Coromandel Express Accident: প্রথমবার ট্রেনে, প্রথমবারই দুর্ঘটনা!

পূর্ব প্রামানিক একজন ফার্নিচার মিস্ত্রি। অপূর্ব জানান, দুটি পুত্র সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার। তবে সেই সংসারে অভাব অনটন আর অন্যদিকে গ্রামবাংলায় সেরকম কাজ না থাকায় তিনি চেন্নাইয়ে ফার্নিচারের কাজের জন্য যাচ্ছিলেন আরো তার চারজন পরিচিত ব্যক্তির সাথে।

Coromandel Express Accident: প্রথমবার ট্রেনে, প্রথমবারই দুর্ঘটনা!
| Edited By: | Updated on: Jun 09, 2023 | 12:02 AM

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় পড়শী রাজ্য উড়িষ্যা বালেশ্বরের ভয়াবহ ও মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদে কাঞ্চনপুর জলপাই গ্রামের অপূর্ব প্রামাণিককে। অপূর্ব প্রামানিক একজন ফার্নিচার মিস্ত্রি। অপূর্ব জানান, দুটি পুত্র সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার। তবে সেই সংসারে অভাব অনটন আর অন্যদিকে গ্রামবাংলায় সেরকম কাজ না থাকায় তিনি চেন্নাইয়ে ফার্নিচারের কাজের জন্য যাচ্ছিলেন আরো তার চারজন পরিচিত ব্যক্তির সাথে। চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য করমন্ডল এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন। অপূর্ব জীবনে করমন্ডলই ছিল তাঁর প্রথম রেলে চড়া। তবে সংসারে অভাব অনটনের জন্য ভিন রাজ্য অর্থাৎ চেন্নাইয়ে ফার্নিচারের কাজে যে তিনি যাচ্ছিলেন সেই কথা স্ত্রীকে আগে থেকে বলেননি তিনি। তিনি বাড়ি থেকে বলে বেরিয়ে ছিলেন কলকাতা যাচ্ছি কাজের খোঁজে। তিনি ভেবে রেখেছিলেন চেন্নাইয়ে পৌঁছে সবটা স্ত্রীকে বুঝিয়ে বলে শান্তনা দেবে। এরপর হাওড়া স্টেশন থেকে যখন করমন্ডল এক্সপ্রেস টি ছাড়ে তখন জানালার দু দিক দিয়ে ছুটে যাওয়া প্রাকৃতিক দৃশ্য অনুভব করতে করতে প্রথম জীবনের রেলে চাপার অনুভূতিটা অনুভব করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিল উড়িষ্যার বালেশ্বরের দিকে।কারন তিনি এর আগে কোনদিন যে রেলেই চাপেননি। তবে জীবনে প্রথম রেলে চেপেই ভয়ংকর দুর্ঘটনার সাক্ষী হলেন তিনিও। তিনি আরোও জানান এক ঝাঁকুনি আর সেই ঝাকুনিতেই যেন সব লন্ডভন্ড হয়ে শেষ হয়ে গেল। রেলের পুরো কামরাটি একেবারে কাত হয়ে শুয়ে পড়ল আমার শরীরের উপর বেশ কয়েকজন ছিটকে এসে পড়ে। এবং কানে ভেসে আসে হাহাকার শব্দ ও কান্নার রোলের শব্দ। তখনই আতঙ্কের মধ্যে ভাবি যে ভয়ংকর দুর্ঘটনার কবলে পড়েছি । কোন রকম রেলের ওই কামরা থেকে কাতরাতে কাতরাতে ভাঙ্গা জানালা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম । এরপর দেখি যে কারো হাত কাটা তো কারো গলা কাটা আবার কারো নাড়ী ভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে পেট থেকে এই ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত অবস্থা দেখে নিজেই ভয়ে থমকে গেলাম। এরপর স্থানীয় মানুষজন ছুটাছুটি করে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগায় আমাকে একটি জলের বোতল দেয় স্থানীয় মানুষজন আমাকেও নিয়ে যায় সেখানে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে সেখানে চিকিৎসা করানোর পর বাড়ি ফিরে স্থানীয় মহিষাদল হাসপাতাল এবং এরপর তমলুকের জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয় চিকিৎসার জন্য।সেই ভয়ঙ্কর ও অভিশপ্ত প্রথম রেল যাত্রা কথা মনে করলেই আঁতকে উঠতে হয় । জানা নেই অপূর্ব প্রামানিকের এই রেল গাড়ির সফর শেষ কি না! না আগামী দিনে এই দুঃস্বপ্নের কথা ভুলে পেটের টানে আবার বেরিয়ে পড়েন কি না সেটাই দেখার বিষয়।

Follow Us: