
কলকাতা: যে কোনও অনুষ্ঠানেই সোনার গুরুত্ব অপরিসীম। কাছের মানুষকে তাদের বিশেষ সময়ে সোনা দিতে কেই বা চায় না? আর শুধু ভাল সময় নয়। সোনা কিন্তু কাজে লাগে বিপদে-আপদেও। আগে কার দিনে সংসারে কোনও আর্থিক অনটন এলেই নিজেদের জমানো সোনার গয়না বের করে দিতেন বাড়ির গুরুজনেরা। সময় বদলেছে, পরিস্থিতি বদলেছে। কিন্তু আজও বদলায়নি এই চল।
হিসাব বলছে, চলতি বছরের পয়লা তারিখ থেকে আজ অবধি সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। ঠিক এক বছর আগেই এই সময় সোনার দর ছিল ৬৩ হাজার টাকা। কিন্তু বছর ঘুরতেই আজ তা ছুঁয়ে ফেলেছে প্রায় ৯০ হাজারের গন্ডি।
আজ ১০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার দর চলছে ৭৯ হাজার টাকা। ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রাম সোনার দাম রয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার টাকায়। এই পরিস্থিতি মাথায় একটি বারবার চাড়া দিচ্ছে অনেকের। এই কি তবে সঠিক সময় সোনায় বিনিয়োগের? যে হারে দাম বাড়ছে, তাতে সোনায় বিনিয়োগের এর থেকে শুভ সময় যে আর আসবে না, এমনটাও বলছেন কেউ কেউ।
কিন্তু বিনিয়োগের আগে জানতে হবে কেন বাড়ছে সোনার দাম? তথ্য বলছে, সাধারণভাবেই সমস্ত ভূরাজনৈতিক কার্যকলাপই প্রভাব ফেলে সোনায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হোক কিংবা মধ্য প্রাচ্যের সংঘাত, সমস্ত কর্মকাণ্ডই প্রভাব ফেলে সোনার উপর। তাছাড়াও, বাজার চাহিদা তো এই প্রভাব ফেলার বিষয়ে একেবারে শীর্ষে।
অনেকে বলছেন, যে হারে শেয়ার বাজার পড়ছে এমন পরিস্থিতিতে সোনার মতো মাধ্যমেই বেশি বিনিয়োগ করছেন খুচরো বিনিয়োগকারীরা। তার জেরেই কার্যত চড়চড়িয়ে দাম বাড়ছে সোনার। তাছাড়া, ইতিমধ্যে দেশের স্বার্থেও বিশ্ববাজার থেকে প্রচুর পরিমাণ সোনা মজুত করা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিও। সেই কারণেও পড়ছে প্রভাব।
এখনই বিনিয়োগ প্রয়োজন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই ভাল সময় বিনিয়োগের। যে হারে সোনার দরে বুল রান দেখা গিয়েছে, তা চলতে থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্য়ে এক লক্ষ টাকা ছুঁয়ে ফেলবে সোনার দর। তাই আগে থাকতেই বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
তাঁদের আরও দাবি, যে সোনার গহনা না গড়িয়ে, সোনার বার অথবা গোল্ড বন্ড মাধ্যমে সোনায় বিনিয়োগ করা বেশি লাভজনক। কারণ, গহনা গড়াতে বাড়তি স্যাঁকরাকে বাড়তি তৈরির খরচ দিতে হবে বিনিয়োগকারীকে। যা আদতেই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ততটা ভাল নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যে কোনও বিনিয়োগে বাজারগত ঝুঁকি রয়েছে। ফলে, আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি সাবধানে পড়ে নেবেন। তারপর বিনিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।