WB By-Poll 2021: ‘ওদের’ হাত থেকে নিস্তার নেই, দিনহাটায় প্রচারে নামলেই ‘অসভ্যতামির’ শিকার বিজেপি!
Dinhata: মঙ্গলবার প্রথম নয়, সোমবারও প্রচারে বেরিয়ে বাধার সম্মুখীন হন অশোক। যেখানেই অশোক মণ্ডল যাচ্ছিলেন, সেখানেই পিছু পিছু তৃণমূলের লোকজন গিয়ে হাজির হচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
কোচবিহার: বঙ্গে উপনির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। ফের প্রচারে বেরিয়ে বিক্ষোভের মুখে দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) অশোক মণ্ডল। এদিন, প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। মঙ্গলবার নয়ারহাটে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ধরে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। ঘটনায়, অভিযোগ তৃণমূলের দিকে।
পদ্ম শিবিরের অভিযোগ, মঙ্গলবার যখন অশোক মণ্ডল প্রচারে গেলে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কোনওরকমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন অশোক (Ashok Mondal)। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। এমনকী, প্রচারের মধ্যে ‘গো ব্যাক স্লোগান’ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
তবে, মঙ্গলবার প্রথম নয়, সোমবারও প্রচারে বেরিয়ে বাধার সম্মুখীন হন অশোক। যেখানেই অশোক মণ্ডল যাচ্ছিলেন, সেখানেই পিছু পিছু তৃণমূলের লোকজন গিয়ে হাজির হচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এক জায়গায় প্রার্থী অশোক মণ্ডল ও বিধায়ক মিহির গোস্বামী হেনস্তারও অভিযোগ ওঠে। ধাক্কাধাক্কি করার অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতারা। স্বভাবতই দিনহাটার উপনির্বাচনের প্রচার ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। যদিও বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে দলীয় কর্মীর সংখ্যা শাসকদলের কর্মীর সংখ্যায় কম থাকায় বিজেপির লোকজন কোনও প্রতিবাদ ঝামেলায় জড়াননি।
এ প্রসঙ্গে নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনও নির্বাচনে এ ধরনের অসভ্যতা, অশালীনতা এবং সন্ত্রাস আমি দেখিনি। আমরা যে বাড়িতে বসেছিলাম, তার ভিতরে ঢুকেও আক্রমণ চালিয়েছে। আমার সঙ্গে মাত্র ১০-১২ জন ছিলেন। সেখানে ঢুকে ভাঙচুর করেছে। আমি প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারে গেলে আমাদের ঘিরে ধরে। আমাকে এবং প্রার্থীকে শারীরিক হেনস্তা করা হয়েছে। আমার সঙ্গে আরও চার পাঁচজন যে ছিলেন তাঁদেরও হেনস্তা করেছে। এরকম অসভ্যতা আগে দেখিনি।”
যদিও দিনহাটা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ বলেন, “কে গিয়েছে, কে কাকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এসব অভিযোগ পায়ের তলায় মাটি না থাকলে হয়। যখন বুঝতে পারছে মানুষ পাশ থেকে সরে গিয়েছে, তখন এই সমস্ত অভিযোগ করে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে। আর কারও হাতে তৃণমূলের পতাকা রয়েছে মানেই তিনি তৃণমূলের কর্মী এর তো কোনও মানে নেই। দিনহাটায় হাজার হাজার তৃণমূলের পতাকা রয়েছে। যে কেউ তা হাতে নিয়ে ছবি তুলতে পারে।”
এর আগে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অশোক মণ্ডল। সেদিন দিনহাটার সদর দফতরে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা, বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তাঁদের সামনেই বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, দিনহাটায় এই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়েই তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ অথবা তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। সম্প্রতি, দিনহাটায় রাজনীতি করলে উদয়ন গুহকে বাদ দিয়ে বা অমান্য করে রাজনীতি করা যাবে না এমন হুমকিই পরোক্ষে জারি করেছিল তৃণমূল। উদয়ন গুহকে ঘিরে বিতর্কও কোনও নতুন ঘটনা নয়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাদের কথা রাজনৈতিক মহলে অবগত। একাধিকবার, সেই বিরোধ রাজ্য নেতৃত্ব চেয়েও থামাতে পারেনি। সম্প্রতি, দলের একাংশের বিরুদ্ধেই বিক্ষুব্ধ উদয়ন স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত হলেই দল থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন উদয়ন। প্রাক্তন বিধায়কের সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চরমে ওঠে সংঘর্ষের পারদ।
আরও পড়ুন: TMC Leader Murder Case: চঞ্চল-খুনে গ্রেফতার তৃণমূল নিয়োজিত আরও ২ শার্প শ্যুটার!
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: মামলা রুজু করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের নোদাখালিতে নিহত চন্দনার বাড়িতে সিবিআই