Kerala CA Death: মেয়ের মৃত্যুতে চিঠি দিলেন মা, ‘কর্পোরেট চাপ’-এর এই নমুনায় চমকে যাবেন
Kerala CA Death: দেশে বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা কেমন আছেন তা জানতে হ্যাপিয়েস্ট প্লেসেস টু ওয়ার্ক নামে এক সংস্থা সম্প্রতি সমীক্ষা চালায়। অফিসে কাজের পরিবেশ। কাজের চাপ। সহকর্মীদের ব্যবহার। এরকম নানা প্যারামিটারের মাধ্যমে তারা কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদের ভাল থাকা, খারাপ থাকার বিষয়টা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
একটি মেয়ের মৃত্যু এবং তারপর তাঁর মায়ের লেখা একটা চিঠি। সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়। কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তের নির্দেশ। সবটা মিলিয়ে আমাদের দেশের বিগ কর্পোরেটের ভিতরের ছবিটা বেআব্রু হয়ে গেছে। কেরালার বাসিন্দা ২৬ বছরের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যানা সেবাস্টিয়ান। মেধাবী এই তরুণী গত মার্চে দেশের প্রথম সারির অডিট সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর পুণের অফিসে কাজে যোগ দেন। পুণে থেকেই সিএ পাস করেন তিনি। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যানা সিএ পাস করেন, গত জুলাই মাসে তাদের সমাবর্তন ছিল। সেজন্য কোচি থেকে পুণেয় মেয়ের কাছে আসেন অ্যানার মা অনিতা। ৬ই জুলাই অনিতা মেয়ের কাছে পৌঁছন। বিশে জুলাই অ্যানা মারা যান। মেয়ে মারা যাওয়ার পর মাঝের এই ১৪ দিন মেয়েকে তিনি কেমন দেখেছিলেন, সেটা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের চেয়ারম্যান রাজীব মেমানিকে চিঠি লিখে জানান অনিতা। সে চিঠিই এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল!
অনিতার অভিযোগ, বহুজাতিক সংস্থায় কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরেই অ্যানার মৃত্যু হয়। অনিতা লিখেছেন, আমার মেয়ে সকালে অফিসে বেরিয়ে যেত। ফিরত রাত একটায়। কাজের টেনশনে রাতেও ঠিকমতো ঘুমোতে পারত না। ওর খাওয়াদাওয়ার ঠিক ছিল না। বুকে ব্যথা হতে শুরু করে। আমি ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার বলেন, খাওয়া ও ঘুম, এ নিয়ে অনিয়ম করলে চলবে না। আমি মেয়েকে বলেছিলাম ক’টা দিনের জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়ে কোচির বাড়িতে ঘুরে আসতে। শুনে মেয়ে বলেছিল, এখন ছুটি পাওয়া যাবে না। চিঠিতে অনিতা অভিযোগ করেছেন, চাকরিতে যোগ দেওয়ার মাত্র চার মাসের মধ্যেই আমার মেয়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিল। অফিসই ওকে শেষ করে দিল। আর আমার মেয়ের শেষকৃত্যে ওর অফিসের তরফে একজনও কেউ আসার প্রয়োজন মনে করেননি। কন্যাহারা মায়ের চিঠি ভাইরাল হওয়ার পর আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং বিবৃতি দিয়ে অ্যানার মৃত্যুর জন্য শোকপ্রকাশ করেছে। বলেছে যে তারা অ্যানার পরিবারের পাশে আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অডিট সংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি করছেন অনেকে। শোরগোল ওঠায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। অ্যানার মৃত্যু যে কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়…
সারা দেশে বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা কেমন আছেন তা জানতে হ্যাপিয়েস্ট প্লেসেস টু ওয়ার্ক নামে এক সংস্থা সম্প্রতি সমীক্ষা চালায়। অফিসে কাজের পরিবেশ। কাজের চাপ। সহকর্মীদের ব্যবহার। এরকম নানা প্যারামিটারের মাধ্যমে তারা কর্পোরেট সংস্থার কর্মীদের ভাল থাকা, খারাপ থাকার বিষয়টা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, সারা ভারতে বিভিন্ন অফিসে কর্মরতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই অসুখী। কাজের জায়গায় অসন্তুষ্ট। আর ৫৪ শতাংশ কর্মী চাকরি ছাড়ার কথা ভাবছেন। এই হিসেবে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তেমন ফারাক নেই।