‘ভাবছি কী করব,’ টিকিট না পেয়ে দীপেন্দুও বিজেপিমুখী?
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ২২ হাজার ভোটে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্যকে হারিয়েছিলেন দীপেন্দু বিশ্বাস (Dipendu Biswas)।
বসিরহাট: শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা (TMC Candidate List) প্রকাশের পর একের পর টিকিট না পাওয়া বিদায়ী বিক্ষুব্ধ বিধায়কের তালিকা ক্রমশই বাড়ছে। হাওড়ায় জটু লাহিড়ির মতো বিদায়ী বিধায়ক ইতিমধ্যে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে ফেলেছেন। রাজনৈতিক মহলে চাপানউতর এই লিস্ট আরও বাড়বে। এই প্রেক্ষিতে বসিরহাটের বিদায়ী বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস (Dipendu Biswas)-এর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শুরু হল নয়া জল্পনা।
বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ায় শুক্রবার প্রকাশ্যেই নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস। আর শনিবার নিজের এক ছবি পোস্ট করে তাঁর এক ইঙ্গিতপূর্ণ লেখা, ‘ভাবছি কি করব’ (বানান অপরিবর্তিত) নিয়ে দীপেন্দুর বিজেপির দিকে দৌড়ের সম্ভাবনা আরও গতি পেয়েছে। তবে কি এবার গেরুয়া শিবিরেই যাচ্ছেন? সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে প্রাক্তন ফুটবলারের সঙ্গে বিজেপির এক শীর্ষ নেতার ফোনে কথা হয়েছে। একদা ওই নেতাই দীপেন্দুকে বসিরহাট দক্ষিণ থেকে জিতিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। এখন তিনি বিজেপিতে। ফোনালাপে নাকি দীপেন্দু জানিয়েছেন যে, তিনি এখনও ভারাক্রান্ত। কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি ফোনালাপে নাকি দুঃখপ্রকাশ করে এও বলেন, একেবারে শেষ লগ্নে এসে তাঁর ‘টিকিট কাটা গিয়েছে।’
এদিকে বসিরহাট দক্ষিণের বিদায়ী বিধায়কের টিম আপাতত দলের প্রচারের সব কাজ বন্ধ রেখেছে। দেওয়াল লেখা থেকে পোস্টারিং সবই বন্ধ। তবে দীপেন্দু তাঁর কর্মী ও সমর্থকদের অনুরোধ করেছেন যে পথ অবরোধ, টায়ার পোড়ানোর মতো ঘটনা যেন না হয়।
শুক্রবার টিকিট না পেয়ে দীপেন্দুবাবু বলেন, ‘আমি দলের জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। বসিরহাটে বিরোধী বলে কিছু নেই। ওখানে আমার বাবা থাকেন। গত ৫ বছর লাগাতার বাড়ি থেকে মানুষকে পরিষেবা দিয়েছি। তাই কেন আমাকে টিকিট দেওয়া হল না তা আমাকে জানাতে পারত। আমার সঙ্গে সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাল সম্পর্ক। এটুকু আশা করেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় আমার পরিবারের ওপর প্রভাব পড়েছে। আমার বাবা সব থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছেন। তিনিও আমার হয়ে মানুষের সঙ্গে ছিলেন। আমি করোনার সময় রাত ১টা পর্যন্ত এলাকায় ঘুরেছি। তার পর বাড়ি এসে স্নান করে মেয়ের মুখ দেখেছি। দল আমাকে একবার জানাতে পারত। এলাকায় পরিবারের একটা মান সম্মান রয়েছে তো!’
আরও পড়ুন: ৫০টি এলইডি, তিনটি মঞ্চ, মোদীর ব্রিগেডকে ঐতিহাসিক করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি
প্রসঙ্গত, বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক দীপেন্দু প্রথম ২০১৪ সালে উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হন। তবে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্যের কাছে পরাস্ত হন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ফের দীপেন্দুকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সেবার আর মমতা (Mamata Banerjee)কে নিরাশ করেননি তিনি। ২২ হাজার ভোটে শমীকবাবুকে হারান। তবে এবার আর তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। টিকিট দেওয়া হয়েছে চিকিৎসক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই প্রেক্ষিতে ফের এক বিদায়ী বিধায়কের দলবদল নিয়ে চূড়ান্ত জল্পনা শুরু হল।