Barrackpore: ব্যারাকপুরের ভাড়া বাড়ি থেকেই নারী পাচার চালাতেন বাংলাদেশের রনি! পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স পেতেও কোনও অসুবিধা হল না! কে এই ব্যক্তি
Barrackpore: বর্তমানে ইডি হেফাজতে রয়েছেন রনি। ওই মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রতিবেশী একজন নারী পাচারকারী? এটা ভেবেই আতঙ্কিত এলাকার মহিলারা।
ব্যারাকপুর: গত মঙ্গলবার ব্যারাকপুরের ভাড়াবাড়ি থেকে রনি মণ্ডলকে তুলে নিয়ে গিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বিহারের একটি মামলায় যোগ থাকায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ব্যারাকপুরে বসেই নারী পাচারের কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশি অনুপ্রেবেশের সঙ্গেও যোগ ছিল রনির! এই সব অভিযোগের মাঝেই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ব্যারাকপুর পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স ছিল তাঁর কাছে। বরাত পেয়ে কাজও করতেন তিনি। আসলে কে এই রনি?
জানা গিয়েছে, আসলে বাংলাদেশের বাসিন্দা ছিলেন রনি মণ্ডল। বছর দশেক আগে ব্যারাকপুরে যাতায়াত শুরু করেন তিনি। দিদি-জামাইবাবু এবং ভাগ্নে থাকায় ব্যারাকপুরে যাওয়া-আসা বাড়তে থাকে তাঁর। এরপর সেই পরিচিতি ভাঙিয়ে প্রথমে তৈরি করেন নিজের ভোটার কার্ড, তারপর আধার কার্ড, তারপর প্যান কার্ডও! এলাকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে বলে জানা যাচ্ছে।
এলাকায় কান পাতলে শোনা যায় তৃণমূলের মিছিল-মিটিং-এ দেখা যেত রনি মণ্ডলকে। সেই সুযোগে ব্যারাকপুর পুরসভাতেও বাড়ে যাতায়াত। তারপর কন্ট্রাক্টরি ট্রেড লাইসেন্স বের করে ফেলেন রনি। শুরু হয় ‘কন্ট্রাক্টরি’। রাস্তার প্যাচ ওয়ার্কের কাজ দিয়ে শুরু। তারপর একে একে আরও কাজ হাতে আসতে থাকে। চলতি বছরে চার ৪ লক্ষ টাকার কাজের বরাত পেয়েছিলেন রনি।
প্রশ্ন উঠছে, কী করে ট্রেড লাইসেন্স পেলেন রনি মণ্ডল? কারাই বা সাহায্য করছে তাঁকে? কীভাবে তিনি ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড পেলেন? আরও দেখা যাচ্ছে যে, এক বছরে এক লক্ষ টাকা আয়কর দিয়েছেন রনি। বছরে চার লক্ষ টাকা রোজগার করে কীভাবে এক লক্ষ টাকা ট্যাক্স দিতে হল? তাঁর একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে বলেও জানা গিয়েছে।
বর্তমানে ইডি হেফাজতে রয়েছেন রনি। ওই মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রতিবেশী একজন নারী পাচারকারী? এটা ভেবেই আতঙ্কিত এলাকার মহিলারা। বাড়িওয়ালা সঞ্জীব মণ্ডল জানিয়েছেন, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সব নথিই দিয়েছিলেন রনি, তবে সে সব নকল কি না জানা নেই তাঁর। পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস জানান, ভাড়া দেওয়ার সময় পুরসভাকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই নির্দেশিকা কেউ মানেনি। তাঁর দাবি, অনলাইনে কেউ টেন্ডার ফেললে তাঁদের কিছু করার থাকে না। আর ট্রেড লাইসেন্সের প্রমাণপত্র নকল না আসল, তা বোঝার উপায় নেই।
পুরসভার দীর্ঘদিনের কন্ট্রাক্টর পিন্টু চক্রবর্তী জানান, রনিকে তিনি চিনতেন। বাংলাদেশে যাতায়াত ছিল, সে কথাও জানতেন তিনি। তবে তাঁর হাত যে ঠিক কতদূর, তা জানা ছিল না পিন্টুর।