
কাকদ্বীপ: বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলে বন্দি ভারতীয় মৎস্যজীবী বাবুল দাসের (২৫) মৃত্যুকে ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য। তীব্র আলোড়ন কাকদ্বীপে। বাড়ি কাকদ্বীপের পশ্চিম গঙ্গাধরপুরে। কানেও শুনতে পেতেন না, কথাও বলতে পারতেন না। তাঁর এই চরম পরিণতি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা। মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে বাংলাদেশে থাকা ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস থেকে কাকদ্বীপের সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখনই বাবুল দাসের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। তাতেই চাপানউতোর শুরু হয়ে যায় প্রশাসনিক মহলে। তবে মূল ঘটনার সূত্রপাত আরও বেশ কিছুদিন আগে।
গত ১৪ জুলাই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল মা মঙ্গলচন্ডী ট্রলার। তাতেই ছিলেন ১৭ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। কিন্তু বাংলাদেশের জলসীমা পার করতেই তাঁদের আটক করে সে দেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী। তারপর থেকে তাঁরা বাংলাদেশের জেলেই বন্দি ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ ছিল না। ওই দলেই ছিলেন বাবুল। এখন তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে বাকি ১৬ জন মৎস্যজীবীর পরিবারেও।
পরিবারে অভাব। বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী ও পুত্র সন্তানকে নিয়ে কোনওমতে চলে সংসার। বাবুলের কাঁধে ভর করেই চলত সংসার। কিন্তু এখন আচমকা তাঁর মৃত্যুতে দিশাহীন হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। উঠেছে কান্নার রোল। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, কোনও শারীরিক সমস্যা নয় বাবুলের আসল মৃত্যুর প্রকৃত কারণ গোপন করা হচ্ছে। বাবুল বিশেষভাবে সক্ষম থাকার কারণে তাঁর উপর কোনওরকম নির্যাতন চলেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন তাঁরা। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পাশাপাশি ভারতের তরফে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপেরও দাবি করছেন তাঁরা। অন্যদিকে মৎস্যজীবী সংগঠনের তরফে বাবুলের দেহ দ্রুত দেশে ফেরানোর সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে তথ্য বলছে, চলতি বছরে আরও চারটি ভারতীয় ট্রলার বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। বর্তমানে ৬১ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বাংলাদেশের জেলে বন্দী রয়েছেন। তাঁদেরও দ্রুত দেশে ফেরানোর দাবি উঠেছে।