উত্তর ২৪ পরগনা: উপনির্বাচন মিটেছে। কিন্তু শাসক-বিরোধী তরজার শেষ এখনও হয়নি। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ বিজেপি নেতা জয় সাহার (Joy Saha)। মঙ্গলবার ছট পুজোর সামগ্রী দান করতে গিয়ে রাসখোলা ঘাটে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন তিনি ও বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা এমনটাই অভিযোগ।
পদ্ম শিবিরের অভিযোগ, এদিন সকালে পুজোর সামগ্রী দান করতে গিয়ে পুলিশ এসে জয় ও তাঁর অনুগামীদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনুমতি ছাড়া কোনওরকম জনসংযোগ করা যাবে না। পাল্টা গেরুয়া শিবিরের দাবি, অনুমতি চেয়েই জনসংযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু, পুলিশ ‘দলদাসের’ ভূমিকা নিয়েছে কার্যত। তাই প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ঘটনায় জয় সাহার মন্তব্য়, “সরকার সন্ত্রাস চালাবে বলে চুপচাপ বসে থাকব তা তো হয় না। হয়ত নির্বাচনে আমরা হেরে গিয়েছি, তার অর্থ এই নয় যে, আমরা মানুষের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখব না। আমরা জনসংযোগ করব, যেমন আজ করছি। পরেও করব। ছটপুজোর সামান্য নতুন শাড়ি আর কিছু সামগ্রী দিচ্ছিলাম তাতেও পুলিশ এসে বাধা দিয়েছে। পুলিশ তো দলদাসে পরিণত হয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।”
উপনির্বাচনেও খড়দহে দলের প্রচারে গিয়ে বাধা পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। ফের ছটপুজোর সামগ্রী দানে বাধাদানের ঘটনায় কার্যত চাপানউতের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও, তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কোভিড পরিস্থিতিতে এভাবে দানসামগ্রী বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেবেই। বিশেষ করে যদি সেই জনসংযোগের অনুমতি না নেওয়া থাকে। তবে এরসঙ্গে শাসক শিবিরের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
প্রসঙ্গত, ছটপুজো উপলক্ষ্যে দুইদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে মমতা সরকার। কলকাতায় ছটপুজো উপলক্ষে বিভিন্ন ঘাটগুলিতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয় প্রতি বছর। তবে করোনার কারণে গত বছর সে ছবিতে বদল এসেছিল। এবারও সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে ছটপুজো করা যায়, তার জন্য সোমবার কলকাতা পুরসভায় এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে একাধিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
কলকাতা পুর এলাকায় মোট ১৩৮ টি ঘাটে ছট পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি ঘাটের প্রস্তুতির দায়িত্ব কেএমডিএ-এর হাতে দেওয়া হয়েছে। চারটি জলাশয়ে উপাসনার সমস্ত ব্যবস্থাকরবে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, সমস্ত ঘাট ব্যারিকেড করবে পূর্ত দফতর।
কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখভালের ব্যবস্থা করা হবে। কলকাতা পুলিশ ঘাটগুলিতে নিরাপত্তা দেবে। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা ও আলোর ব্যবস্থা করা হবে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, এই ছটপুজো চলাকালীন চক্ররেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। তার জন্য সময়ও নির্ধারিত করা হয়েছে। ১০ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর বিকেলে চক্ররেল বন্ধ রাখা হবে।
প্রত্যেকটি ঘাটে খাওয়ার জলের ব্যবস্থা রাখবে পুরসভা। মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি যাতে কোনও ভাবেই উলঙ্ঘন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। ফিরহাদ হাকিম এদিন জানান, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সমস্ত নিয়ম মেনে পালিত হবে ছটপুজো।
ইতিমধ্যেই রাত্রিকালীন যে বিধি নিষেধ অর্থাৎ রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা ছাড়া যান চলাচল এবং সাধারণ মানুষের বাইরে বেরোনোয় যে নিষেধাজ্ঞা তা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কালীপুজো, ছটপুজোয়। নবান্নের তরফে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Kolkata Book Fair 2022: সুখবর! একুশের মনখারাপ কাটিয়ে অবশেষে ফিরছে বইমেলা, কবে কখন জেনে নিন…