Maldives President Mohamed Muizzu: পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করছেন মুইজ্জু, ভারতের উপরে এত রাগ কেন?

Maldives-Lakshadweep Row: নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই মুইজ্জু বলেছিলেন, "দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে জান লড়িয়ে দেব। আমাদের মাটিতে কোনও বিদেশি সেনার উপস্থিতি থাকবে না"। হঠাৎ কেন সার্বভৌমত্বের কথা বলেছিলেন মুইজ্জু? বিদেশি সেনা বলতেই বা কী বুঝিয়েছিলেন?

Maldives President Mohamed Muizzu: পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করছেন  মুইজ্জু, ভারতের উপরে এত রাগ কেন?
কেন মলদ্বীপের এত রাগ?Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Jan 12, 2024 | 3:39 PM

মালে: নিজের দেশের যেকোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে সমস্ত নাগরিকের। প্রধানমন্ত্রীও তার ব্যতিক্রম নন। সম্প্রতিই লাক্ষাদ্বীপে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। সেখানে গিয়ে প্রচার করেছিলেন পর্যটনের। আর তাতেই ‘ঝাল’ লেগেছে মলদ্বীপের (Maldives)। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কটাক্ষ করে সে দেশের মন্ত্রীরা ‘জোকার’ বলেছেন। কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হতেই তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ডও করেছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু (Mohamed Muizzu)। তবে তাতে বিতর্কে ইতি পড়েনি। ভারতীয় পর্যটকরা মলদ্বীপ থেকে মুখ ফেরাতেই চিনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। যে দেশের সঙ্গে এক সময়ে এত ভাল সম্পর্ক ছিল ভারতের, হঠাৎ তিক্ততা তৈরি হল কেন জানেন? এর পিছনে রয়েছে এক গভীর কূটনীতি।

মলদ্বীপের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক ছিল ভারতের। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন সময়ে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন  নানা সাহায্যের জন্য। মলদ্বীপের অর্থনীতির ৪০ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে। আর মলদ্বীপে সবথেকে বেশি ভিড় করেন ভারতীয় পর্যটকরাই। এছাড়া মলদ্বীপের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রীর জন্য ভারতের উপরই নির্ভরশীল। যেখানে ভারত ছাড়া মলদ্বীপ ‘অচল’, সেখানেই কেন ঝগড়া বাধাচ্ছেন নতুন প্রেসিডেন্ট?

২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন মহম্মদ মুইজ্জু। ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। মাত্র ৫৮৬ ভোটে হারিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিহকে। তিনি পেয়েছিলেন ৪৬ শতাংশ  ভোট। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই মুইজ্জু বলেছিলেন, “দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে জান লড়িয়ে দেব। আমাদের মাটিতে কোনও বিদেশি সেনার উপস্থিতি থাকবে না“। হঠাৎ কেন সার্বভৌমত্বের কথা বলেছিলেন মুইজ্জু? বিদেশি সেনা বলতেই বা কী বুঝিয়েছিলেন? এর জন্য নজর রাখতে হবে মুইজ্জুর নির্বাচনী প্রচারের দিকে।

‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার:

বরাবরই চিনপন্থী হিসাবে পরিচিত মহম্মদ মুইজ্জু। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর রাগ দীর্ঘদিনের। এমনকী মুইজ্জুর নির্বাচনী প্রচারের নামই ছিল “ইন্ডিয়া আউট”। এই প্রচারের দমেই তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। কেন ভারতকে নাপসন্দ মুইজ্জুর জানেন? মলদ্বীপে মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় সেনা। সেই সংখ্যাটা নেহাতই কম। মাত্র ৭৫ জন। ভিন দেশে সেনা মোতায়েনের পিছনেও রয়েছে বিশেষ কারণ।

২০০৯ সালে মলদ্বীপকে হেলিকপ্টার উপহার দেয় ভারত। পরে আরও কিছু যুদ্ধবিমান উপহার দেওয়া হয়। এই বিমানগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও মলদ্বীপের সেনাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যই মোতায়েন রয়েছেন ৭৫ জন ভারতীয় সেনা। এছাড়া মলদ্বীপের সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখার জন্য র‌্যাডার তৈরি করে দিয়েছিল ভারত। সেই কারণে আগামী ৩০ বছর এই র‌্যাডার ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে ভারতের। মাত্র ৭৫ জন ভারতীয় সেনা নিশ্চয়ই মলদ্বীপকে দখল করে নেবে না!

কিন্তু যখন নির্বাচনী প্রচারে ‘বিদেশি সেনা’ , ‘জবরদখলে’র মতো শব্দের ব্যবহার করা হয়, তখন তা ভোটব্যাঙ্কের জন্য বিশেষ উপকারী হয়। সেই ফর্মূলাকেই কাজে লাগিয়েছেন মুইজ্জু। আর জিতেও গিয়েছেন ভোটে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই মুইজ্জু ভারত সরকারকে নোটিস পাঠায় সেনা প্রত্যাহারের জন্য।

ভারতের যে উপকার ভুলেছে মুইজ্জু-

মলদ্বীপের পড়শি দেশ ভারত। মলদ্বীপের দরকারে-অদরকারে বরাবরই পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। ২০১৪ সালে যখন চরম জল সঙ্কটে পড়েছিল মলদ্বীপ, তখন ‘অপারেশন পানি’র মাধ্যমে বিনামূল্যে জল সরবরাহ করেছিল ভারত। তার আগে ১৯৮৮ সালে ‘অপারেশন ক্যাকটাসে’র অধীনে মলদ্বীপে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় সেনা পাঠানো হয়েছিল শ্রীলঙ্কার শতাধিক জঙ্গির হাত থেকে রক্ষার জন্য। করোনাকালেও ভারতই সবার আগে ১ লক্ষ ভ্য়াকসিন দিয়ে সাহায্য করেছিল মলদ্বীপকে।