয়েছে। তাই তিনি এখন দলের কাছে বোঝা? কেমন ছিল দুই বছর আগের বাঘ-বন্দী খেলা?

বীরবেশে বীরভূমে

অনুব্রত যেন যুদ্ধ জিতে ফিরেছেন। প্রস্তুতিটা চলছিল চারদিন ধরেই। মঙ্গলবার ভক্তদের উন্মাদনায়, ঢাকের তালে, পুষ্পবৃষ্টি মাথায় নিয়ে কার্যত বীর সম্মানে বাড়ি ফিরলেন কেষ্ট। তবে দলের প্রতি কেষ্টবাবুর যে অভিমান হয়েছে সেটা বোঝা গেল ২৪ সেপ্টেম্বর সকালেই। নিচুপট্টির বাড়ির বাইরে তখনও দলীয় কর্মীদের ভিড়। সেই ভিড়েই দেখা গেল ভিআইপিদের মুখও। বিনা বিচারে দুবছর পর অনুব্রতর জামিন উস্কে দিচ্ছে আরও একটি প্রশ্ন। প্রশ্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত নিয়ে। নিরপেক্ষতা নিয়ে। শুধু অনুব্রত নয়, ছাড়া পেয়েছেন এনামুল হকও। মুখ্যমন্ত্রীর ভবিষ্যৎবাণীই কার্যত সত্যি হল?

বাঘবন্দি খেলা

কেষ্ট মানেই ড্রামা। কেষ্ট মানেই টানটান টেনশন। শুধু কী তাঁর ফেরা? কেষ্ট যাত্রার দিনগুলো। নিচুপট্টি থেকে আসানসোল হয়ে দিল্লি। মনে আছে সেই রোমাঞ্চকর সফর? কথায় বলে কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। সেদিনও কেষ্টলাভের আশায় কম কাঠ-খড় পোড়াতে হয় নি সিবিআই-ইডিকে। ডন কো পাকারনা মুশকিল হি নেহি, নামুমকিন হে। এই ডায়লগটাই আর দেওয়া হয়ে উঠলো না কেষ্টর। ১১ আগস্ট, ২০২২। নিচুপট্টির বাড়িতে সিবিআই আসে। তল্লাশির পর সেখান থেকেই অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম বর্ধমান। তারপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। মামাবাড়ি ভালো মজা, কিল চড় নাই। গ্রেফতারির পর আসানসোলের জেলে কেষ্ট কি এই ছড়াই বলতেন? রাজ্য পুলিশের জেল নাকি কেষ্টর কন্ট্রোলরুম। বহাল তবিয়তেই ছিলেন। তারপর, ৭ই মার্চ ২০২২। আসানসোল থেকে দিল্লি ভায়া কলকাতা। কিন্তু সব কোথায় গিয়ে যেন ঘেঁটে গেল? কোথায় বলুন তো?

দখলদারির অঙ্ক

যখন অনুব্রত মন্ডলের বেআইনি টাকার খোঁজ করছিল সিবিআই। টোল একটা বড় রোল প্লে করেছিল। অভিযোগ ছিল বেআইনি টোল থেকেই প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার আয় কেষ্ট ও তাঁর অনুগামীদের। শুধু কি টোল? সিবিআই তদন্তে সেদিন উঠে এসেছিল একের পর এক কেষ্টলীলা। রাতারাতি জমিদখল কিংবা অজানা কারণে মালিকানা বদল। কান পাতলেই শোনা যেত কেষ্ট মন্ডলের নাম। তবে গরু, কয়লা পাচার, বেনামি সম্পত্তির বিপুল বৈভব, আকাশছোঁয়া ক্ষমতার নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল অন্য লীলাখেলা। ২১ মার্চ, ২০২২। সন্ধ্যেবেলা খুন হয়েছিলেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। তারপর? সেই রাতেই প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল তরতাজা দশটা প্রাণ। লবির লড়াই থেকে প্রতিশোধের খুন। অবৈধ টোল থেকে চাষের জমি। খাদান থেকে চালকল। কেষ্টভূমের একটাই মালিক। মনে আছে ভোলে বোম রাইস মিলের কথা? সেদিনও নাকি হটাৎ করেই হারাধন মন্ডলের রাইস মিলের মালিক হয়ে গিয়েছিলেন কেষ্টবাবু ও তাঁর মেয়ে।কেষ্টর লীলা খেলায় বীরভূমে বালি থেকে পাথর সবই নাকি হাপিস হয়ে যেত। কেষ্টভুমে বাদ যেত না খোদ ঈশ্বরও। দখল দখল খেলায় মেতে থাকতেন অনুব্রতর দলবল।

রাজনীতির রংবদল

কেষ্টভূমে কোনঠাসা ছিলেন যারা, শেষ দুবছরে তাঁরাই সামলেছেন বীরভূমের হাল। কেষ্টবিরোধী নেতারাই ছিলেন কোর কমিটির হত্তাকত্তা। অনুব্রত বাড়ি ফেরায় আবারও কি তাই বইতে শুরু করেছে দ্বন্দ্বের হাওয়া? বীরভূম তৃণমূলের জেলা অফিস। কেষ্টই করেছিলেন উদ্বোধন। সেখানেও শেষ দুবছরে মুছে গিয়েছিল তাঁর স্মৃতি। অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছিল কোর কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের বিরুদ্ধে। কেষ্ট ফেরায় কি তবে ব্যাকফুটে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন কাজল শেখ? এই প্রশ্নই যখন দানা বাঁধছিল তখনই গর্জন। তবে কেষ্টর নয়, কাজল শেখের। যেন অল আউট ওয়ারের ঘোষণা। কেষ্ট যদিও হাতে হাত ধরে চলার বার্তায় দিয়েছেন। তবে কি কোর কমিটি আর অনুব্রতর সহাবস্থানেই চলবে বীরভূমের ঘাসফুল শিবির? নাকি হাতবদল হবে নেতৃত্বের। সামনেই শুরু বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। কোন ভূমিকায় দেখা যাবে কেষ্টকে?

Follow Us: