Rashid Khan Demise: মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী রশিদ খান
পণ্ডিত ভীমসেন যোশী বলেছিলেন, "রশিদ খানের কণ্ঠ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ।" সেই কণ্ঠ থেমে গেল চির কালের জন্য। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন রশিদ খান।
চলে গেলেন রশিদ খান
পণ্ডিত ভীমসেন যোশী বলেছিলেন, “রশিদ খানের কণ্ঠ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ।” সেই কণ্ঠ থেমে গেল চির কালের জন্য। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন রশিদ খান। আজ, মঙ্গলবার, কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আক্রান্ত হয়েছিলেন ব্রেনস্ট্রোকে। ভুগছিলেন ক্যানসারেও। ভেন্টিলেশনে রাখার পর এ দিন বিকেল ৩.৪৫ নাগাদ না ফেরার দেশে চলে যান গায়ক।
রশিদের শেষকৃত্য কবে?
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী রশিদ খানের মৃত্যু সংবাদ পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে সরাসরি রশিদের দেহ পৌঁছে যাবে পিস হেভেনে। আগামীকাল, অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ৯.৩০টা নাগাদ রশিদ খানকে নিয়ে যাওয়া হবে প্রথমে রবীন্দ্রসদনে, তারপর তাঁর নাকতলার বাড়ি হয়ে টালিগঞ্জেই হবে শেষকৃত্য। গান স্যালুটে সম্মানিত হবেন শিল্পী।
স্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ
রশিদ খানের মৃত্যুর পর অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জয়িতা বসু ও পরিবারের প্রতি। রশিদের স্ত্রী জয়িতা বসু স্বামীর অসুস্থতার খবর শেয়ার করেননি, কাছের লোকের কাছেও এড়িয়ে গিয়েছেন, উঠেছে এই অভিযোগও। আর তাতেই অনেকের হাহাকার, “আগে জানলে শেষ বার অন্তত দেখতে পারতাম।”
ক্ষুব্ধ অজয় চক্রবর্তী
রশিদ খানের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। বলেছেন, “গতকাল রাতেও পরিবার থেকে জানিয়েছে রশিদ দুবাইয়ে রয়েছেন। ভাল আছেন। গান গাইছেন। এখন টিভি খুলে দেখছি তিনি প্রয়াত। এটা কী!”
পাশে ছিলেন স্ত্রী
কাউকে কিছু না জানালেও গায়কের পাশেই ছিলেন রশিদ খানের স্ত্রী। সেই কবে বিয়ে হয়েছে তাঁদের। দু’জনের বয়স তখন ওই ২০-২১। অ্যারেঞ্জড-লাভ ম্যারেজ হয়েছিল তাঁর। স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তিনি। জয়িতা বসু আজ বাক্যহারা, এ শোক সহ্য করা কি আর মুখের কথা?
কেঁদে ফেললেন তেজেন্দ্র
রশিদের দীর্ঘ দিনের সঙ্গী ছিলেন সরোদ বাদক পন্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি। তাও বললেন, “আমার কিচ্ছু বলার নেই। ভাল খারাপ-ভাল খারাপ হচ্ছিল। খবরটা ঠিক মতো আসছিলও না। চেষ্টা করছিলাম … কিন্তু পাচ্ছিলাম। ভারতবর্ষে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে রশিদের মতো গলা আর…”, ব্যস আর কথা বলতে পারলেন না, কেঁদে ফেললেন হাউহাউ করে।
‘আওগে যব তুম ও…’
প্রয়াত রশিদ খানের অন্যতম সেরা সৃষ্টি আওগে যব তুম ও…। জানেন এই গানের জন্য মোটা টাকা পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন ওস্তাদ। সঙ্গীত পরিচালক আবদার করে বলেছিলেন, “আপনি এই প্রস্তাব ফেরাতে পারবেন না, আমি আপনাকে খুব ভালবাসি, কিন্তু আমার কাছে এত টাকা নেই…।”শুনে হাসি মুখে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সৃষ্টি হয়েছিল বলিউডের এভারগ্রিন এই গান।
বাংলার প্রতি প্রেম
উত্তরপ্রদেশে জন্ম হয়েও কলকাতায় চলে এসেছিলেন অনেক ছোটবেলায়। এ শহরকে ভালবেসে আর নিজের রাজ্যে ফিরে যাননি রশিদ। মুম্বইয়ে কাজে গেলেও কলকাতায় ফিরে আসতেন বারংবার। এই শহরের বুকেই চিরনিদ্রায় অস্ত গেলেন রশিদ।
চোখে জল ভক্তদের
কী-ই বা এমন বয়স হয়েছিল তাঁর? ওই তো মাত্র ৫৫। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন আগেই। ঠিকও হয়ে গিয়েছিলেন। এভাবে যে তিনি চলে যাবেন ধারণাও করতে পারেননি ভক্তরা। তাঁদের চোখে জল। ‘সজনা’ আর আসবেন। আর গান গেয়ে বলে উঠবেন না, ‘আঙ্গনা ফুল খিলেঙ্গে’।