এপ্রিল জুড়ে তাপপ্রবাহ রাজ্যে, দুবাই-রাজস্থানকেও হার মানিয়েছে বাংলা

এপ্রিল জুড়ে তাপপ্রবাহ রাজ্যে। দুবাই-রাজস্থানকেও হার মানিয়েছে বাংলা। বৈশাখ মাসে গায়েব কালবৈশাখী। কেন এই পরিণতি পশ্চিমবঙ্গের? সবুজ ধ্বংসের মাসুল গুনছে রাজ্য?

এপ্রিল জুড়ে তাপপ্রবাহ রাজ্যে, দুবাই-রাজস্থানকেও হার মানিয়েছে বাংলা
| Edited By: | Updated on: May 05, 2024 | 10:47 PM

আজ বলার পালা বাংলা জুড়ে হিট ওয়েভের কথা। যা আমরা দেখলাম গোটা এপ্রিল জুড়ে। নাজেহাল গোটা বাংলার মানুষ। দিকে দিকে হিট স্ট্রোক। সকাল আটটা দেখলে মনে হচ্ছে দুপুর বারোটা। সকাল বেলা বাড়ির থেকে বের হতেই ঘেমে নিয়ে একসা। গরম কমার লক্ষণ দেখা যায়নি গোটা এপ্রিল জুড়ে। দেখা দেয়নি কালবৈশাখীও। দিকে দিকে শুধু লু বইছে। কেন বলুন তো হল এই দশা? দক্ষিণবঙ্গ তো বটেই হিট ওয়েভ কীভাবে পৌঁছে গেল উত্তর দিনাজপুরে? কেন সহ্যের বাইরে হয়ে গেল গরম? বছর বছর কি আরও বাড়বে? আমরাই কি ডেকে আনলাম সর্বনাশ? বাঁচার উপায় কী?

আজকের রয়েছে চারটি পর্ব। চুল্লির নাম বাংলা, বৃষ্টিতে বাধা, অশনি সঙ্কেত, উন্নতি বনাম প্রকৃতি।

চুল্লির নাম বাংলা

৪৭ ডিগ্রি পার করেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সেনা শহর কলাইকুণ্ডা। কলকাতার তাপমাত্রা উঠেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দায়ী কি শুধুই প্রকৃতি? নাকি এই হিটওয়েভ ম্যানমেড? গরমের চক্রব্যূহ কি আমরাই তৈরি করছি না? আরবান হিট আইল্যান্ডে পরিণত হয়েছে কলকাতা। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক, সাও পাওলো বা সিডনির থেকেও কলকাতার গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বেশি। এই শহরগুলোর তাপমাত্রা বেড়েছে ০. ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৫০ থেকে ২০১৮-র মধ্যে কলকাতার তাপমাত্রা বেড়েছে ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বীরভূম আর পুরুলিয়ার থেকেও কলকাতার রাতের তাপমাত্রা বেশি! অপরিকল্পিত নগরায়নের ঠেলায় সব বড় এবং ছোট শহর কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। একদিকে গরমে জলের অভাব আর অন্যকে গোটা চৈত্র আর বৈশাখে দেখা দেয়নি কালবৈশাখী। বৃষ্টির মুখ দেখেনি রাজ্যবাসী। গত বছর একই ছবি দেখেছে বেঙ্গালুরু। ৫০০ মিলিয়ন লিটার জলের অভাব এবছর বেঙ্গালুরুতে। আর এই সমস্যা শুধু বেঙ্গালুরুতেই সীমাবদ্ধ নয়। জলের আকাল তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্রতেও। আর সেই পথেই এগোচ্ছে আমাদের রাজ্য?

বৃষ্টিতে বাধা

এপ্রিলে একটা করে দিন গেছে আর রেকর্ড ভেঙেছে তাপমাত্রার। এই শহরে, এই বাংলায়। ৭০ বছরের রেকর্ড ভেঙে চুরমার। রাস্তায়, ছাদে ডিম রাখলে যেন অমলেট হয়ে যাবে! কিন্তু গোটা এপ্রিল জুড়ে কেন গায়েব রইলো কালবৈশাখী? ছোটবেলায় আমরা বিজ্ঞান বইতে পড়েছিলাম গরমে জলীয় বাস্প তৈরি হলে বৃষ্টি নামে? এত গরমেও কী জলীয় বাস্প তৈরি হচ্ছে না? কেন বাংলায় কালবৈশাখীর অকাল? কেন স্বস্তি অধরা? দেখাব আজকের দ্বিতীয় পর্বে।

অশনি সঙ্কেত

২৬ মে, ২০২১। ইয়াস আছড়ে পড়লো উপকূল অঞ্চলে। আক্রান্ত সুন্দরবন সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সেদিন এলাকাছাড়া হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। এরকমই একটা মে মাসেই আছড়ে পড়েছিল আইলা, আমপান। তীব্র গরমের পর ঘূর্ণি ঝড়। কিন্তু সেদিন কলকাতা সহ দক্ষিনবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল রক্ষা পেয়েছিল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ঢালের মত দাঁড়িয়ে ছিল ঝড়ের সামনে। আজও কি একই ভাবে রক্ষা করতে পারবে ম্যানগ্রোভ? আমরা তার কি পরিণতি করছি প্রতিদিন? এপ্রিলের গরমের পর আবার একটা ঘূর্ণিঝড় এলে আমরা সামলাতে পারবো তো? সুন্দরবনের কি অবস্থা করেছি আমরা। দেখাব আজকের তৃতীয় পর্বে।

উন্নতি বনাম প্রকৃতি

ট্রাফিক কমাতে দরকার নতুন রাস্তা, দরকার নতুন মাথা গোঁজার জায়গা। বাড়ছে শহর। কত মানুষ প্রতিদিন দূরদূরান্ত, গ্রাম, অন্য জেলা থেকে আসছেন শহর বা শহরতলিতে। কিন্তু এই উন্নয়নের ঠেলায় কীভাবে নাকানি চোবানি খাচ্ছি আমরা? উন্নয়ন আর পরিবেশ কি একসঙ্গে হাতে হাত ধরে পথ হাঁটতে পারে না?

Follow Us: