Loksabha Election 2024: দুনিয়ার সবচেয়ে দামী নির্বাচন, কত খরচ ভোটের বিরিয়ানিতে?

বিরিয়ানির প্যাকেট ১০ কোটি। ৩৫ কোটি নামী ব্র্যান্ডের জলের বোতল। হাজার কোটি টাকার ফুল। সফট ড্রিঙ্কস আর হার্ড ড্রিঙ্কস মিলিয়ে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা। সঙ্গে নতুন জামাকাপড়। মাইক। গানবাজনা-ডিজে। বাস-গাড়ি। লিস্ট লম্বা। এবারের লোকসভা ভোটে সম্ভাব্য খরচের বহরটা একটু ঝালিয়ে নিচ্ছিলাম। সবমিলিয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা।

Loksabha Election 2024: দুনিয়ার সবচেয়ে দামী নির্বাচন, কত খরচ ভোটের বিরিয়ানিতে?
| Edited By: | Updated on: Apr 20, 2024 | 11:30 PM

ইরানের ইসফাহান শহরে হামলার পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ল। এখনও পর্যন্ত দু-দেশ সংযত রয়েছে বটে। তবে ঘটনার মোড় দ্রুত ঘুরতে পারে। ঘটনাচক্রে কি সেটাই ঘটছে? আমি তিনটে রিসেন্ট ডেভেলপমেন্ট দিয়ে শুরু করছি। প্রথমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ বার বৈঠক করেছে ইরানের নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি গ্রুপ। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনেই-সহ ৪ জন এ গ্রুপের সদস্য। এখন তেহরানে তৃতীয় বৈঠকটি চলছে। আজ সকালে ইরানের পরমাণু সংস্থার এক আধিকারিক সরকারি টিভি চ্যানেলে বলেছেন যে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের পরমাণু নীতি পুর্নবিবেচনা করছি। ইজরায়েল বা যে কেউ আমাদের পরমাণু কেন্দ্রের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে আমরা কী করব। তা নতুন করে ভেবে দেখা দরকার। দ্বিতীয়ত ইসফাহানে শুধু ড্রোন হামলা নয়। মিসাইলও ব্যবহার হয়েছে। এবিসি নিউজের দাবি ড্রোনের পাশাপাশি অন্তত ৩টি মিসাইল ইসফাহানে আছড়ে পড়ে। আর তৃতীয়ত ইরান-ইজরায়েল দুই দেশই নিজেদের পরমাণু কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকলেও ইরানের হাতে যে পরমাণু বোমা আছে। নানা দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এব্যাপারে নিশ্চিত। ইজরায়েলের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। তাই কোট-আনকোট দুটো পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। দেখুন ইজরায়েল ও ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলি কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছে। দুটো দেশের কাছেই কিন্তু এই ব্যাপারে তথ্য আছে। শুক্রবার ইসফাহানে যে এলাকায় হামলা হয়। তার থেকে কিছুটা দূরেই ইরানের পরমাণু কেন্দ্র। সেখানে কিন্তু হামলা হয়নি। আমার মনে হয় হামলাকারী যেই হোক না কেন। সে এটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিল যে আমরা ইচ্ছে করলেই তোমার পরমাণু কেন্দ্রেও হামলা চালাতে পারি। আমার মতে ইরান এই বার্তাটা বুঝেছে। আর বুঝেই বলেই মুখ খুলেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আবদুল্লারাইন। তাঁর হুমকি শুক্রবারের হামলা কারা চালিয়েছে তা স্পষ্ট। আমরাও স্পষ্ট করে দিচ্ছি যে ইজরায়েল হঠকারিতা করলে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেই তার জবাব দেব। সেটা যতই বিপজ্জনক হোক না কেন। অবস্থা কতটা জটিল, বুঝতেই পারছেন। এই পরিস্থিতিতে আজ ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন দিল্লিতে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত এরাজ এলাহি। তিনি বলেছেন সঙ্কট কাটাতে ভারতকে দরকার। ভারতই বরফ গলানোর কাজটা করতে পারে। ইরানি রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য, ইরান এবং ইজরায়েল। দু-দেশের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা তো বেশি নয়। সেই কারণেই ভারতকে এখন আরও বেশি করে দরকার। বিদেশমন্ত্রক এখনও এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু আমরা যদি মাসদুয়েক আগে ফিরে যাই। তাহলে দেখব হঠাত্‍ করেই ঝটিকা সফরে তেহরানে চলে গিয়েছিলেন এস জয়শঙ্কর। রেড সি-তে তখন রোজ পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে হুথি জঙ্গিরা। যে হুথিদের পিছনে ইরানের মদত রয়েছে বলে নিশ্চিত আন্তর্জাতিক দুনিয়া। সেই সফরে চাবাহার বন্দর চুক্তি ছাড়াও আরও একটা বিষয় বোধহয় নিশ্চিত করেছিলেন জয়শঙ্কর। ঠিক কী করেছিলেন, সেটা আমার জানা নেই। তবে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর ইরান সফরের পর আর একটাও ভারতীয় জাহাজের উপর হামলা হয়নি। এই কারণেই বোধহয় ইরানের রাষ্ট্রদূত দিল্লির হস্তক্ষেপের কথা বললেন।

বাঙালিকে কি এবার গরমে একটু ঠাণ্ডা পেতে যেতে হবে মরুদেশে। হেঁয়ালির মতো শোনাচ্ছে তো। হেঁয়ালি নয়। টেম্পারেচার চার্ট। পয়লা বৈশাখ কলকাতা-সহ আমাদের রাজ্যের নানা শহরের তাপমাত্রা রাজস্থানের চুরু-জয়শলমের। কিংবা প্রবল গরমের দিল্লি-গুরুগ্রামের তুলনায় প্রায় ৮-১০ ডিগ্রি বেশি ছিল। ৭ দিন পরেও খুব একটা হেরফের হয়নি। এখন বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি। কলকাতার কাছেই ব্যারাকপুরেও ৪১ ডিগ্রির ওপরে পারদ। দমদমে তাপমাত্রা ৪১.৫ ডিগ্রি। আলিপুরে ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মরুশহর জয়সলমেরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজস্থানের চুরু এমন একটা জায়গা। যেখানে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছনোর নজির রয়েছে। সেই চুরুতে এখন তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি। মৌসম ভবন জানায় যে ইরানের ওপর একটা ঝঞ্ঝা থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানে নিম্নচাপ তৈরি হয়। অল্প বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশ। তাতেই তাপমাত্রা যায় কমে। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে। তবে একটা কথা সত্যি। আমাদের গোটা দেশটাই গরমে পুড়ছে। সারা মরসুমের হিসাবে কী দিল্লি। কী কলকাতা। কী জয়সলমের। সবই এক সরলরেখায় দাঁড়িয়ে। আমাদের রাজ্যের কথা যদি বলি। দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা আরও ১-৩ ডিগ্রি বাড়ার আশঙ্কা। অন্তত মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রয়েছে। আগামী ৫ দিন কলকাতার জন্যও একই সতর্কতার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আর যা সবচেয়ে চিন্তার কথা। তা হল দিনকয়েকে এই পরিস্থিতি বদলাবে না। মৌসম ভবন বলছে পুড়তে হবে সেই জুন পর্যন্ত। গতবছর ছিল রেকর্ড গরম। সেই রেকর্ড এবার ভেঙে যাবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও জম্মু-কাশ্মীর ছাড়া দেশের সর্বত্রই তাপমাত্রা আগামী দেড় মাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহ শব্দটার নানারকম ডেফিনেশন আছে। একটা ডেফিনেশন হল সমতলে ৪০ ডিগ্রির বেশি। আর পাহাড়ি এলাকায় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি হলে তাপপ্রবাহ চলছে বলে ধরা হয়। দেশে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত গড়ে ৮ দিন তাপপ্রবাহ চলে। সেটা এবার বেড়ে ২০ দিন হতে পারে বলে পূর্বাভাস। রাষ্ট্রপুঞ্জের World Meteorological Organisation বলছে শুধু ভারত বা এশিয়া নয়। এবছর উত্তর গোলার্ধে প্রায় সর্বত্রই গরম আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে। আর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি আমাদের দেশ নিয়ে কী বলছে শুনুন। বলছে ভারতের ৯০ শতাংশ জমি তীব্র গরমের প্রোকোপে। ৮০ শতাংশ মানুষ গরমে ক্ষতিগ্রস্ত। গত ২০ বছরে এ দেশে গরমের কারণে প্রায় ২৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গরম শুধু জনস্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব ফেলছে না। এর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতেও। চাষে উত্‍পাদন কমে যাচ্ছে। মানুষের কাজের ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে প্রায় ১৫ শতাংশ। যার জেরে প্রায় ৫ শতাংশ কমে যাচ্ছে জিডিপি।

এই যে এতক্ষণ অতি-গরমের কথা শুনলেন। এর উল্টোটাই হল অতিবৃষ্টি। বন্যা। বিপদ দুটোরই সমান। গত বৃহস্পতিবার আমি আপনাদের জলে ডোবা দুবাইয়ের ছবি দেখিয়েছিলাম। মরুভূমির দেশ কিনা ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বৃষ্টি বন্ধ হলেও দুবাই এখনও জল থইথই। বিমান চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে আবুধাবির ভারতীয় দূতাবাস বলেছে খুব জরুরি দরকার না হলে ভারতীয়রা কেউ এখন দুবাই আসবেন না। বেড়াতে যাওয়ার তো প্রশ্নই নেই। যাঁরা দুবাই আসার প্ল্যান করেছিলেন তাঁরা সফর পিছিয়ে দিন। এমনকি দুবাই বিমানবন্দর হয়ে যাঁদের অন্য কোনও দেশে যাওয়ার কথা। তাঁদেরও ট্রানজিট রুট চেঞ্জ করার পরামর্শ দিয়েছে আবুধাবির ভারতীয় দূতাবাস। জল কবে নামবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। দুবাইয়ে এতোটা বৃষ্টির কারণ কী। আমি আপনাদের বলেছিলাম নেটিজেনদের অনেকে বলছেন ক্লাউড সিডিং। দুবাইয়ে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়। মেঘের মধ্যে গিয়ে বিমান-কপ্টার থেকে ছড়ানো হয় সিলভার আয়োডাইডের মতো কিছু জিনিস। তাতে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি নামে। অনেকে বলছেন যে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করতে গিয়েই নাকি বন্যা ডেকে এনেছে আমিরশাহি। তবে এই সম্ভাবনার কথা একযোগে দুনিয়ার সব বিজ্ঞানী-গবেষকরা খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁরা সকলেই বলছেন অতিবৃষ্টির জন্য দায়ী গ্লোবাল ওয়ার্মিং। বিশ্বে সর্বত্রই এখন এটা দেখা যাচ্ছে। দুবাইয়েও সেটাই ঘটেছে। তাঁদের মতে ক্লাউড সিডিংয়ে অল্প বৃষ্টি হতে পারে। বানভাসি পরিস্থিতি কখনই হতে পারে না। যা হয়েছে সেসবই আবহাওয়া পরিবর্তনের কুফল। ব্যাপারটা সহজ। বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। ফসিল ফুয়েল পোড়াতে পোড়াতে আমরা পৃথিবীটাকে ক্রমশ গরম করে তুলছি। তাপমাত্রা বাড়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও বাড়ছে। এই বাড়তি জলীয় বাষ্প তৈরি করছে অতিকায় জলভরা মেঘ। একসময়ে সেটা অতিবৃষ্টি হয়ে নেমে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন গরমের জন্য আরব সাগর ও পারস্য উপসাগরে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প তৈরি হয়। সেসবই বাতাসে ভাসতে
ভাসতে দুবাইয়ের আকাশে গিয়ে জমা হয়। তারপর মেঘ ভেঙে নেমে আসে মুষলধারে বৃষ্টি। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য খরা। শস্যহানি। আবার গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্যই বন্যা। তাতেও চাষ নষ্ট। এছাড়া আমাদের জীবনে খরা-বন্যার হাজারো খারাপ প্রভাব তো আছেই। ফলে আমরা যদি সতর্ক না হই। তাহলে পুড়ে যাওয়া আর ভেসে যাওয়াই এ সভ্যতার ভবিতব্য।

বিরিয়ানির প্যাকেট ১০ কোটি। ৩৫ কোটি নামী ব্র্যান্ডের জলের বোতল। হাজার কোটি টাকার ফুল। সফট ড্রিঙ্কস আর হার্ড ড্রিঙ্কস মিলিয়ে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা। সঙ্গে নতুন জামাকাপড়। মাইক। গানবাজনা-ডিজে। বাস-গাড়ি। লিস্ট লম্বা। আমি কোনও কাল্পনিক বিয়েবাড়ির খরচ-খরচার হিসেব করতে বসিনি। এবারের লোকসভা ভোটে সম্ভাব্য খরচের বহরটা একটু ঝালিয়ে নিচ্ছিলাম। সবমিলিয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা। দুনিয়ার সবচেয়ে দামী নির্বাচন। যার খরচ আমেরিকা-ব্রিটেনে ভোটের খরচের চেয়েও বেশি। মজার কথা হল এই ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটির মধ্যে মাত্র ২৫ হাজার কোটি টাকা ভোট ব্যবস্থাপনায় কমিশনের মাধ্যমে খরচ হচ্ছে। ভোটের পরিকাঠামো। ভোটকর্মীদের যাতায়াত। ভাতা-নিরাপত্তা। এসব কাজে যে খরচ করতে হয় কমিশনকে। আর বাকিটা মানে প্রচার ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পিছনে খরচের পরিমাণ কমপক্ষে ৯০ হাজার কোটি টাকা। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। ৯০ হাজার কোটি টাকা। আর এই খাতে সবার আগে বিরিয়ানি। তারপর ফুল। উপহার সামগ্রী। ড্রিঙ্কস। গাড়ি-বাস-বিমানে যাতায়াতের খরচ। কমিশন জানিয়েছে ভোট ঘোষণার পর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশ জুড়ে সাড়ে ৪ হাজার কোটি হিসাব বহির্ভূত টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সঙ্গে আছে মাদকদ্রব্য। সিগারেট। সানগ্লাস। মোবাইল। কমিশন সূত্রে খবর ভোটারদের প্রভাবিত করতে এসব টোপ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। একটা ছোট্ট তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতেই হচ্ছে। ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন। এর মধ্যে ৭ দফায় ভোটে কত প্যাকেট বিরিয়ানির অর্ডার হতে পারে বলে আপনার ধারণা? একটা অনলাইন অর্ডার সংস্থার তথ্য বলছে যে সংখ্যাটা ১০০ কোটি প্যাকেট ছাড়িয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কয়েক হাজার কোটির বিরিয়ানির বিলই মেটাতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। বিরিয়ানি ছেড়ে এবার সভা-সমিতির কথায় আসি। ১৫ হাজার মানুষের জমায়েতের একটি সভার খরচ ১০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। হাতে নেওয়া যায় এমন একটা ফ্ল্যাগের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। একটা ব্যাজ ১৫ থেকে ২৫ টাকা। ছোট-বড় ফ্লেক্স লাগাতে খরচ ১০ হাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা। মঞ্চ বাঁধা। মাইক-ফ্যানের ব্যবস্থা। এসবের জন্যও কয়েক লক্ষ লাগবেই। বড় সভার খরচ ১০ থেকে ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে এসবের একটা ভাল দিকও আছে। ভোটের মরশুমে বহু মানুষের রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা হচ্ছে। একটি প্রথম সারির হিউম্যান স্টাফিং সংস্থার সমীক্ষায় দাবি, ভোটের মরশুমে ১ কোটি ২৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কমবেশি ২৫ হাজার ছোট-বড় সংস্থা বরাত পেয়েছে। এই সংস্থাগুলো গোটা দেশে ছড়িয়ে। যেমন গুজরাতের কথাই ধরুন। সারা দেশে যে কোনও রাজনৈতিক দলের ফ্ল্যাগের বড় অংশ গুজরাত থেকেই আসে। বাংলার বেশ কয়েকটি সংস্থা বিভিন্ন রাজ্যে ফ্লেক্স ও ফেস্টুন সরবরাহ করে। সব মিলেঝুলে এটাই ভোটের অর্থনীতি। এনিয়ে রিসার্চ করতে গিয়ে আমার একটা কথা মনে হল। আরে এটাই তো হতে পারে ভোকাল ফর লোকালের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ভোটকে ঘিরে এই বিপুল ব্যবসায় প্রতিটা পণ্য ভারতেই তৈরি হচ্ছে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে কোন দল সভা-সমিতি বাবদ কত খরচ করেছিল? বিজেপি ৫৫০ কোটি ও কংগ্রেস ৩০০ কোটি টাকা। এটা নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হিসাব। আসল অঙ্কটা এর চেয়ে বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। তবে বড় কথা হল এই টাকার বড় অংশ দিয়ে ছোট-বড় নানা সংস্থা থেকে কেনাকাটা করা হয়েছে। এবারও সেটাই হচ্ছে। এভাবেই ভোটের হাত ধরে অক্সিজেন পায় অর্থনীতি। টাকার জোর। নানারকম আর্থিক সমীকরণ যে আজ ভোটে একটা বড় ফ্যাক্টর। এনিয়ে সন্দেহ নেই। তেমনই স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পরেও জাতপাতের সমীকরণকে বাদ দিয়ে ভোটের কথা ভাবা কঠিন। হিন্দি হার্টল্যান্ডে জাতপাতের নামে ভোটের কথা উঠলে বিহারের নামই সবার প্রথমে মনে আসে। বিহার কি তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারল। নাকি অবস্থা সেই আগের মতোই।

Follow Us: