Pakistan Civil War: দেশ দেউলিয়া, বিকিয়ে গিয়েছে প্রশাসন, গৃহযুদ্ধ শুরু পাকিস্তানে?
Pakistan News: দেউলিয়া অবস্থা, আন্তর্জাতিক মহলে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে ঘোরা, নির্বাচিত সরকার সেনার পায়ে পড়ে প্রশাসন চালাচ্ছে - পাকিস্তান নিয়ে বছরভর কতকিছুই তো শোনা যায়। তবে পুলিশ ছাড়া, প্রশাসন ছাড়া কোনও দেশের কথা শোনাটা কিন্তু বিরল ব্যাপার। পাকিস্তানের এই ঘটনা সেটাও দেখিয়ে দিল।
দুটো থেকে চারটে, চারটে থেকে দশটা। বাড়তে বাড়তে এখন সংখ্যাটা কোথায় কেউ জানে না। উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে জনজাতি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। প্রথমে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি, সেখান থেকে পরিস্থিতি কার্যত পাক প্রশাসনের হাতের বাইরে যাওয়ার যোগাড়।
পাক মিডিয়ার দাবি, ওই প্রদেশে কমবেশি সবকটি জনগোষ্ঠী একে অন্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেমে পড়েছে। সবমিলিয়ে সংখ্যাটা ত্রিশের বেশি। রবিবার সকাল থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃত অন্তত ৫৬ জন। বেসরকারি মতে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৮০. হঠাত্ হঠাত্ রাস্তায় গুলি চলছে। পুলিশ চৌকিতে হামলা হচ্ছে। গুলি খাওয়ার ভয়ে থানা খালি করে পালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার রাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় পাক পুলিশের এলিট ফোর্সের হাতে।
কিন্তু এইসব শুরু হল কীভাবে?
কুররম জেলার বোহরা গ্রামে ১০ বিঘা জমি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বহুদিনের গন্ডগোল। দুটি পরিবারের ধর্ম এক। কিন্তু ধর্মবিশ্বাস আলাদা। পারিবারিক জমি বিবাদ থেকে মারামারি, একে অন্যের ঘরে আগুন লাগানো-এসবই চলছিল। একসময় দু-পক্ষই থানায় হাজির হয়। থানায় তখন তালা দিয়ে পুলিশকর্মীরা পগাড় পার। থানা চত্ত্বরেই দুপক্ষের মারামারি বাধে। সেখান থেকেই বড় এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সবমিলিয়ে প্রায় পনেরোটি এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। পুলিশ সব জেনেও ঘটনাস্থলে যায়নি। কারণ, যাওয়ার হিম্মত ছিল না। পাকিস্তানে অনেক জায়গাতেই এই মুহূর্তে পুলিশ- প্রশাসনের অস্তিত্ব নেই। বা থাকলেও সেটা খাতায়-কলমেই রয়েছে। খাইবার-পাখতুনখোয়ার বড় অংশেও বিভিন্ন জনজাতির গোষ্ঠীর নেতাদের দাপট। এরা অনেকেই তেহরিক-এ-তালিবান বা টিটিপির সমর্থক। পাক সরকার এবং পুলিশ এঁদের কাছে শক্র। পাক মিডিয়ার দাবি, খাইবার পাখতুনখোয়ায় অধিকাংশ ব্লকে পুলিশকর্মীরা ডিউটি করেন না। তাঁদের শুধু নিজেদের বেতনের একটা অংশ সেই এলাকার ওয়ারলর্ডকে দিতে হয়। ওয়ারলর্ডরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। সেই তারাই এবার নিজেদের মধ্যে জাতি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় এই অবস্থা।
পাক সংবাদপত্র ডনের দাবি, সবপক্ষই একে-৪৭ রাইফেল, রকেট, মর্টার ব্যবহার করছে। ছোট কামান চার্জ করে বাড়ি-ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দেউলিয়া অবস্থা, আন্তর্জাতিক মহলে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে ঘোরা, নির্বাচিত সরকার সেনার পায়ে পড়ে প্রশাসন চালাচ্ছে – পাকিস্তান নিয়ে বছরভর কতকিছুই তো শোনা যায়। তবে পুলিশ ছাড়া, প্রশাসন ছাড়া কোনও দেশের কথা শোনাটা কিন্তু বিরল ব্যাপার। পাকিস্তানের এই ঘটনা সেটাও দেখিয়ে দিল।