আমেরিকার বিতর্কিত 'বন্দুক নীতি'

আমেরিকার বিতর্কিত ‘বন্দুক নীতি’

TV9 Bangla Digital

| Edited By: Tapasi Dutta

Updated on: Jul 16, 2024 | 9:04 PM

ভোট প্রচারের মাঝেই ট্রাম্পের দিকে ছুটে এল গুলি। পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী প্রচার সভায় বক্তব্য রাখার সময় গুলি তাঁর কান ঘেঁষে গুলি চলে যায়। ঘটনায় জখম ট্রাম্পকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুলি চালানোর পরই আততায়ীকে পাল্টা গুলি করে খতম করে নিরপত্তারক্ষীরা। তবে তার আগেই আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয় ট্রাম্পের এক সমর্থকের।

ভোট প্রচারের মাঝেই ট্রাম্পের দিকে ছুটে এল গুলি। পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী প্রচার সভায় বক্তব্য রাখার সময় গুলি তাঁর কান ঘেঁষে গুলি চলে যায়। ঘটনায় জখম ট্রাম্পকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুলি চালানোর পরই আততায়ীকে পাল্টা গুলি করে খতম করে নিরপত্তারক্ষীরা। তবে তার আগেই আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয় ট্রাম্পের এক সমর্থকের। বাইডেনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়ে লড়াইয়ে নেমেছেন ট্রাম্প। যুযুধান শিবিরের প্রচারের পারদ অনেকদিন ধরেই চড়ছিল। যার ক্লাইম্যাক্সটা ঘটে গেল রবিবার। পেনসিলভানিয়ার বাটলারে।

ভোটপ্রচারের মঞ্চে ডোনাল্ড ট্রাম তখন বক্তব্য রাখছিলেন । হঠাৎই ছুটে আসে আততায়ীর গুলি। ভিডিওয় দেখা যায় আচমকা তাঁর কান ঘেঁষে একটি গুলি চলে যায়! সঙ্গে সঙ্গে হাত দিয়ে কান চেপে মঞ্চে বসে পড়েন ট্রাম্প। মঞ্চেই ততক্ষণে ট্রাম্পকে ঘিরে ফেলেন তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা।

ট্রাম্পের কান ও গাল বেয়ে তখন রক্ত পড়ছে। আহত ট্রাম্পকে নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। মঞ্চ থেকেই হাত মুঠো করে তুলে, সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হার না মানার ইঙ্গিত করেন ট্রাম্প। গাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ট্রাম্পকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত বলে জানানো হয়েছে।

সভামঞ্চের পাশেই একটি বাড়ির ছাদ থেকে গুলি চালিয়েছিল আততায়ী। ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া গুলিতে মৃত্যু হয় এক সমর্থকের। ঘটনার আকস্মিকতা কাটতেই আততায়ীকে গুলি করে হত্যা করে রক্ষীরা। তবে কী ভাবে মঞ্চের এত কাছে আততায়ী পৌঁছল তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেন ট্রাম্প-সমর্থকেরা

ট্রাম্পের ওপর হামলা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় মার্কিন রাজনীতিতে। দলমত নির্বিশেষে ট্রাম্পের সভায় হামলার নিন্দা করেন সকলে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকায় এই ধরনের হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এই হিংসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত এবং এর নিন্দা করা উচিত।’ যদিও এই ঘটনার পেছনে বাইডেন প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলছেন অনেকে।

 

আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই।গুলি চলেছিল এআর-স্টাইল ৫৫৬ রাইফেল থেকে। রিসেন্ট আপডেট, এক বন্দুকবাজ ট্রাম্পের দিকে বন্দুক তাক করে আছে, এমন ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সূত্রের খবর, বন্দুকটির লাইসেন্স ছিল হামলাকারীর বাবার নামে। প্রশ্ন দুটি জায়গায়। প্রথমত আমেরিকার বন্দুক নীতি। অস্ত্রের খোলা বাজার নিয়ে গত কয়েক বছর থেকেই সরগরম আমেরিকা। তাত্‍পর্যপূর্ণ বিষয়, যার ওপর হামলা হল সেই ট্রাম্প বন্দুক নীতির পক্ষে। তাঁর নীতিই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে গেল? দ্বিতীয় প্রশ্ন আমেরিকার বিশ্বখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা নিয়ে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও এবারের রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থীর ওপর হামলার ছক তৈরি হয়ে গেল, আর সেদেশের গোয়েন্দারা কিছুই জানতে পারল না!

গত কয়েক বছরে আমেরিকায় বন্দুকবাজদের হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। কখনও স্কুলে, কখনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। যতবারই হামলার ঘটনা সামনে এসেছে, ততবারই প্রশ্ন উঠেছে আমরিকার বন্দুক নীতি নিয়ে। তথ্য চলছে চলতি বছর জুন পর্যন্ত আমেরিকায় ৩০২টি বন্দুক বাজের হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে প্রায় ৩৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকার বন্দুর নীতি বারবার প্রশ্ন উঠেছে আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু তাত্‍পর্যপূর্ণ বিষয়টা অন্য। এই বন্ধুক নীতিতে লাগাম পরাতে চেয়েছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু তার বিরোধীতা করেন স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই ট্রাপকেই এবার গুলির সামনে দাঁড়াতে হল।

আমেরিকায় মেশিন গান-এর উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেমি অটোম্যাটিক রাইফেলের উপরে কোনও বিধিনিষেধ নেই। এখানেই কার্যত বোমার মত কাজ করছে বাম্প স্টক নামের একটা যন্ত্র। বাম্প স্টক সেমি অটোম্যাটিক রাইফেলে লাগিয়ে ব্যবহার করা হলে তা কার্যত মেশিন গানের মতোই দ্রুত গুলি ছুড়তে সক্ষম।

আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হামলার নেপথ্যে কী কারণ, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর। ‘অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ’-এর কারণেই হামলা, প্রাথমিক তদন্তের এমনই মনে করছে তারা। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার কোনও আগাম ইন্টেলিজেন্স কেন পাওয়া গেল না? গোয়েন্দারা কী ব্যর্থ হচ্ছেন বারবার? স্কুল-কলেজে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা হোক বা ট্রাম্পের ওপর হামলা। গোয়েন্দারা কিছুই টের পাচ্ছেন না কেন? অন্যদেশের ওফর নজর রাখতে গিয়ে কী নিজেদের ঘরের ভেতর নজর দিতে ভুলে যাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দার?