Purba Medinipur Flood News: ১৪ হাজারে হেক্টরের বেশি চাষজমি জলের তলায়!
টানা বৃষ্টিতে মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় এক হাজার মানুষকে বাড়ি থেকে ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়েছে। জেলায় কয়েকশো একর চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে চাষে ক্ষতির বহর বাড়বে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকের প্রায় প্রতি মুহূর্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করছে।
টানা বৃষ্টিতে মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় এক হাজার মানুষকে বাড়ি থেকে ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়েছে। জেলায় কয়েকশো একর চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে চাষে ক্ষতির বহর বাড়বে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকের প্রায় প্রতি মুহূর্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া, ময়না, খেজুরি-১ ও পটাশপুর-১ ব্লকে প্লাবন পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি। সরকারিভাবে ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত প্লাবিত। মোট প্রায় ১০০০ জনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। ১৩ হাজার ৪৯৬ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় বলে জেলা কৃষি দপ্তরের সূত্রে খবর। ময়নায় বেশকিছু পানের বরোজ ভেঙে পড়েছে। কেলেঘাই নদী নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। ২০২১ সালে তালছিটকিনি এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। এবারও পটাশপুরের পাথরঘাটা, খাদারভেড়ি ও তালছিটকিনি এলাকায় নদীবাঁধ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। ইতিমধ্যে সেচ দপ্তর কাজ চালাচ্ছে জোর কদমে। নিচু এলাকায় বাঁধ সংরক্ষণের জন্য বল্লা ও গানি ব্যাগ তৈরি করা চলছে। তমলুক মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। । শহিদ মাতঙ্গিনী বিডিও অফিস জলে থইথই। সেখানেই হাঁটু পর্যন্ত জল রয়েছে। বল্লুক-১ ও ২, রঘুনাথপুর-১ ও ২ সহ বেশকিছু গ্রাম পঞ্চায়েতের নিচু এলাকা থেকে মানুষজনকে উঁচু জায়গায় সরানো হয়েছে। পাঁশকুড়ায় প্রায় চারশো মানুষকে নিচু এলাকা থেকে সরানো হয়েছে। মাইসোরা ও গোবিন্দনগর পঞ্চায়েত বাদে বাকি। ১২টি রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জলমগ্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খণ্ডখোলা, পুরুষোত্তমপুর, রঘুনাথবাড়ি ও রাধাবল্লভচক গ্রাম পঞ্চায়েতের অবস্থা বেশ খারাপ। পূর্ব চিন্তা থেকে পুরুষোত্তমপুর, দোবান্ধি থেকে দামোদরপুর সহ অনেক গ্রামীণ রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে।
কংসাবতী নদীতে জল বাড়ার কারণে পাঁশকুড়া পৌরসভা এলাকার ডমঘাট বাঁশের সেতু ভেঙে যায় সেখানেই সকাল থেকে যাতায়াত করছিল নৌকো। প্রশাসন এসেছে সেই নৌকোর বন্ধ করে দেওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। পাঁশকুড়া থানা পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ যে দীর্ঘদিন ধরে আমরা কংক্রিটের সেতু দাবি করেছি তবে নদীতে বাঁসের সেতু ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে নৌকায় যাতায়াত করছিল সাধারণ বাসিন্দারা। টানা বৃষ্টিতে প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে জল। ময়নার পরমানন্দপুর জগন্নাথ ইন্সটিটিউশনের সামনে তখন কোমর সমান জল। স্কুলের হস্টেল, অডিটোরিয়াম, ক্লাসরুম সব জলে ভাসছে। হস্টেলে তখন ৫০০ ছাত্রী। নীচের তলার ফাইভ পড়ুয়াদের পক্ষে স্কুলে আসা সম্ভব ছিল না। টানা বৃষ্টিতে ময়না ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সাব স্টেশনে জল জমে যায়। বিপর্যয় মোকাবিলায় সেখানে জেনারেটরের সাহায্যে জল বের করার ব্যবস্থা করা হয়। মাঠে পশ্চিম ময়না সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ ময়না ব্লকের পরমানন্দপুর, রামচক ও গোকুলনগর পঞ্চায়েত এলাকা বৃষ্টির জলে ভাসছে। নিকাশি ব্যবস্থার অবস্থার জন্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, আইসিডিএস সেন্টার, স্কুল জলমগ্ন হয়েছে। এই মুহূর্তে ময়নায় ভেড়ি নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেইসব ভেড়িতে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ রয়েছে। ময়না থেকে বলাইপণ্ডা যাওয়ার পথে দক্ষিণ আনুখা গ্রামের চণ্ডী মন্দিরের সামনে একটি ভেড়ি জলে ভেসেছে। জাল পেতে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তাই ময়নায় এই মুহুর্তে ঘরবাড়ি, গবাদি পশু রক্ষার পাশাপাশি ভেড়ি রক্ষার লড়াইও চলছে।

