জিরো ডিগ্রিতে প্রতি রাতে পথে নামছেন হাজার হাজার মানুষ, পুতিনের দেশে এ কী হচ্ছে?

জিরো ডিগ্রিতে প্রতি রাতে পথে নামছেন হাজার হাজার মানুষ, পুতিনের দেশে এ কী হচ্ছে?

ঈপ্সা চ্যাটার্জী

|

Updated on: Dec 05, 2024 | 2:41 PM

Georgia Protest: ২০১৪ সালে এরকমই এক বিক্ষোভের জেরে ইউক্রেনের রুশপন্থী সরকারের পতন হয়। ফলে, অনেকেই এখন তিবলিসির রাস্তায় কিয়েভের ছায়া দেখছেন। পুলিশ বিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করায় আন্দোলনের ঝাঁঝ একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে।

পশ্চিম এশিয়া থেকে এবার যাব ইউরোপে। প্রবল ঠান্ডাতেও পরিস্থিতি সেখানে রীতিমতো গরম। রাতে তাপমাত্রা এখন প্রায় শূন্য। ঠাণ্ডাকে পাত্তা না দিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেল, রোজ পথে নামছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশের সঙ্গে চলছে খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশ-বিক্ষোভকারী মিলিয়ে আহতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। জায়গাটা তিবলিসি। সাবেক সোভিয়েত দেশ জর্জিয়ার রাজধানী। যে জর্জিয়ায় স্তালিনের জন্ম হয়েছিল, সে দেশই এখন বলছে, রাশিয়ার ছাতার তলায় আর আমরা থাকব না। আমরা ইউরোপের মূল ধারার সঙ্গে জুড়তে চাই।

অধিকাংশ সাবেক সোভিয়েত দেশে এখন দুটো ধারার রাজনৈতিক দল আছে। একটা দল হয় রুশপন্থী। তো অন্য আরেকটা বড় দল হয় রুশ-বিরোধী। সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রো-রুশ, অ্যান্টি-রুশ বিভাজন থাকে। সোভিয়েতের পতনের পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জর্জিয়ার ইউরোপ-পন্থীদের ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু, গত অক্টোবরে আচমকাই ক্ষমতায় চলে আসে রুশপন্থী জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি। বিরোধীরা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও আদালত তা খারিজ করে দেয়। ফলে, মাঠেঘাটে প্রতিবাদীদের জমায়েত একটা চলছিলই। গত সপ্তাহে সেই ক্ষোভের আগুনেই ঘি পড়ে।

জর্জিয়ার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদান করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে ঘোষণা করেন, ২০২৮ সাল পর্যন্ত এসব আলোচনা বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি ইইউ-এর কাছ থেকে তিবলিসি আর কোনও আর্থিক সাহায্য নেবে না। জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট সালোমি জোউরাবিচভিলি আবার পশ্চিমপন্থী বলে পরিচিত। বিরোধী নেতা জুরাব জাপারিজে তাঁকে পাশে নিয়ে সরকারকে তুলোধনা করতে শুরু করেন। মস্কো থেকে প্রবল চাপ আসার কারণেই সরকার সাধারণ মানুষের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছাকে বলি দিচ্ছে। এই প্রচারের ফল বিক্ষোভ।

২০১৪ সালে এরকমই এক বিক্ষোভের জেরে ইউক্রেনের রুশপন্থী সরকারের পতন হয়। ফলে, অনেকেই এখন তিবলিসির রাস্তায় কিয়েভের ছায়া দেখছেন। পুলিশ বিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করায় আন্দোলনের ঝাঁঝ একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে। রাজধানী ছাড়াও আরও প্রায় দশটা শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। একটু আগেই আপনারা শুনলেন আমেরিকা ও রাশিয়ার লড়াইয়ের মাঝে পড়ে সিরিয়া কীভাবে যুদ্ধের বোড়ে হয়ে গেছে। জর্জিয়াতেও তাই। ক্রেমলিন বলছে বাইরে থেকে আসা মদতে জর্জিয়ায় সরকার ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। আর আমেরিকা বলছে, জর্জিয়া সরকার সাধারণ মানুষের টুঁটি চেপে ধরছে।

বাল্টিক সীমান্তে ন্যাটোর প্রেজেন্স মাথায় রেখেই পুতিনকে ঘর করতে হয়। এবার ককেশাস সীমান্তেও ন্যাটো ঢুকে পড়ুক, এটা তিনি চান না। আর, আমেরিকা চায় ঠিক তার উল্টোটা। রাশিয়াকে চারপাশ থেকে ঘিরতে। এই লড়াইয়ে ইউক্রেন-জর্জিয়ার মতো দেশগুলো সত্যিই বোড়ে ছাড়া কিচ্ছু না।