ইসলামাবাদ: স্বাধীনতার পর থেকেই জারি রয়েছে ভারত-পাকিস্তানের (India-Pakistan Conflict) মধ্যে দ্বন্দ্ব। কখনও সীমান্তে হামলা, আবার কখনও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো, ভারতের সঙ্গে বিরোধ তৈরিতে চেষ্টার কোনও খামতি রাখেনি পাকিস্তান। এবার দুই দেশের মধ্যে মত পার্থক্য ও বিরোধ ঘোচাতেই আলোচনার প্রস্তাব দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)। তবে তার আলোচনার আমন্ত্রণেও রয়েছে ‘টুইস্ট’। রুদ্ধদ্বার আলোচনার বদলে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-র সঙ্গে কোনও টিভি চ্যানেলে মুখোমুখি বিতর্ক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চান বলেই জানান মঙ্গলবার।
মঙ্গলবারই দু’দিনের জন্য মস্কো সফরে গিয়ে রাশিয়ার টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটি-তে সাক্ষাৎকার দেন ইমরান খান। উল্লেখ্য, বিগত দুই দশকে এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ায় গেলেন। পাক সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিনের সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন ইমরান খান। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ও দীর্ঘমেয়াদী বিরোধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইমরান খান বলেন, “টিভিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিতর্কসভায় অংশ নিতে আগ্রহী আমি”। তিনি জানান, যদি আলোচনা ও বিতর্ক সভার মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক দশকের সমস্যার সমাধান করা যায়, তবে দুই দেশেরই কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে ইমরান খান দাবি করেন, তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরই ভারতের সঙ্গে যোগোযোগ করে এবং ভারতের নেতৃত্বদের কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সমাধানসূত্র খোঁজার জন্য আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে ভারতের তরফে সেই প্রস্তাবে ইতিবাচক জবাব মেলেনি বলেই জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন ইমরান খান। তিনি বলেন, “সামরিক সংঘাতে কখনও সমস্যার সমাধান হয় না। তাই আশা করছি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হয়ে যাবে।”
তিনি বলেন, “আমি সামরিক সংঘাতে বিশ্বাসী নই। আমার মতে, আলোচনার মাধ্যমেই সভ্য সমাজ নিজেদের মধ্যে তৈরি যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে নেয়। যে সমস্ত দেশ সামরিক সংঘাতের উপরই নির্ভর করে থাকে, তারা হয়তো ইতিহাস ঠিকভাবে পড়েনি। যুদ্ধ বাধলে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, তা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মানুষেরা জানেন।”