পাহাড় কী আর আমাদের বেড়াতে যাওয়ার জায়গা থাকবে না? কেন এই দশা উত্তরবঙ্গের পাহাড় বা সমতলের?
ফুঁসছে তিস্তা, চওড়া হচ্ছে দিনে দিনে। মুছে যাচ্ছে জাতীয় সড়কের চিহ্ন। ফাটল ধরছে দার্জিলিঙেও। নির্মাণের ভার সামলাতে হাঁসফাঁস পাহাড়! গঙ্গা ভাঙনে বিপর্যস্ত মালদহ। কী কারণে এই পরিণতি উত্তরবঙ্গের? গ্রাউন্ড জিরোয় TV9 বাংলা
গরমকালে এই ঠান্ডার আমেজ নিতে হাজার হাজার দক্ষিণবঙ্গবাসী পাড়ি দেন পাহাড়ে। গরমের ছুটি মানেই বাঙালির ডেস্টিনেশন পাহাড়। আর এবছর, দুমাস ধরে পুড়েছে বাংলা, দেখা যায়নি বৃষ্টির মুখ। কলাইকুণ্ডা, পানাগড়, বাঁকুড়ার তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। চড়েছে কলকাতার পারদ। গরমে এবার ‘এগিয়ে বাংলা’ বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না! তারপর যা হওয়ার তাই হয়েছে। গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। ২৬ মে, ২০২৪ আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। তারপর দক্ষিণবঙ্গে ঝড় বৃষ্টি থামলেও, থামেনি উত্তরবঙ্গে। বন্যার ছবি উত্তরবঙ্গ জুড়ে। কোথাও নদীভাঙন, কোথাও হড়পা বানে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা আবার কোথাও ধসে পড়ছে পাহাড়। কেন এই দশা উত্তরবঙ্গের পাহাড় বা সমতলের? কেন বছর বছর বাড়ছে বৃষ্টি? কেন বাড়ছে পাহাড়ে ধস? উত্তরবঙ্গ মানে… পাহাড় কী আর আমাদের বেড়াতে যাওয়ার জায়গা থাকবে না? কী হবে উত্তরবঙ্গের হাজার হাজার বাসিন্দাদের? প্রতি বছর বর্ষা আসা মানেই সিঁদুরে মেঘ দেখবেন তাঁরা? কেন প্রতি বছর বন্যার ছবি দেখছেন উত্তরবঙ্গবাসী? আমরাই কি করলাম উত্তরবঙ্গের এই হাল? তারই উত্তর খুঁজবো আজকের নিউজ সিরিজে, আজকের TV9 বাংলা নিউজ সিরিজ ‘বিপন্ন উত্তরবঙ্গ’।
তিস্তা ভাঙার বৃত্তান্ত
গতবছরের সিকিমের লেক বিপর্যয় আর অতিবৃষ্টির পরেও কি সতর্ক হলাম আমরা? একদিকে টানেলের চাপ। অন্যদিকে চওড়া হচ্ছে তিস্তা। গতবছর লেক বিপর্যয়ের পর বহু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের লকগেট ভেঙে তিস্তা দৌড়েছে। জলের সঙ্গে নেমেছে পলি। যা জমা হয়েছে রিভারবেডে। কিন্তু সেই পলি পরিষ্কার করা বা বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হল না কেন? সেই সতর্কতা নিলে কি আজ এই মারাত্মক পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো NH 10?
জোশীমঠের ছায়া
কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে জোশীমঠ। একের পর এক বাড়িতে ফাটল। চোখের সামনে তলিয়ে যেতে বসেছে সাজানো শহর। এই পরিস্থিতি দেখে দার্জিলিং নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বহু বিশেষজ্ঞ। কতটা বিপদের মুখে দার্জিলিং? কীভাবে আমরা খাল কেটে কুমীর আনলাম?
সব হারানো মালদহ
উত্তরবঙ্গে পাহাড় থেকে সমতল বিপন্ন সাধারণ মানুষ। নদীর পার ভাঙা। এ কথা তো উত্তরবঙ্গে খুব চেনা কথা। লাগাতার ভাঙছে নদীর পাড়। বছরের পর বছর ধরে। আর তাতেই নদীর তীরে একের পর এক বাড়ি ধসে তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গা গর্ভে। কোথাও আবার চাষের জমি একপলকে গঙ্গায় সমাধিস্থ হচ্ছে। আবার কোথাও বসতভিটে ভাঙনের কবলে। বর্ষাকাল আসতেই আবার সেই চেনা ছবি মালদহে। কেন প্রতিবছর দেখতে হয় এই একই ছবি মালদাবাসীকে? নদীর পার ভাঙা নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য তরজা চলে কিন্তু ফল যায়? কীভাবে বেঁচে আছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ? কারা দায়ী এই পরিস্থিতির জন্য?
প্রকৃতির প্রতিশোধ?
সিকিমে প্রবল বৃষ্টি, ধস ও ফুঁসতে থাকা তিস্তা ফের সেই বিপর্যয়ের দিনগুলি ফিরিয়ে দিচ্ছে। অক্টোবর আর জুন— তীব্রতার দিক থেকে দুটো বিপর্যয়ের মধ্যে ফারাক থাকলেও ঘটনাপরম্পরা প্রায় একই। বাংলাতেও তিস্তা, মহানন্দা আর বৃষ্টি একই লাইনে দাঁড় করিয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। বন্যা ত্রাণের লাইন। ছাদ হারিয়েছেন হাজারও মানুষ। এইরকম পরিস্থিতি হলেই বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ঢাল বানায় প্রশাসন। কিন্তু এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী কি শুধু প্রকৃতি? আমাদের অত্যাচারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেনি তো প্রকৃতির, পরিবেশের?