India Under Sea: সমুদ্রমন্থনে ভারত, সাগরের গভীরে খনিজের খোঁজ
মাইনিং মানে খনি থেকে তেল-কয়লা-লোহা তোলা। কিন্তু সেই খনি যদি সমুদ্রের নীচে হয়। ভাবলেই কেমন যেন অসম্ভব ব্যাপার বলে মনে হয়। আপাত অসম্ভব, চূড়ান্ত কঠিন এই কাজটাই এবার শুরু করতে চলেছে ভারত।
মাইনিং মানে খনি থেকে তেল-কয়লা-লোহা তোলা। কিন্তু সেই খনি যদি সমুদ্রের নীচে হয়। ভাবলেই কেমন যেন অসম্ভব ব্যাপার বলে মনে হয়। আপাত অসম্ভব, চূড়ান্ত কঠিন এই কাজটাই এবার শুরু করতে চলেছে ভারত।
তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমের ধনুষ্কোডি থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। এর মাঝেই রয়েছে গাল্ফ অফ মান্নার। প্রবাল প্রাচীর, সমুদ্রঘোটক, সামুদ্রিক কচ্ছপ-কী নেই সেখানে। ১৯৮৯ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম মেরিন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের স্বীকৃতি পায় মান্নার উপসাগর। পক প্রণালী ও মান্নার উপসাগর সংলগ্ন সমুদ্রকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়। তবে চোরাশিকারীদের উপদ্রব কমেনি। গাল্ফ অফ মান্নারে সমুদ্রেও চলে সামুদ্রিক প্রাণীদের চোরাশিকার। আর সেই মান্নারের প্রাণী ও উদ্ভিদ বাঁচাতে এবার মেরিন এলিট ফোর্স তৈরি করল তামিলনাড়ু সরকার। দেশে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। বন দফতরের কর্মী ও স্থানীয় মত্স্যজীবীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে এই বাহিনী। প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা ও কোস্ট গার্ড। বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ করে ডুবসাঁতার ও ডুবুরির ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। তামিলনাড়ুর রামানাথপুরমে তৈরি হয়েছে মেরিন এলিট ফোর্সের অফিস। তাদেরকে দেওয়া হয়েছে গভীর সমুদ্রে চলার উপযোগী নৌকো এবং অত্যাধুনিক ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম। দেখুন আন্তর্জাতিক বাজারে বেআইনিভাবে পাচার হয়ে যাওয়া সি-হর্স কিংবা সি টার্টলের প্রচুর দাম। আবার গাল্ফ অফ মান্নার থেকে একটু দূরেই আন্তর্জাতিক জলসীমা। আরেকটু এগোলেই পালানো যায় শ্রীলঙ্কায়। ফলে জায়গাটা কার্যত সামুদ্রিক চোরাশিকারিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছিল। তামিলনাড়ু সরকারের চেষ্টায় সেসবে কিছুটা লাগাম দেওয়াও সম্ভব হয়। তবে সবটা করা যায়নি। সেটাই এবার হল।
জায়গাটার নাম এলিজাবেথ ল্যান্ড। দক্ষিণ মেরুর এই অংশে জমি পাথুরে, বরফ কম। তবে আবহাওয়া খুবই প্রতিকূল। দিনরাত প্রচন্ড ঠান্ডা হাওয়া। বিন্দুমাত্র অসতর্ক হলে এই হাওয়া প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। দেশের একাধিক গবেষণা সংস্থা ও অভিযাত্রীদের একটি টিম আগামী ৩০ মাস ধরে এখানেই গবেষণার কাজ চালাবে। ৩টি দলের ৩৫ জন করে সদস্য রোটেশনে কাজ করবেন। জ্বালানির উত্স সন্ধানের পাশাপাশি তাদের আরও একটা লক্ষ্য হল ৯০ কোটি বছর আগের এক রহস্য উদঘাটন। ৯০ কোটি বছর আগে এই ভারতীয় উপমহাদেশ আর আন্টার্কটিকা একসঙ্গেই ছিল বলে ভূ-বিজ্ঞানীদের একাংশের ধারণা। এই ধারণা কতটা ঠিক বা ভুল। তা নিয়েও গবেষণা করবেন ভারতীয় গবেষকরা। দেখুন এর আগে আন্টার্কটিকায় গবেষণা চালাতে গিয়েই হাতে আসে এক অদ্ভুত তথ্য। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেখেন যে ওখানকার পাথুরে শিলা এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের শিলার মধ্যে মিল রয়েছে। তখন থেকেই আন্টার্কটিকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে একের পর এক গবেষণা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে ভারত। কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক সূত্রে খবর এ বছরই আন্টার্কটিকায় দ্বিতীয় গবেষণা কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। মৈত্রী ওয়ানের পর মৈত্রী টু। কেন্দ্রের আশা ২০৩০ সালের শুরুতেই মৈত্রী টু তৈরি হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে দক্ষিণ মেরুতে ভারতের যে ১২টি টিম কাজ করছে। তাদের একটা কমন অ্যাজেন্ডাও রয়েছে। সেটা হল বরফে ঢাকা মহাদেশের জিও-ম্যাপিং করা। কাজটা খুবই কঠিন। কারণ দক্ষিণ মেরুর অনেক এলাকা এখনও চিহ্নিতই করা যায়নি। সেখানে পৌঁছানো তো অনেক দূরের বিষয়। তবে দেখুন একসময় যা অসম্ভব মনে হত। পরে বহুক্ষেত্রে সেসবই সম্ভব হয়েছে। এভারেস্টে ওঠা। কে-টু’র কঠিন শৃঙ্গ জয়। মেরু অভিযান। তালিকাটা নেহাত্ ছোট নয়। উদাহরণ হিসাবে আপনাদের পয়েন্ট নিমোর কথা বলতে পারি। দুনিয়ার সবচেয়ে রিমোট এরিয়া। বহুবারের ব্যর্থতার পর সম্প্রতি সেখানে পৌঁছলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী ক্রিস ব্রাউন।