Sundarban News: দুয়ারে হাজির লক্ষ্মী
দূর্গা, কালী ও জগদ্ধাত্রী্র আরাধনার শেষে এখনো কর্মরত সুন্দরবনের লক্ষ্মী। দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে জীবন যুদ্ধের সংগ্রামের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন লক্ষ্মী দেবী। সংসারের অভাবে গ্রামের আর পাঁচটা মেয়েদের মতো ভাগ্যের দোষ না দিয়ে, জীবন যুদ্ধে স্বামীর পাশাপাশি সংসারে হাল ধরতে মাঠে নেমে পড়েছেন লক্ষ্মী নিজেই। বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের ১৪নং সান্ডেলেরবিলের বাসিন্দা লক্ষ্মী রানী গাইন।
এ যেন এক অন্যরকম কাহিনী! বেঁচে থাকার লড়াই তথা জীবন যাত্রার লড়াই। দূর্গা, কালী ও জগদ্ধাত্রী্র আরাধনার শেষে এখনো কর্মরত সুন্দরবনের লক্ষ্মী। দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে জীবন যুদ্ধের সংগ্রামের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন লক্ষ্মী দেবী। সংসারের অভাবে গ্রামের আর পাঁচটা মেয়েদের মতো ভাগ্যের দোষ না দিয়ে, জীবন যুদ্ধে স্বামীর পাশাপাশি সংসারে হাল ধরতে মাঠে নেমে পড়েছেন লক্ষ্মী নিজেই। বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের ১৪নং সান্ডেলেরবিলের বাসিন্দা লক্ষ্মী রানী গাইন। স্বামী, দুই মেয়ে এক ছেলে নিয়ে তার গোটা পৃথিবী। ওই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে গৌড়েশ্বর নদী। বাঁধ লাগোয়া মাটির দেওয়াল আর খড়ের চাল দেওয়া ঘরে সনাতন গাইন ও তাঁর পরিবার কোনও রকমে দিন কাটান।
লক্ষ্মী ছোট থেকেই সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় চোখের সামনে দেখেছেন। আর দেখেছেন সংসারের অভাব অনটন। তবে কোনও প্রতিকূলতার সঙ্গে কীভাবে লড়তে হয় তা তিনি ভালই জানেন। আর সেই শক্তিতেই দমে যাননি বরং জীবন যুদ্ধের মায়াজালে হাত শক্ত করে সংসারের হাল ধরেছেন। লক্ষ্মীর দিন শুরু হয় ভোর চারটেয়। কাক ভোরে উঠেই সংসারের কাজকর্ম সেরে সব্জি সংগ্রহ করে সেগুলিকে ভ্যান রিক্সায় ভালোভাবে সাজানো। আর তারপর পাড়ি দেন সুন্দরবনের গ্রামের উদ্দেশ্য। নিজেই পা ভ্যান চালিয়ে বেরিয়ে পড়ে গ্রামে গ্রামে। সুন্দরবনের আমবেড়িয়া, স্বরূপকাঠি, লেবুখালী, কাঠাবাড়ি ও বাঁকড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ফেরি করে সব্জি বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়েন। এলাকার মানুষ সব্জির অপেক্ষায় হাতে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কখন লক্ষ্মী আসবে।
লক্ষ্মীর ভ্রাম্যমাণ ফেরি গাড়িতে কি নেই! সব রকমের সবজি আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, ফুলকপি, ওলকপি, সিম, বিট, গাজর ও টমেটো সহ ঋতুভিত্তিক সব্জিঝ তার কাছে পাওয়া যায়। তবে সুন্দরবনের এই গৃহবধূ লক্ষ্মী রানী প্রায় ২৫ বছর ধরে পা ভ্যান চালিয়ে এলাকায় সবজি বিক্রি করে চলেছেন। এখন তার বয়স হয়েছে ৪৫। আগের মত শরীরে শক্তি নেই। পায়ের জোরে ভ্যান চালাতে অনেকটাই পরিশ্রম করতে গিয়ে ক্লান্তি চলে আসে। হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পর যখন হাত-পা গুলো আর চলতে চায় না, যন্ত্রনায় যেন অবশ হয়ে আসে। সেজন্য লক্ষীর স্বপ্ন একটি টোটো গাড়ির। কিন্তু অভাবে সংসারে টোটো কেনার সামর্থ্য নেই লক্ষ্মী দেবীর। একটি টোটোর সংস্থান হলে হয়তো এলাকায় আরো ভালোভাবে পরিষেবা দিতে পারবে সুন্দরবনের এই লক্ষ্মী।