ঢাকা: পদ্মা নদীর ওপর তৈরি হওয়া সেতু নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছিল গোটা বাংলাদেশ (Bangladesh)। সেই সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। পদ্মা সেতুর (Padma Setu) মাওয়া প্রান্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সেতু বাঙালির অহঙ্কার এবং গর্ব ও সক্ষমতার প্রতীক। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত বাংলাদেশের সড়ক, পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশ ক্যাবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। উদ্ধোধনী সম্ভাষণে বক্তব্য রাখার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোটি কোটি বাংলাদেশবাসীর মতো আমিও আজ আনন্দিত এবং দেশের এই কৃতিত্বে গর্বিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এবং ষড়ষন্ত্রকে পরাস্ত করে পদ্মা নদীর বুকে আজ এই সেতু দাঁড়িয়ে রয়েছে।”
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নব নির্মিত এই সেতু শুধুমাত্র সিমেন্ট, স্টিলের মতো বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি কোনও একটি নির্মাণ নয়, এই সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের, এর সঙ্গে আমাদের জেদ, আবেগ, ভালবাসা জড়িয়ে রয়েছে… ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ কাজে বেশ খানিকটা বিলম্ব হয়েছিল, কিন্তু কোনওভাবেই আমরা ভেঙে পড়িনি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন সত্যি করে শেষমেশ আমরা বিজয়ী হয়েছি।”
২০০১ সালেই পদ্মা সেতুর নির্মাণের জন্য সমীক্ষা শেষ করেছিল জাপানের একটি সংস্থা। সেই সময় সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশ-বিদেশের অনেকেই এই সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা করেছিল। সমালোচকদের জবাব দিয়ে এদিন হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতু তৈরি হলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোনও ধস নামেনি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রমাণ করেছি, আমরাও পারি। পদ্মা সেতু তাই আত্মমর্যাদা ও বাঙালির সক্ষমতা প্রমাণের সেতু শুধু নয়, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও।”
স্টিল ও কংক্রিট দিয়ে বাংলাদেশে এই দ্বিতল সেতু তৈরি হয়েছে। এই সেতুর ওপরের অংশ দিয়ে যানবাহন এবং নিচের অংশ দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। সেতু চালু হওয়ার পর সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ স্থাপিত হবে। বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, এই সেতু উদ্ধোধনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও উন্নতি হবে। বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে জড়িত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকেও স্মরণ করেন।