জলপাইগুড়ি: বৃষ্টির যেন বিরাম নেই। ক্রমাগত হয়েই চলেছে। মাঝে পুজোর কয়েকদিন বিরতি ছিল আবারও নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যার কারণে অঝোর ধারায় ঝড়ছে জল। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গে যে বন্যা দেখা দিয়েছিল,তার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি এখনও মানুষজন। এখন আবার খবরে উত্তরবঙ্গ। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে।
তবে ভোর থেকে বৃষ্টি থামলে ও ডুয়ার্সের আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। ভুটান পাহাড় লাগোয়া এলাকাগুলিতে এখনও হালকা বৃষ্টি চলছে। আকাশ কালো হয়ে রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে সকালেই যেন সন্ধ্যা নেমেছে। এতটাই অন্ধকার। তবে ফের বৃষ্টি নামলে জেলার নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হবে এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।
এদিকে, তিস্তা নদীতে আচমকাই জলস্ফীতি। যার জেরে বন্যা দুর্গত বহু মানুষ। পরিস্থিতি সরজমিন তদন্ত করতে তিস্তা নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা দল নিয়ে রাতভর ঘুরে দেখলেন পুলিশ সুপার।
জলপাইগুড়ি তিস্তা ব্রিজ সংলগ্ন বিবেকানন্দ পল্লিতে হাজার চারেক মানুষ বসবাস করে। সেই এলাকায় এখন জল ঢুকতে শুরু করেছে তিস্তার। এই খবর পেয়ে রাতেই টিম নিয়ে পৌঁছে যান পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বাঁধ মেরামতের কাজে হাত কাজে লাগায় পুলিশ। এদিন রাতে বিবেকানন্দ পল্লি এলাকায় উপস্থিত ছিলেন ডি এস পি হেডকোয়ার্টার সমীর পাল ও আই সি কোতোয়ালি অর্ঘ্য সরকার । স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবার নির্দেশ দেন তিনি।
অপরদিকে তিস্তার মৌয়ামারি চড়ে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার আটকে রয়েছে এমনটাই খবর। সেই খবর পেয়ে রাতেই সেখানে যান পুলিশবাহিনী। তাদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় তারা।
অন্যদিকে, প্রবল বৃষ্টিতে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গে। কালিম্পং পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে ধস নেমে বিপর্যস্ত হল ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়ল গার্ডওয়াল। এ ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। রাস্তায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
হাওয়া অফিস মনে করছে, বুধবারের পর থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কমতে শুরু করবে। ফলে টানা বৃষ্টি থেকে মুক্তি মিলতে পারে। তবে কোনও ভাবেই পুরোপুরি দুর্যোগ কেটে রোদ ঝলমলে আকাশ দেখা যাবে, এমন পূর্বাভাস এখনও হাওয়া অফিসের তরফে দেওয়া হয়নি। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি চলবেই।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে যে নিম্নচাপটি ছিল সেটি উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বিহারের উপর অবস্থান করছে। যার জেরে আগামী ২৪ ঘণ্টা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টিপাত চলবে। উপকূলের কাছাকাছি যে জেলাগুলি বিশেষ করে দুই ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর ও হাওড়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকেই আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে। উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাত জারি থাকবে। উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলা, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে।
আরও পড়ুন: Weather Update: ফের ধেয়ে আসছে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, সাত সকালেই সতর্ক করল আলিপুর