Digital Parcel Scam: ‘পার্সেলে মাদক’! ইমেলে নোটিশ, গ্রেফতারির নথি! পুলিশের আইডি নকল করে জাল ছড়াচ্ছে প্রতারকরা!
Parcel Scam: ধরুন আপনার কাছে একটা ফোন এল। ফোনের ওপার থেকে বলা হল, আপনি সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনও দেশে নিষিদ্ধ মাদক ক্যুরিয়র করেছিলেন। এয়ারপোর্টে সেই প্যাকেট ধরা পড়েছে। তাই, আপনাকে এখনই অন্য কোনও শহরে গিয়ে সেখানকার থানায় হাজিরা দিতে হবে। না হলে পুলিশ গিয়ে ঘাড় ধরে তুলে আনবে।
মনে করুন আপনি অফিসে বসে কাজ করছেন, কিংবা অলস দুপুরে সবে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছেন, হঠাৎ আপনার কাছে একটা ফোন এল। ফোনের ওপার থেকে বলা হল, আপনি সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনও দেশে নিষিদ্ধ মাদক ক্যুরিয়র করেছিলেন। এয়ারপোর্টে সেই প্যাকেট ধরা পড়েছে। তাই, আপনাকে এখনই অন্য কোনও শহরে গিয়ে সেখানকার থানায় হাজিরা দিতে হবে। না হলে পুলিশ গিয়ে ঘাড় ধরে তুলে আনবে।
আবার ধরুন আপনার কাছে ফোন এবং মেল দুটোই এল। সঙ্গে এল অ্যারেস্ট মেমোও। এই সবকটাই সরকারি ডোমেন আইডি থেকে। পুলিশ বা কাস্টমসের ডোমেন থেকে ই-মেল পেলে সেটা সহজে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আপনি তাই বাধ্য হয়ে কথাবার্তা শুরু করলেন। আর কথা যত এগোল আপনি দেখলেন আপনার সব পার্সোনাল ইনফরমেশন ফোনের ওপারে থাকা লোকটির জানা। ফোন কলের পর শুরু ভিডিয়ো কল। ভিডিয়ো কলে আসার পর আপনার মনে হবে, আপনি সরকারি দফতরে বসে থাকা আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলছেন। কথাবার্তা যখন শেষ হবে, তার কিছুক্ষণ পরে
বুঝতে পারবেন, আপনি ডিজিটাল প্রতারণার শিকার। আপনার ওপর চাপ দিয়ে টাকা আদায় করে সরে পড়েছে প্রতারকরা।
দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চাপের মুখে টাকা দিয়ে দিচ্ছেন। গত কয়েকমাসে এভাবে কয়েকশো কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ প্রতারণার কবলে পড়েছেন। এই সব ডিজিটাল প্রতারকরা পুলিশ ও অভিবাসন দফতরের নামে ডোমেন তৈরি করে ফেলেছে। এবং সেই ডোমেন থেকে আপনাকে ই-মেলে হাজিরার নোটিশ পাঠাচ্ছে। ব্যাঙ্কের নথিও জমা দিতে বলছে। এ ছাড়া, আপনার আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট আগে থেকেই তাদের হাতে রয়েছে। সেই সব নথি ব্যবহার করে আরও অনেক রকম জালিয়াতি চলছে। একে বলা হচ্ছে ডিজিটাল গ্রেফতারি। গত রবিবার এই ডিজিটাল গ্রেফতারি নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তামিলনাড়ুর আইপিএস অফিসার ভিসি সজ্জনার এমনই ডিজিটাল প্রতারণার একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছিলেন। ‘মন কি বাত’-এ সেই ভিডিয়ো দেখিয়েই দেশবাসীকে সচেতন হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন যে ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না। কোনও এজেন্সি কাউকে ফোনে এইভাবে হুমকিও দেয় না। প্রধানমন্ত্রীর আবেদন এধরনের ঘটনা ঘটলে সবাই যেন সাইবার হেল্পলাইন ১৯৩০ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। সঙ্গে ফোনকল রেকর্ড করারও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তেমনই এক ভুক্তভোগীর থেকে জানা গিয়েছে, ‘দিল্লি পুলিশ নাকি তাঁর স্বামীর খোঁজে বাড়িতে আসছে’ বলে ফোন করা হয়েছিল। তাঁকে বলা হয়, তাঁর ফোনেও নাকি নজরদারি চলছে। আর তিনি যেন তাঁর স্বামীকে ফোন করার চেষ্টা না করেন। তাঁর বিরুদ্ধেও নাকি নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলছেন, তাঁর স্বামীর ও তাঁর বিপদের কথা শুনে সব গুলিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। জালিয়াতদের প্রচুর তথ্যও তিনি দিয়ে দেন। আমরা অনেকেই কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে একই ভুল করতে পারি। তাই সবসময় এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন।