নয়া দিল্লি: অম্বানী পরিবারের বিয়ে নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে। বলা হচ্ছে, এটাই নাকি এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে দামি বিয়ে। কয়েক মাস ধরে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। সেই প্রাক-বিবাহ থেকে শুরু হয়েছে। বর-কনের কোটি কোটি টাকার পোশাক, মেনুতে দুনিয়ার সব সেরা খাবারের সম্ভার, দেশ-বিদেশের অতিথিদের আগমন- নজর কেড়েছে সবটাই। তবে ভারতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে এমন বাহুল্য নতুন কিছু নয়। প্রত্যেক পরিবারই তাদের সন্তানের বিয়ের ক্ষেত্রে খরচের কোনও মাত্রা রাখে না। অনন্ত অম্বানী ও রাধিকার বিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০ বছর আগের আরও এক বিয়ের কথা। সেটাও ছিল বিশ্বের অন্যতম ‘দামি বিয়ে’।
ভারতের অন্যতম বিজনেস টাইকুন লক্ষ্মী মিত্তল তাঁর মেয়ের বিয়েতে খরচ করেছিলেন কয়েক’শ কোটি টাকা। বিদেশের মাটিতে প্রাসাদোপম বাড়ি ভাড়া করে বসেছিল বিয়ের আসর। সেখানেও ছিল এমনই হিরে-জহরতের ছড়াছড়ি। সেই বিয়ে নিয়েও প্রচুর চর্চা হয়েছিল।
লক্ষ্মী মিত্তলের একমাত্র মেয়ে বানিশার সঙ্গে বিয়ে হয় ব্যাঙ্কে কর্মরত অমিত ভাটিয়ার। ২০০৪ সালে অর্থাৎ আজ থেকে ২০ বছর আগে বিয়েতে খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় সেই সময়ের হিসেবে ছিল প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। প্যারিসে বসেছিল বিয়ের জমজমাট আসর।
এনগেজমেন্টের জন্য মিত্তলরা বেছে নিয়েছিলেন প্যারিসের ‘প্যালেস অফ ভার্সাইল’। আর সঙ্গীত-এর অনুষ্ঠান হয়েছিল ‘জার্ডিন দে তুলেরিস’ নামক প্রাসাদের। ‘ভক্স লে ভিকম্পতে’ নামে এক বিলাসবহুল প্রাসাদে। জানা যায়, ১৭ শতকে তারিখের ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা হয়েছিল ওই প্রাসাদ।
মুম্বই থেকে কার্যত গোটা বলিউড পৌঁছে গিয়েছিল প্যারিসে। উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ খান, রানি মুখার্জি, অক্ষয় কুমার, সইফ আলি খানের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১০ হাজার অতিথিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্যারিসের ওই প্রাসাদে। শুধুমাত্র তাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাই নয়, রীতিমতো পারফর্ম করেছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। আর অস্ট্রেলিয়ার শিল্পী কাইলি মিনগ কে আনা হয়েছিল সঙ্গীত অনুষ্ঠানের পারফর্ম করার জন্য। আজ থেকে ২০ বছর আগে ওই অস্ট্রেলিয়ান সঙ্গীত শিল্পী মাত্র দেড় ঘন্টা পারফর্ম করার জন্য নিয়েছিলেন ২ লক্ষ ইউরো, ভারতীয় মুদ্রায় যা ছিল সেই সময় ২ কোটি টাকারও বেশি। ফারাহ খান নিজে কোরিওগ্রাফি করেছিলেন, আর সেই কোরিওগ্রাফিতে নেচেছিলেন শাহরুখ খান, রানি মুখার্জি, জুহি চাওলারা।
বলে রাখা দরকার, লক্ষ্মী নিবাস মিত্তলের একমাত্র মেয়ে বানিশা কয়েক লক্ষ কোটি সম্পত্তির মালিক। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা শেষে ইউরোপে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মিত্তলদের সংস্থার ‘বোর্ড মেম্বার’ হিসেবে রয়েছেন বানিশা। পরে জানা যায় ২০১৪ সালে বানিশা ও অমিতের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে, যদিও সেই খবর সেভাবে প্রকাশ্যে আসেনি।