Shola Village: পরাগ নয়, ইনকাম দেয় শোলার ফুল
মন্দিরবাজার থানা পার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশপুর গ্রামের বিশেষত্ব শোলা। পরিবেশ বান্ধব এমন এক অলঙ্করণ যা দূষক নয়। শুধু শোলার কাজই নয়, শোলার চাষও হয় এখানে বর্ষার মরসুমে।
শহর থেকে অনেকটা দূর। মন্দিরবাজার থানা পার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশপুর গ্রাম এটা। এখানকার বিশেষত্ব শোলা। পরিবেশ বান্ধব এমন এক অলঙ্করণ যা দূষক নয়। শুধু শোলার কাজই নয়, শোলার চাষও হয় এখানে বর্ষার মরসুমে। এস্কাইনোমিনি অ্যাস্পেরা বা শোলা গাছ একটি জলজ সপুষ্পক উদ্ভিদ। উদ্ভিদটির কাণ্ডের সাদা নরম মজ্জা অংশটি ব্যবহৃত হয় শোলার কাজে। এই গ্রামে প্রতি শনিবার এই গ্রামে শোলার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের একটা হাট হয়। সেই হাটে বিকিকিনি হয়। ওঁদের তৈরি শোলার ফুল, মালা, টোপর যায় দূরে, বহু দূরে। বর্তমানে এই অঞ্চলের বহু গ্রামের মানুষজন শোলার ওপর ভর দিয়ে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন। এখানকার শিল্পীরা বলেন শোলার কাজ প্রথম শুরু হয় মহেশপুর গ্রামের মালি পাড়ায়। প্রকৃতপক্ষে এটি হালদারপাড়া, সবারই পদবী হালদার। কিন্তু যেহেতু প্রতিমার শোলার মালা, ফুল, চাঁদমালা, টোপর তৈরি করেন তাঁরা, তাঁদের ডাকনাম মালাকার বা মালি হয়ে গিয়েছে। ওঁদের তৈরি এই ফুল রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যে তো যায়ই পাড়ি দেয় ইতালি আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। উড়ে যায় মার্কিন মুলুকে। এখানে ঘরে ঘরে শোলার কাজ। শোলাই প্রাণের স্পন্দন। রবীন্দ্রনাথ হালদারের বয়স এখন উনআশি। দেশের বহু শহরে উনি গিয়েছেন মণ্ডপ সজ্জা করতে। বাড়ির দাওয়ায় বসে টোপর তৈরি করছিলেন রবীন্দ্রনাথ বাবু। শোলার তৈরি এই ময়ূর, গরু, আনারস, পায়রা আর কলাগাছ রবীন্দ্রনাথের তৈরি। ওনার গলায় আক্ষেপ মৌলিক কাজ করার লোকজন কমছে। শোলা দিয়ে তৈরি ফুলে পরাগ রেণু জাগে না হয়ত কিন্তু এই প্রান্তিক মানুষদের রুজি রুটি আর কর্মদিবস তৈরি করে এই শোলার ফুল। গ্রামকে গ্রাম যখন ন্যুনতম উপার্জনের জন্য পরিযায়ী হয়ে যায়, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে নিজের গ্রামে নিজের বাড়িতে বসে ওঁরা পারিশ্রমিক পান মাসিক ১২ হাজার টাকা। অথচ এই গ্রাম গুলি আজও রয়ে গেছে অন্তরালে। মহেশপুরের গ্রামবাসীদের অভিযোগ সামান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতেও যেতে হয় দেড় ঘণ্টা দূরের সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।