ঢাকা: কথায় আছে ‘লঙ্কায় যে যায় সেই রাবণ হয়’, এই প্রবাদ বাক্য যে ধ্রুব সত্য তার উদাহরণের অভাব নেই। সংবাদমাধ্যম তথা সাংবাদিকদের গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়, ভালকে ভাল আরও খারাপকে খারাপ বলাই সাংবাদিকদের কাজ। প্রশাসন যেখানে পৌঁছাতে পারে না বা প্রশাসনের কাছে যে খবর থাকে না, তা তুলেই ধরাই সাংবাদিকের কাজ। সাধারণত সাংবাদিকরা নিজেরদের দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন, কী কাজ তাঁকে করতে হবে, সেই বিষয়ে থাকে স্পষ্ট ধারণা। তবে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী এক ছাত্র নেতাকে নিয়ে ইতিবাচক খবর না করায় শাসকদল আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন, ছাত্র লিগের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হস্টেলের ১১৫ নম্বর ঘরে ওই সাংবাদিককে মারধর ও শারীরিক হেনস্থা করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। এই মর্মে ছাত্র পরিষদের এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও ছাত্র লিগের দাবি, বাদানুবাদ হলেও মারধর করা হয়নি।
এই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার রিফাত হক একটি অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক এবং তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাংবাদিকতা ও গণ জ্ঞাপণ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্র লিগ কর্মী তথা বাংলা বিভাগের ছাত্র ফারহান তানভির ওরফে নাসিফ, রিফাতকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা ও মারধর করেছে বলেই অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র খবর, নাসিফ ও রিফাত ১১৫ নম্বর ঘরে থাকতেন। নাসিফ ছাত্র লিগ কর্মী হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সে যথেষ্টই প্রভাবশালী। ওই হস্টেলটি ছাত্রলিগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের নিয়ন্ত্রণে। রিয়াজুল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের অনুগামী।
নিগৃহীতের অভিযোগ, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে এক ছাত্রের অনশন ভাঙাতে যান উপাচার্য মহম্মদ আখতারুজ্জামান। সেই সময় ছাত্র লিগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানও উপাচার্যের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু রিফাত যে পোর্টালে কাজ করে সেখানে শুধু উপাচার্যের কথাই লেখা হয়। ছাত্র লিগের সভাপতির নাম কেন লেখা হয়নি এই নিয়ে রিফাতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ফারহান। সেখানে তর্ক থেমে গেলেও পর দিন ছাত্র লিগের অপর একজন ছাত্র নেতার নাম রিফাতের পোর্টালে প্রকাশিত হয়। এই নিয়ে ফারহান আবারও তাঁর সঙ্গে বাগ বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন, তখনই তাঁকে মারধর করা হয়। ফারহানের বক্তব্য “আমি মারিনি। রাজনীতির কারণে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।” বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা অভিযোগ পেয়েছেন, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন Russia-Ukraine War: ইউক্রেনের বুচাতে এত মানুষ কী ভাবে মারা গেল, শেষমেশ জানাল পুলিশ!