Balurghat: ১ কিমি রাস্তা নাকখত দিয়ে তৃণমূলের কার্যালয়ে, কেন দণ্ডি কাটলেন, নিজেই বললেন সেই মহিলা

Balurghat: মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও এর তীব্র নিন্দা করেন। তীব্র নিন্দা করেছে শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্বও।

Balurghat: ১ কিমি রাস্তা নাকখত দিয়ে তৃণমূলের কার্যালয়ে, কেন দণ্ডি কাটলেন, নিজেই বললেন সেই মহিলা
এভাবেই নাকখত দিয়ে প্রায় ১ কিমি পথ গিয়েছেন তিন মহিলা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 08, 2023 | 11:37 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: বালুরঘাটের (Balurghat) ঘটনায় এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য। অভিযোগ, এলাকার কয়েকজন মহিলা বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। এরপরই শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখা যায় তাঁদের তিনজন রাস্তায় দণ্ডি কাটছেন। প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা দণ্ডি কাটার পর তৃণমূল কার্যালয়ে পৌঁছন তাঁরা। সেখানেই যোগ দেন তৃণমূলে, হাতে তুলে নেন ঘাসফুলের পতাকা। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপিতে যোগদানের জন্য এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে শাসকদলের তরফে। যদিও যাঁরা এই দণ্ডি কেটেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, ভুল করে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাই দণ্ডি কেটে ভুল সংশোধন করেছেন। তবে এই ঘটনাকে ভালভাবে নেয়নি রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বালুরঘাটে দণ্ডি বিতর্কে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা দল খতিয়ে দেখবে বলেও জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে তৃণমূলের তরফে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে এমন ঘটনার।

শুক্রবার রাতে দণ্ডি কেটে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে পৌঁছন তিন মহিলা। এরপরই তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মহিলা তৃণমূল জেলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। প্রদীপ্তা বলেন, “তপনের ১১ নম্বর গোফানগর অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে নিয়ে গিয়ে বিজেপি ভুল বুঝিয়ে পতাকা তুলে দিয়েছিল। সেই মহিলারাই ভুল বুঝতে পেরে প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য বিবেক দংশনে বালুরঘাট কোর্ট মোড় থেকে দণ্ডি কাটতে কাটতে জেলা পার্টি অফিসে এসেছেন।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, “দলীয় নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে এটা করা হয়েছে। এটা খুব অন্য়ায় হয়েছে। দেখা হচ্ছে।”

চার মহিলা মার্টিনা কিস্কু, শিউলি মার্ডি, ঠাকরণ সরেন ও মালতি মুর্মু। শুক্রবার এই চারজনের মধ্যে তিনজন বালুরঘাট শহরের কোর্ট মোড় থেকে দণ্ডি কাটতে কাটতে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে আসেন। সেখানেই তাঁরা তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁদের এমন ‘প্রায়শ্চিত্ত’ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। যদিও মার্টিনা কিস্কুর বক্তব্য, “আমরা ভুল করেছি। ভুল শোধরানোর জন্য এসেছি। কয়েকজন লোক গ্রামে এসে আমাদের জোর করে নিয়ে যায়, বিজেপির ঝান্ডা ধরায়। বাধ্য হয়ে তা হাতে তুলে নিই। কিন্তু বাড়িতে এসে সারারাত ঘুমোতে পারিনি।”

বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মাম্পি ওরাওঁ নামে এক বিজেপি কর্মী। দণ্ডি বিতর্কে মাম্পি বলেন, “আমি তৃণমূল করতাম। বিজেপিতে যোগদান করি। আমার সঙ্গে ২০০ জন গিয়েছিল। তবে যোগদানের পর কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এই তিনজন বিজেপিতে যোগ দেননি। ওরা তৃণমূলেরই।” এদিকে বিজেপির মণ্ডল সহ-সভাপতি সন্তোষ বাস্কের বক্তব্য, “এলাকায় শাসকদল জলের সমস্যা মেটাতে পারেনি। তাই দলে দলে মানুষ বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর যেটা হল আদিবাসীদের জন্য লজ্জার ঘটনা। যতজন ভারতে আদিবাসী নেতা আছেন তৃণমূলের, এটা তাঁদেরও লজ্জা।”

এই ঘটনার সমালোচনা করে শুক্রবার রাতেই টুইট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বলেন, “জোর করে বিজেপি থেকে তৃণমূলে নিয়ে গিয়েছে। আদিবাসী মহিলাদের যেভাবে অপমান করা হল, তা সম্পূর্ণ আদিবাসী সমাজের অপমান। তৃণমূল আদিবাসী বিরোধী।” রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও এর তীব্র নিন্দা করে বলেন, “বিজেপিতে গিয়েছেন, পরে দণ্ডি কেটে ফিরে এসেছেন, এটা আমি কখনওই সমর্থন করি না। কেউ ভুল করলে, প্রায়শ্চিত্ত করতে দলে ফিরে আসতে চাইলে, স্বাগত জানাব। কিন্তু ১ কিলোমিটার দণ্ডি কেটে, এটা কখনওই সমর্থন করি না।”