মেয়েকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মাজন বিক্রেতা বাবা

মুখ্যমন্ত্রীর 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্পে আবেদন করেও ফল মেলেনি। বহু ঘুরেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও জোটেনি বলে দাবি সইদুলের। আর কোনও উপায়ান্তর না দেখে মেয়েকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখলেন অসহায় বাবা।

মেয়েকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মাজন বিক্রেতা বাবা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 14, 2021 | 6:50 PM

মালদা: বহু ঘুরেও পাননি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। জটিল অসুখে ভোগা মেয়েকে বাঁচাতে তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) শরণাপন্ন হলেন পেশায় দাঁতের মাজন বিক্রেতা বাবা।

জটিল স্নায়ুরোগে ভুগে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে নাবালিকা মেয়ে। হাতে তৈরি সস্তার দাঁতের মাজন বিক্রি করে কোনওক্রমে সংসার চালান বাবা। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা সংসারের। তার ওপর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জারি হয়েছে কার্যত লকডাউন। পরিবারের জন্য এখন দু’বেলা খাওয়ার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মালদহের সইদুল ইসলামকে। অন্যদিকে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ১৫ বছরের মেয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে আবেদন করেও ফল মেলেনি। বহু ঘুরেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও জোটেনি বলে দাবি সইদুলের। আর কোনও উপায়ান্তর না দেখে মেয়েকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখলেন অসহায় বাবা।

তার বয়সী ছেলেমেয়েরা যখন পড়াশোনা, খেলাধুলা করে কাটাচ্ছে তখন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ছ’মাস ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী দশম শ্রেণির ছাত্রী সিমা পারভিন (১৬)। কোমর ও পা নিথর হয়ে পড়েছে তার। দিনের পর দিন পা দুটি রোগা, চর্মসার হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তারবাবুরা বেঙ্গালরু নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খরচ হবে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। কিন্তু কোথা থেকে আসবে এত টাকা? চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিবারের।

মালদহের হরিশচন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সালালপুর গ্রামের বাসিন্দা সিমা। বাবা সইদুল ইসলাম হাটে-বাসে-ট্রেনে দাঁতের মাজন ফেরি করে। কতই বা আয় তাতে। তার ওপর এখন রাজ্যে কার্যত লকডাউন। এই অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার অর্থ জোগাড় করতে নিরুপায় সইদুল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে কাতর আবেদন জানালেন। রোগে শয্যাশায়ী মেয়ের পাশে বসেই এই চিঠি লিখলেন তিনি।

সইদুল জানান তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। স্বামী-স্ত্রী সহ মোট চারজনের অভাবের সংসার। হাটে-হাটে দাঁতের মাজন বিক্রি করে কোনও রকমে পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেন। কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আর এতেই থমকে গিয়েছে মেয়ের চিকিৎসা। লকডাউনের কারণে প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে হাট। এখন কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: এবার হোয়াটসঅ্যাপে ‘হাই’ লিখলেই হবে ভ্যাকসিনের স্লট বুকিং

ধার দেনা করে মালদহের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে মেয়ের চিকিৎসা করালেও টাকার অভাবে থমকে গিয়েছে পরবর্তী চিকিৎসা। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে মেয়ের চিকিৎসার জন্য আবেদন করলেন সইদুল। তিনি জানান, ‘দুয়ারে সরকারে স্বাথ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত হয়নি কার্ড।’ এই অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা যদি মুখ্যমন্ত্রী করেন তার দিকে তাকিয়ে অসহায় বাবা।